Ajker Patrika

সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি এ কে আজাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৪, ২৩: ৩০
সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি এ কে আজাদের

ঋণ খেলাপিদের নামের তালিকা জাতীয় সংসদে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন ফরিদুপর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল কাদের (একে) আজাদ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। মূলত তার পরিমাণ ৫ লাখ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কারা নিল। তাদের নাম ১২ বছরের বালক থেকে শুরু করে আমরা সবাই জানি। অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, আপনি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য সংসদে তাদের নাম প্রকাশ করুন। তারাই ব্যাংকের টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে। এখন যদি ১৫ শতাংশ কর দিয়ে তাদের টাকা আনতে দেওয়া হয়, এটা হবে অন্যায়-অবিচার।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কে আজাদ এসব কথা বলেন।

এ কে আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। তাহলে কীভাবে এরকম একটা সার্বভৌম পার্লামেন্টে ১৫ শতাংশ কালো টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। কীভাবে বৈধতা দিতে পারে আমার বোধগম্য নয়। যারা করদাতা তাদের ৩০ শতাংশ দিতে হলে ওদের কেন দিতে হবে না। কেন বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না।

একে আজাদ বলেন, এবারের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জনপ্রশাসন খাতে বাজেটের ২২ দশমিক ১ শতাংশ ব্যয় হবে। ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। অথচ উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। যেখানে স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা করেছেন, সেখানে একটা মন্ত্রণালয়কে বাজেটের ২২ শতাংশ দিয়ে দেই, তাহলে এটা শরীরের চেয়ে মাথা ভারি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আয় বুঝে ব্যয় করতে হবে। সারা বিশ্বে মন্দা চলছে। মূল বাজার ইউরোপ আমেরিকা, তারা কিনতে পারছে না। যার ফলে আমাদের রপ্তানি নেতিবাচক।

একে আজাদ বলেন, একজন দায়িত্বশীল সাবেক মন্ত্রী গতকাল (শনিবার) বলেছেন প্রশাসনের একটা বিরাট অংশ যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিচার হওয়া উচিত। আমি প্রস্তাব করছি প্রধানমন্ত্রী যেখানে স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষণা করেছেন, সেখানে এনালগ রাষ্ট্র চলতে পারে না। এতগুলো মন্ত্রণালয়, দপ্তর দরকার আছে কি না সেটা দেখার জন্য একটি প্রশাসনিক কমিটি করা হোক। তারা অডিট করে সরকারকে প্রস্তাব দিক এত মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এত সরকারি কর্মকর্তা দরকার আছে কি না।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে পত্রিকায় দেখতে পেলাম এসি ল্যান্ড-ইউএনওর জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে গাড়ি কেনা হচ্ছে। অথচ প্রতিবেশী ভারতে মন্ত্রীরা নিজস্ব তৈরি গাড়িতে চলা ফেরা করেন। তাতে কি তাদের মানসম্মান কমে যায়? এখন ভাবার সময় এসেছে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চললে সামনের বছর বাজেটের আকার আরও কমাতে হবে।

একে আজাদ বলেন, এবার বেসরকারি বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে জিডিপির ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তিনি বলেন, ২০ জুন প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে ক্যাপিটাল মেশিনারি বা মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

অন্যদিকে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। অনেক ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেছে বা স্বল্প পরিসরে চলছে। তাহলে এই অবস্থায় কীভাবে বিনিয়োগ বাড়বে?

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুতের জন্য দাম বাড়তে হবে। গ্যাসের ক্যাপটিভ ১৬ টাকা থেকে ৩০ টাকা করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে ১২ টাকা থেকে ৩০ টাকা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ৭ টাকা ৭২ পয়সা থেকে ১১টাকা করা হয়েছে। অথচ এখন লোডশেডিং ৫–৬ ঘণ্টা, ইন্ডাস্ট্রি অচল অবস্থার মধ্যে।

একে আজাদ বলেন, দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ দিন দিন কঠিন হচ্ছে। ঋণের সুদহার, বিদ্যুৎ জ্বালানির অপর্যাপ্ততা পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত উদ্যোক্তারা। অথচ বিনিয়োগ টানতে পাশের দেশ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য নানামুখী প্রণোদনা দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত