Ajker Patrika

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে সেবা সহজ করুন

আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯: ৩৮
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে সেবা সহজ করুন

সরকারি অফিসে সেবা সহজ করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘সরকার বা সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মানুষের ভয় রয়েছে। সেবার জন্য গেলেই ভোগান্তিতে পড়া, হেনস্তা হওয়া ও নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। মানুষের এসব ভয় দূর করতে প্রশাসনিক, আইনি ও প্রক্রিয়াগত সব বাধা দূর করুন। প্রয়োজনীয় সংস্কার করুন।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছেন, ‘এবার সুযোগ এসেছে ভালো শাসনব্যবস্থা উপহার দেওয়ার। সব সময় এ ধরনের সুযোগ আসবে না।’

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সচিব সভায় এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান। সচিব সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক সচিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই প্রথম সচিব সভা। এর আগে নিজের অধীন থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

সচিব সভায় লিখিত বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব শেখ আবদুর রশিদ, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ মোমেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান, বিদ্যুৎসচিব হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদসচিব নুরুল আলম, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন ও বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনসহ ১০ জন সচিব নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

নাম প্রকাশ না করে একজন সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে গুরুত্ব পেয়েছে তিনটি বিষয়। প্রথমত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানান তিনি। দ্বিতীয়ত, সরকারি দপ্তরে সেবাপ্রার্থী মানুষের সেবা যতটা পারা যায় সহজ করতে হবে। কোনো ধরনের হয়রানি করা যাবে না। সরকারি অফিস সম্পর্কে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পর্কে মানুষের ভয় আছে। এই ভয় দূর করতে হবে। সরকারি অফিসে যেন কোনো ধরনের হয়রানি, ভোগান্তি ও হেনস্তার শিকার হতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকার এসেছে। গণমানুষের সরকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সেবাবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে যে ধরনের পরিবর্তন বা সংস্কার প্রয়োজন তা নিজ উদ্যোগেই করতে হবে। সেটা প্রশাসনিক, আইনি বা প্রক্রিয়াগত—যে ধরনের বাধাই থাকুক, তা সংস্কারের মাধ্যমে দূর করতে হবে।

অপর একজন সচিব বলেন, সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের (সচিব) প্রশাসনিক কাজে আরও মনোযোগী হতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, প্রশাসনের কাজ ফেলে রাখা যাবে না। কোনো দুর্নীতি করা যাবে না, করতে দেওয়া হবে না। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের স্থবিরতা দূর করতে হবে।এদিকে, সচিব সভার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৯ দফা নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সরকারের সকল পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিতে হবে। সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করতে হবে। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত উপহার দিয়েছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহি নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৫
বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির সামনে রোববার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের অবস্থান। ছবি: ফোকাস বাংলা
বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির সামনে রোববার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের অবস্থান। ছবি: ফোকাস বাংলা

‎জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল সোমবার।

এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুরে সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রবেশপথ, অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন-কেপিআই) ও সংবেদনশীল স্থানে তিন স্তরের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে।

‎ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। সাইবার ইউনিট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নজরদারি করছে। কোনো ধরনের নাশকতামূলক কাজ যেন না ঘটে, তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলছে।

শেখ হাসিনার ‎রায়কে ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজধানীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পেজ, গ্রুপ ও ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে দলটির সমর্থকেরা ছড়াচ্ছে গুজব, উসকানি ও সংঘবদ্ধ হওয়ার বার্তা।

তাঁদের মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আশপাশে আগামীকাল কয়েক স্তরের নিরাপত্তাবলয় বসানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এরই মধ্যে কেপিআইসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ পোশাকধারী ও সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। এ ছাড়া সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আগাম তথ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়কে ঘিরে এরই মধ্যে ‎দেশের কয়েক জেলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত পিরোজপুর, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুরসহ অন্তত চার জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ। এসব জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। পিরোজপুরে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ, কিশোরগঞ্জে জিয়া পরিষদ ও ফরিদপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

‎এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর হাতিরঝিল, মিরপুর, আগারগাঁও ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

গত ছয় দিনে এই ধরনের ঘটনায় পুড়েছে প্রায় ৩০টি যানবাহন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিপু মুনশি, শাহরিয়ার আলমসহ ৭ জনের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ সাতজনের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ আজ রোববার এই নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ।

অন্য যাঁদের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন সাবেক রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, টিপু মুনশির স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশি এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

দুদকের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা আজ সাতটি পৃথক আবেদন করে এই সাতজনের আয়কর নথি জব্দে আদালতের নির্দেশ চান।

দুদকের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম ও দেলোয়ার জাহান রুমি আবেদনের ওপর শুনানি করেন। শুনানি শেষে প্রত্যেকের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৪১ হাজার ৩৫১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, টিপু মুনশির বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার ৬১২ টাকার অবৈধ সম্পদ, তাঁর স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশির বিরুদ্ধে ৪ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৭৩০ টাকার অবৈধ সম্পদ, এনামুর রহমানের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৩৪ টাকার অবৈধ সম্পদ ও শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছে দুদক।

এ ছাড়া শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, মামলাগুলো সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শুরু থেকে শেষ করবর্ষের আয়কর নথি পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য নথি জব্দ করা প্রয়োজন। আয়কর আইন অনুযায়ী নথিগুলো জব্দ করতে আদালতের নির্দেশনা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকাসহ ৪ জেলায় বিজিবি মোতায়েন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৯
ছবি: ফোকাস বাংলা
ছবি: ফোকাস বাংলা

রাজধানী ঢাকাসহ চার জেলায় সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা ছাড়াও গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুরে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক দায়িত্ব পালন করছে বাহিনীটি।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে মাঠে রয়েছে বিজিবির টহল দল। প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।’

কয়েক দিন ধরে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়িতে আগুন, বাসে অগ্নিসংযোগ ও বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনাই নিরাপত্তা জোরদারের মূল কারণ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের ঘোষিত কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন, আগারগাঁও, বিমানবন্দর, হাতিরঝিল, মিরপুর ও হাজারীবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এই পরিস্থিতিতে চার জেলায় বিজিবির উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে, যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে এবং যে কোনো নাশকতা প্রতিরোধ করা যায়।

এর আগে গত বুধবার ১২ নভেম্বর সকাল থেকে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঢাকায় ১২ প্লাটুন এবং ঢাকার বাইরে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

উল্লেখ্য, আগামীকাল সোমবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারা দেশে চালানো হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে: প্রসিকিউটর তামিম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩১
রোববার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করেন প্রসিকিউটর তামীম। ছবি: সংগৃহীত
রোববার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করেন প্রসিকিউটর তামীম। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারা দেশে চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। আজ রোববার প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিংয়ে গাজী তামিম বলেন, ‘প্রসিকিউশন দাবি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছে। শুধু তা-ই নয়, এই আসামিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগী, শহীদ এবং আহতদের পরিবার বরাবর হস্তান্তরের জন্য প্রার্থনা করেছি।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও যেসব মামলা আছে, সেগুলোর অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে তামিম বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে যে কয়েকটি অভিযোগ আমরা এই ট্রাইব্যুনালে এনেছি—এই একই অভিযোগে যদি এই তিনজন আসামির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্য কোনো আদালতে কোনো মামলা চলে থাকে, সেগুলো আর চলবে না। কারণ, এটা আমাদের কনস্টিটিউশনাল রাইটস। একই অভিযোগে কোনো ব্যক্তিকে দুবার শাস্তি বা দুবার বিচার করা যাবে না। অতএব এর বাইরে যদি অন্য কোনো অভিযোগ থেকে থাকে, তবে সেটি চলতে পারে। কিন্তু এখানে যে পাঁচটি অভিযোগ ডিসপোজাল করা হচ্ছে, সেই পাঁচটি অভিযোগে অন্য কোথাও কোনো মামলা করাও যাবে না, আর যদি মামলা থাকে, সেটা আর চলবে না।’

এর আগে ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ১৭ নভেম্বর (সোমবার) নির্ধারণ করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

মামলার আসামিরা হলেন শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়ে কারাগারে রয়েছেন।

মামলাটিতে আন্দোলনকারী ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ চলতি বছরের ১ জুন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত