বিএসটিআইয়ের আওতায় আরও ৮৯টি পরীক্ষাগার হচ্ছে: শিল্পমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২২ মে ২০২২, ১৯: ৩৭
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ২০: ১৭

পণ্যের মান, ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে বিএসটিআইকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে আরও ৮৯টি অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস উপলক্ষে আজ রোববার আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস উপলক্ষে রোববার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বিএসটিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘ডিজিটাল যুগে পরিমাপ।’ 

সভায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বিএসটিআই সক্ষমতার দিক থেকে অনেক দূর এগিয়েছে। বিএসটিআই পণ্যের মান প্রণয়ন, পরীক্ষণ, মান সনদ প্রদান, সঠিক ওজন ও পরিমাপের নিশ্চয়তা বিধান, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস সনদ প্রদানের পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য এরই মধ্যে হালাল সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করেছে। এ কার্যক্রম রপ্তানি বাণিজ্যে বিশাল ভূমিকা রাখবে। পণ্য পরীক্ষণ, ওজন ও পরিমাপের ক্ষেত্রে বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে বিএসটিআইতে আরও অত্যাধুনিক ৮৯টি ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’ 

বিএসটিআইয়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৪ সালে বিএসটিআই আন্তর্জাতিক মান সংস্থার (আইএসও) সদস্যভুক্ত হয়। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কোডেক্স অ্যালিমেন্টটারিয়াস কমিশনের (সিএসি) ন্যাশনাল কোডেক্স কন্টাক্ট পয়েন্টের (এনসিসিপি) সদস্যপদ লাভ করে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই একে একটি শক্তিশালী ও আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন।’ 

বিএসটিআইয়ের টেস্ট রিপোর্ট যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য হয়, সে লক্ষ্যে সরকার ও বিএসটিআই কাজ করছে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পণ্য উৎপাদনে পরিমাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয়, সে জন্য লেনদেনের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মান ও সঠিক পরিমাপের পণ্য নিশ্চিত করতে হবে।’ 

সভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন,   ‘পণ্যের মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ এবং ওজনে কারচুপি রোধকল্পে বিএসটিআই নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ও নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইসেন্সবিহীন, নকল পণ্য উৎপাদনকারী ও পরিমাপে কারচুপিকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’ 

শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে বিএসটিআইয়ের কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য ইতিমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিএসটিআইয়ের মানচিহ্ন ও লাইসেন্সের অনৈতিক ব্যবহার রোধে ওয়েববেইজড কিউআর কোড সংবলিত সফটওয়্যার প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। ফলে ভোক্তাসাধারণ মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে পণ্যের অনুকূলে প্রদত্ত বিএসটিআই লাইসেন্স, সার্টিফিকেট ও আমদানি ছাড়পত্রের সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। এ ছাড়া এ সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকেরা ওজন ও পরিমাপ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম; যেমন—মোড়কজাত পণ্যের নিবন্ধন, ক্যালিব্রেশন সনদ ও ভেরিফিকেশন সনদের তথ্য সহজে যাচাই করতে পারবেন।’ 

প্রতিটি স্থলবন্দরে বিএসটিআইয়ের কার্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব স্থলবন্দর রয়েছে, তার প্রতিটিতে বিএসটিআইয়ের ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হলে আমদানি-রপ্তানি গতি বাড়বে। বাংলাদেশের পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের সনদ যেন সে দেশের কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে, সে জন্য উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির প্রস্তাব করেন তিনি। 

সভায় মানসম্পন্ন পণ্য এবং সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে মাঠপর্যায়ে বিএসটিআইয়ের সেবা সম্প্রসারণে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনসহ প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, নতুন নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন ও বিদ্যমান ল্যবরেটরিসমূহের সম্প্রসারণ, মানচিহ্ন নকল প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সংবলিত লাইসেন্স সার্টিফিকেট প্রদান, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদানসহ সংস্থাটির পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত