দুর্নীতি জিইয়ে রেখে উন্নয়ন টেকসই হবে না: দুদক চেয়ারম্যান 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ১৯: ১৬
আপডেট : ২৫ মে ২০২৪, ১৯: ৫৬

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘দুর্নীতি জিইয়ে রেখে উন্নয়ন হলেও তা কখনো টেকসই হবে না। নাগরিকেরা যদি দায়িত্ব পালনে সচেতন হন এবং পারিবারিক পর্যায়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখেন তবে ফলাফল আশাপ্রদ হবে।’

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দুর্নীতি দমনে নাগরিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে। 

তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা হয়, তবে দুদকে অভিযোগই আসবে না। আর নাগরিকেরা সচেতন না হলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে না। 

দুদক কমিশনার আরও বলেন, অধিকাংশ অভিযোগে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকে না। যার কারণে প্রমাণ ছাড়া মামলা দায়ের সম্ভব হয় না।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ‘ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের’ প্রেসিডেন্ট হ‌ুমায়ূন রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামিম হায়দার এবং এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন। সেমিনার পরিচালনা করেন এইচআরপিবির সেক্রেটারি ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হ‌ুমায়ূন রশিদ বলেন, ‘মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী, আমলা, রাজনীতিবিদ অনেকেই জড়িত।’

সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামিম হায়দার বলেন, ‘ব্যাংক লোনের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে কতিপয় প্রভাবশালী সবচেয়ে বড় দুর্নীতি করেছেন।’

সভাপতির বক্তব্যে এইচআরপিবির প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণে সফল হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ, রাঘব বোয়ালেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধরা–ছোঁয়ার বাইরে থাকেন। ক্ষমতাসীনরা যদিও দুর্নীতির বিষয় জিরো টলারেন্সের কথা বলেন, কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। ক্ষমতার আশপাশে থেকে অনেকেই দুর্নীতি করলেও তা আমলে নেওয়া হয় না।’ 

এ সময় মনজিল মোরসেদ দুর্নীতি দমনে সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশের মধ্যে বলা হয়, দল–মত, পেশা, এলাকা এবং ব্যক্তির পরিচিতির ঊর্ধ্বে উঠে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সমানভাবে আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উচ্চপদস্থ ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সে ক্ষেত্রে অনুসন্ধান, তদন্ত দ্রুত সময়ে শেষ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুদকে কর্মরত সবার সম্পদের হিসাব দুই বছর পরপর দুদকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। গণমাধ্যমে প্রচারিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের বিষয়ে দুদককে সরাসরি অনুসন্ধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেসব অনুসন্ধান–তদন্ত এক বছরের মধ্যে শেষ হচ্ছে না, সেগুলো তালিকাভুক্ত করে কমিশনের তত্ত্বাবধানে দ্রুত শেষ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সুপারিশে আরও বলা হয়, বিদেশে অর্থ পাচার বা ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের তথ্য দুদকের নিকট আসলে বা মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে কমিশনকে গুরুত্ব সহকারে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের ভ্রমণ, গাড়ি ব্যবহার, ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি বিধান সংযোজন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইতিপূর্বে অনেক দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে অনুসন্ধান না করায় ঢালাওভাবে অব্যাহতি পেয়েছেন এবং এ বিষয় মিডিয়াতেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মিডিয়ার তথ্য বিবেচনায় নিয়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ ও প্রভাবশালীদের বিষয় নথি পুনরায় অনুসন্ধানের আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত