নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে গুম-সংক্রান্ত কমিশন। গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে এই কমিশন। তাঁর প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে।
গুম-সংক্রান্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন গতকাল শনিবার এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়েছে কমিশন। ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান এবং এই কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কমিশন বলেছে, গুম কমিশনে জমা হওয়া ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী মার্চে আরও একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেবে কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত কমিশন। এ ছাড়া শেখ হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে; যাঁদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (চাকরিচ্যুত) জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন। কমিশনের প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন,
যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন বাহিনী নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে। গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাঁদের ওপর এত ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তাঁরা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুমের অধিকাংশ ঘটনার সঙ্গে র্যাবের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অপরাধের ব্যাপ্তি এত বেশি যে এটিকে শুদ্ধি করে আর পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই র্যাব বিলুপ্ত করা উচিত।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে ২৭ আগস্ট পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ১০ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেন। পাশাপাশি জনবান্ধব-মানবিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে পুলিশ কমিশন গঠনেরও আহ্বান জানান তিনি। পুলিশ সংস্কার কমিটিকে বিএনপির দেওয়া সুপারিশমালা জানাতে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে র্যাব গঠন করা হয়। ওই বছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ হয় র্যাবের। মূলত জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য র্যাব গঠন করা হয়েছিল। র্যাব কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এই বিশেষ ইউনিটে বর্তমানে ১০ হাজারের মতো সদস্য রয়েছেন।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ সরকার ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন সময়ে অনুরোধ জানালেও যুক্তরাষ্ট্র সাড়া দেয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর অভিযোগের সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন কমিশনের সদস্যরা। তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভুক্তভোগীরা অভয় পেতে পারেন।’ প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে, সেগুলো দেখতে যাবেন।
গুম তদন্ত কমিশনের প্রধান জানান, কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে এক বছর সময় প্রয়োজন।
র্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই শিরোধার্য। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকব।’ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে র্যাবে গোপন নির্যাতনকেন্দ্র থাকার কথা এবং গুম-খুনের অভিযোগ স্বীকার করে সেদিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভুক্তভোগী পরিবার ও জাতির কাজে ক্ষমা চান।
সব গুম পরিকল্পিত
কমিশন বলেছে, বিগত আওয়ামী লীগের আমলে সব গুমের ঘটনা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাউকে কাউকে গুম করতে এক বছর আগে পরিকল্পনা করা হয়। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি অনুমোদন দিয়েছেন। শেখ হাসিনা গুমের নির্দেশদাতা ছিলেন, তিনি প্রতিটি ঘটনাই জানতেন বলে গুম কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন বলেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিশনসংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তি বলেন, গুমের সঙ্গে র্যাব, ডিবি ও সিআইডি ছাড়াও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে কমিশন। এক বাহিনী ধরে নিয়ে আরেক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করত। অনেক গুমের ঘটনায় একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জড়িত ছিল। গুম প্রতিরোধ ও অপরাধীদের বিচারের জন্য কমিশন ১০টির বেশি সুপারিশ করেছে।
গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দেশের প্রচলিত আইনে করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আইনের পরিবর্তন ও সংযোজনেরও সুপারিশ করেছে কমিশন। এ ছাড়া আটক ও গ্রেপ্তারের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং আইন অনুসরণ করে কমিশন সেই সুপারিশ করেছে।
কমিশন বলেছে, গুমের ঘটনায় সারা দেশে ৬০০র বেশি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল। সেগুলোর তদন্ত করেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও থানা-পুলিশ। এসব ঘটনা পুনরায় তদন্ত করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। গুমের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সামাজিক অনুষ্ঠান, গণমাধ্যমে প্রচারণা ও সভা-সেমিনার করার পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।
গুম কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন।
গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে গুম-সংক্রান্ত কমিশন। গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে এই কমিশন। তাঁর প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে।
গুম-সংক্রান্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন গতকাল শনিবার এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়েছে কমিশন। ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান এবং এই কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কমিশন বলেছে, গুম কমিশনে জমা হওয়া ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী মার্চে আরও একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেবে কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত কমিশন। এ ছাড়া শেখ হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে; যাঁদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (চাকরিচ্যুত) জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন। কমিশনের প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন,
যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন বাহিনী নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে। গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাঁদের ওপর এত ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তাঁরা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুমের অধিকাংশ ঘটনার সঙ্গে র্যাবের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অপরাধের ব্যাপ্তি এত বেশি যে এটিকে শুদ্ধি করে আর পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই র্যাব বিলুপ্ত করা উচিত।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে ২৭ আগস্ট পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ১০ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেন। পাশাপাশি জনবান্ধব-মানবিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে পুলিশ কমিশন গঠনেরও আহ্বান জানান তিনি। পুলিশ সংস্কার কমিটিকে বিএনপির দেওয়া সুপারিশমালা জানাতে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে র্যাব গঠন করা হয়। ওই বছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ হয় র্যাবের। মূলত জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য র্যাব গঠন করা হয়েছিল। র্যাব কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এই বিশেষ ইউনিটে বর্তমানে ১০ হাজারের মতো সদস্য রয়েছেন।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ সরকার ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন সময়ে অনুরোধ জানালেও যুক্তরাষ্ট্র সাড়া দেয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর অভিযোগের সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন কমিশনের সদস্যরা। তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভুক্তভোগীরা অভয় পেতে পারেন।’ প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে, সেগুলো দেখতে যাবেন।
গুম তদন্ত কমিশনের প্রধান জানান, কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে এক বছর সময় প্রয়োজন।
র্যাব বিলুপ্তির বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই শিরোধার্য। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকব।’ আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে র্যাবে গোপন নির্যাতনকেন্দ্র থাকার কথা এবং গুম-খুনের অভিযোগ স্বীকার করে সেদিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভুক্তভোগী পরিবার ও জাতির কাজে ক্ষমা চান।
সব গুম পরিকল্পিত
কমিশন বলেছে, বিগত আওয়ামী লীগের আমলে সব গুমের ঘটনা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাউকে কাউকে গুম করতে এক বছর আগে পরিকল্পনা করা হয়। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি অনুমোদন দিয়েছেন। শেখ হাসিনা গুমের নির্দেশদাতা ছিলেন, তিনি প্রতিটি ঘটনাই জানতেন বলে গুম কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন বলেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিশনসংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তি বলেন, গুমের সঙ্গে র্যাব, ডিবি ও সিআইডি ছাড়াও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে কমিশন। এক বাহিনী ধরে নিয়ে আরেক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করত। অনেক গুমের ঘটনায় একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জড়িত ছিল। গুম প্রতিরোধ ও অপরাধীদের বিচারের জন্য কমিশন ১০টির বেশি সুপারিশ করেছে।
গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দেশের প্রচলিত আইনে করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আইনের পরিবর্তন ও সংযোজনেরও সুপারিশ করেছে কমিশন। এ ছাড়া আটক ও গ্রেপ্তারের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং আইন অনুসরণ করে কমিশন সেই সুপারিশ করেছে।
কমিশন বলেছে, গুমের ঘটনায় সারা দেশে ৬০০র বেশি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল। সেগুলোর তদন্ত করেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও থানা-পুলিশ। এসব ঘটনা পুনরায় তদন্ত করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। গুমের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সামাজিক অনুষ্ঠান, গণমাধ্যমে প্রচারণা ও সভা-সেমিনার করার পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।
গুম কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ প্রতিবেদন হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদের ৭ হাজার ৬২১ জনের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে তিন মাসের মধ্যে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
২০ মিনিট আগেমহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করেছেন। একই সঙ্গে ১০ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম ও ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটাকার্ডও অবমুক্ত করেন তিনি। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এগুলো অবমুক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
১ ঘণ্টা আগেঘন কুয়াশায় মেঘনা নদীতে পথ হারায় একটি ফেরি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ফেরিঘাট থেকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘন কুয়াশায় ভুল পথে মেঘনা নদীতে প্রায় দুই কিমি চলে যাওয়ার পর নুর আলম নামে একজন যাত্রী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। তাদের গন্তব্য ছিল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বিষনন্দী ফ
১ ঘণ্টা আগে১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়কে সম্মান জানিয়ে ভারতেও বিজয় দিবস উদ্যাপিত হয়। প্রতি বছর এই দিনটিতে কলকাতার ইস্টার্ন কমান্ড সদর দপ্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানো হয়। ২০২২ সালে ২৯ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন সদস্য এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
১ ঘণ্টা আগে