অনলাইন ডেস্ক
পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় তিনি মুখ খুলছেন।
২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দুই মাসের কিছু কম সময়ের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। গত ২৫ আগস্ট ইউটিউব চ্যানেলটি খোলেন তিনি। সেখানে ২৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও তৎকালীন সেনাপ্রধানের ভূমিকা অনেকের জানা নেই। অনেকে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। ভূমিকা কী ছিল, তা তিনি জানাতে চান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি (বিডিআরের ডিজি) কিছুই জানতেন না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানায় ‘কিছু একটা ঘটার তথ্য’ যখন জানতে পারেন, তিনি তখন একটি বৈঠকে।
সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন মইন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর ডিজি ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি (মহাপরিচালক) বলেন, দরবার চলাকালীন দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করেন। একজন ডিজির পেছনে এসে দাঁড়ান, অপরজন দরবার হল অতিক্রম করে বাইরে চলে যান। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকেরা গন্ডগোল শুরু করে দেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে যান। দরবার হল থেকে বের হয়ে যান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বলে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার–সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাঁকে জানান। বিনা আলোচনায় সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন বিদ্রোহীরা। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে আদেশ দিয়েছিল সরকার। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে যেতে বলা হয়। সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়।
মইন ইউ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে পিএসও ফোন পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এর মধ্যে বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। সরকার থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়, ডেইরি গেট এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখেন, যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। কৌতূহলবশত এসেছিলেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। ওই সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক সেরে শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের ডাকেন। মইন ইউ আহমেদ সেখানে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে যান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিদ্রোহীদের একটি দলকে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম যমুনায় আসছেন এবং তাঁরা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চান। শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে তিন বাহিনীর প্রধান যেন তাঁদের বলেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তাঁর (মইন) জানা নেই। পরের পর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঘোষণা দেন, সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন না হলে তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না। তাঁরা গোলাগুলিও শুরু করেন; কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) পিলখানায় যান আলোচনার জন্য। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। সাহারা খাতুন জানতেন অফিসারদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, কোনো খোঁজও নেননি।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করেন বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাঁকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হন। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনি (মইন) দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হন এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেন। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত নিয়েও কথা বলেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়; যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী?’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, প্রতি–উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এত সেনা অফিসার হত্যার কারণ তাঁকে বের করতে হবে। তারপর সরকার আর উচ্চবাচ্য করেনি। তবে তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি।
তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রধান বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বের করতে সক্ষম হবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় তিনি মুখ খুলছেন।
২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দুই মাসের কিছু কম সময়ের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। গত ২৫ আগস্ট ইউটিউব চ্যানেলটি খোলেন তিনি। সেখানে ২৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও তৎকালীন সেনাপ্রধানের ভূমিকা অনেকের জানা নেই। অনেকে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। ভূমিকা কী ছিল, তা তিনি জানাতে চান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি (বিডিআরের ডিজি) কিছুই জানতেন না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানায় ‘কিছু একটা ঘটার তথ্য’ যখন জানতে পারেন, তিনি তখন একটি বৈঠকে।
সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন মইন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর ডিজি ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি (মহাপরিচালক) বলেন, দরবার চলাকালীন দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করেন। একজন ডিজির পেছনে এসে দাঁড়ান, অপরজন দরবার হল অতিক্রম করে বাইরে চলে যান। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকেরা গন্ডগোল শুরু করে দেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে যান। দরবার হল থেকে বের হয়ে যান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বলে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার–সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাঁকে জানান। বিনা আলোচনায় সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন বিদ্রোহীরা। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে আদেশ দিয়েছিল সরকার। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে যেতে বলা হয়। সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়।
মইন ইউ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে পিএসও ফোন পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এর মধ্যে বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। সরকার থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়, ডেইরি গেট এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখেন, যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। কৌতূহলবশত এসেছিলেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। ওই সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক সেরে শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের ডাকেন। মইন ইউ আহমেদ সেখানে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে যান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিদ্রোহীদের একটি দলকে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম যমুনায় আসছেন এবং তাঁরা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চান। শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে তিন বাহিনীর প্রধান যেন তাঁদের বলেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তাঁর (মইন) জানা নেই। পরের পর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঘোষণা দেন, সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন না হলে তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না। তাঁরা গোলাগুলিও শুরু করেন; কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) পিলখানায় যান আলোচনার জন্য। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। সাহারা খাতুন জানতেন অফিসারদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, কোনো খোঁজও নেননি।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করেন বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাঁকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হন। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনি (মইন) দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হন এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেন। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত নিয়েও কথা বলেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়; যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী?’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, প্রতি–উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এত সেনা অফিসার হত্যার কারণ তাঁকে বের করতে হবে। তারপর সরকার আর উচ্চবাচ্য করেনি। তবে তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি।
তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রধান বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বের করতে সক্ষম হবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁদের অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আইওএমের কর্মকর্তারা। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান ফেরত আসা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
৫ ঘণ্টা আগেজাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট গ্রহণ, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন তাঁরা।
৫ ঘণ্টা আগেপরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন সময়ের দাবি। বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের চাওয়া দ্রুত নির্বাচন। এ অবস্থায় নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন দলগুলোর নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়
৫ ঘণ্টা আগেনির্বাচন কমিশনে আড়াই মাসের শূন্যতা কাটল অবশেষে। গতকাল বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
৬ ঘণ্টা আগে