সাক্ষাৎকার

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপি। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান। ফ্রান্সের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সবসময় আগ্রহ ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা শুনলেও এক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি এবং অনিয়ম হয়েছে। যে পরিমাণ অর্থ এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে তার সুফল পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। আমরা দুর্নীতির জায়গাগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি।’ 

রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপি সাম্প্রতিক বন্যায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বন্যার্তদের সঙ্গে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাই বন্যাদুর্গত এলাকায় ইন্টারনেট ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে, কয়েকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপন করা হয়েছে। মোবাইল টাওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটরের ফুয়েল (জ্বালানি) ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে এবং সামনে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে যেকোনো দুর্যোগেসংশ্লিষ্ট এলাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।’ 

বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, দেশের যুবসমাজ তথ্যপ্রযুক্তিতে পারদর্শী এবং তারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী। প্রণোদনা পেলে তরুণেরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক ভালো করবে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। 

রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপি সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি এখন বর্ডার সিকিউরিটির মতোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের তরুণেরা এবং অফিশিয়ালরা যদি এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে তবে তা দেশের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।’ 

রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপি আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্ররা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। বর্তমানে যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তা ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত সরকার। সমন্বয়কারীদের মধ্যে আমরা দুজন সরকারে এসেছি, বাকিরা এখনো আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য যেন ব্যাহত না হয় এবং সরকার যেন সে কাজগুলো ঠিকঠাক মতো করে তাই বাইরে থেকে তারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে চাই যেখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে।’ 

রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং ৭১ টিভির সাংবাদিক ফারজানা রুপার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে আমরা খুবই সচেতন। আমরা চাই কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। আমরা চাই না, সামনের বাংলাদেশে এ রকম ঘটনা ঘটুক। ৭১ টিভি এবং ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাচ্ছি যেখানে সবাই তার মত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারবে।’ 

পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাসের মধ্য দিয়ে আলোচনা শেষ হয়। 

সাক্ষাৎকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত