আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’
আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। অন্য অনেক মামলা তো বটেই, হাইকোর্টে যাওয়া সেই শিক্ষিকার মামলাটির পরিণতিও ঝুলে আছে নির্দেশিত সময়সীমার প্রায় তিন বছর পরও। শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলায় এভাবেই গড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর।
উল্লিখিত শিক্ষিকা কাজ করেন রাজধানীর মিরপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। বনিবনা না হওয়ায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে স্বামীকে তালাক দেন। স্বামী তাঁদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চলে যান ঢাকার বাইরের একটি জেলায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করে ওই নারী ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। আদালত স্বামীকে হাজির হয়ে জবাব দিতে সমন জারি করেন। স্বামী দীর্ঘদিনেও আদালতে হাজির না হওয়ায় স্ত্রী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে তিনি সন্তানের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করতে দেওয়ার সুযোগ এবং মা হিসেবে তার হেফাজতকারীর স্বীকৃতি দাবি করেন। তবে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের এ-সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন কারণে শিশুদের হেফাজত নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হেবিয়াস কর্পাস (রিট) মামলা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আদালত দেখেছেন, পারিবারিক আদালতগুলোতে শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মামলা এখনো বিচারাধীন উল্লেখ করে আদালত বলেন, শিশুদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো এত দীর্ঘ সময় ধরে চলা দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কিত মামলাগুলো যাতে দায়ের হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার ওই স্কুলের শিক্ষক নারীটির করা মামলাটি পারিবারিক আদালতকে ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ দ্বিতীয় আদালত ও পারিবারিক আদালতে। মামলাটির বিভিন্ন আদেশ থেকে দেখা যায়, হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছানোর পরও নির্দেশিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার বিবাদীপক্ষ হাইকোর্টে আবেদন করলে অন্য একটি বেঞ্চ ২০২২ সালের ১৫ মার্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।
মামলা দায়েরকারী নারীর আইনজীবী সেঁজুতি ঘোষ আজকের পত্রিকাকে সম্প্রতি বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিসংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ পারিবারিক আদালতে পৌঁছানোর পরও ‘প্রি-ট্রায়াল’-এর জন্য কয়েকটি তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। দ্রুত নিষ্পত্তির কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ স্থগিত করেছেন। তাই মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তা অজানা।’
সন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজতসংক্রান্ত মামলার জটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যে বহুসংখ্যক অভিভাবক, এই শিক্ষিকা তাঁদেরই একজন।
রাজধানীর ভাটারা থানার শহীদ আজিজ সড়কের বাসিন্দা এক মা চার বছর বয়সী শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এখন পঞ্চম অতিরিক্ত সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। বাদীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
সন্তানকে নিজ হেফাজতে রাখার নির্দেশ চেয়ে ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় সরকারি জজ ও পারিবারিক আদালতে ২০১৭ সালে মামলা করেন একটি শিশুর বাবা। লালবাগের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির দাবি, স্ত্রীর কাছে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়। ৭ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নথি থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে পারিবারিক আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাদীর আইনজীবী পলাশ বৈদ্য বলেন, ‘কারণে-অকারণে মামলার বিলম্ব হচ্ছে’।
ঢাকার ১৫তম পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন এক মামলার বাদী ঢাকার মহাখালী ওয়্যারলেস গেট এলাকার এক নারী। স্বামী এক দিন দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চলে যান। দুই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব দাবি করে স্ত্রী মামলা করেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। মামলার নথি থেকে দেখা যায়, স্বামী একবারও আদালতে হাজির হননি। আর তাই সমন জারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য বারবার দিন ধার্য করা হচ্ছে।
মামলার বাদী ওই নারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে আদালতে ঘুরছি। আইনজীবী বলেছেন, মামলা এখনো প্রস্তুত হয়নি।’
সংসদে সর্বশেষ আইনমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের হিসাব অনুযায়ী পারিবারিক মামলা বিচারাধীন ৬০ হাজার ৯২৫টি। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ৫ হাজার ৭৩৪টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৯৫টি। এসবের মধ্যে দেনমোহরের দাবিতে করা মামলাও রয়েছে। সন্তানের হেফাজত বা অভিভাবকত্বের মামলা কতগুলো তা পৃথকভাবে হিসাব করা হয়নি। তবে কমপক্ষে ২০ হাজার মামলা চলমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ ও গার্ডিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্ডস অ্যাক্ট, ১৮৯০-এ নাবালক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব, তত্ত্বাবধান বা ভরণপোষণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এসব আইন ও বিধান অনুযায়ী, নাবালকের স্বাভাবিক ও আইনগত অভিভাবক বাবা হলেও বাবার অনুপস্থিতি কিংবা অযোগ্যতায় মা অভিভাবক হতে পারেন। আর নাবালক শিশুর সার্বিক কল্যাণ ও তত্ত্বাবধানে মায়ের অগ্রাধিকার রয়েছে। বিচ্ছেদ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর বয়স ও মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মায়ের জিম্মায় থাকার কথা। কিন্তু মামলা যদি বছরের পর বছর চলে, তাহলে শিশুসন্তানেরা মামলা শেষ হতে হতেই সাবালক হয়ে যায়। সে অবস্থায় আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর আর কোনো গুরুত্ব থাকে না। আবার অনেক মামলা পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পরও জেলা জজ আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়। নাবালক শিশু সাবালক হওয়ার পর আইনত নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমাজবিজ্ঞানী ও শিশু মনোবিদেরা বলে থাকেন, হেফাজত নিয়ে মা-বাবার আইনি লড়াই শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মামলা দীর্ঘায়িত হলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিও বেশি হয়। বিচ্ছিন্ন মা-বাবার মামলার জালে পড়ে নাবালক সন্তানদের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়া সমাজে এখন পরিচিত চিত্র।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।’
সালমা আলী বলেন, ‘এসব মামলার বিবাদীদের নামে সমন ইস্যু করতে হয়। অনেক সময় সমন যথাযথভাবে জারি হয় না। এ কারণেও মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মেনে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য পারিবারিক আদালতের চেষ্টা থাকতে হবে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।’
আরেকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘হাইকোর্ট কোনো আদেশ দিলে নিম্ন আদালত তা মানতে বাধ্য। না মানলে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদও লঙ্ঘন করা হয়। পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে বিবাদী পক্ষের নামে সমন যথাযথভাবে জারি হচ্ছে না। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমন জারি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া আদালত প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।’

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৪০ মিনিট আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী। পরিকল্পিতভাবে একযোগে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী স্থানীয় আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরাই মূলত বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। আর এই দুই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা। পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের আগে ঢাকা শহরে ঘন ঘন কারফিউয়ের মধ্যে মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাদের সহায়তা করেছিল ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ছাত্রসংঘের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। দুই দেশই তাদের ফেরত দিচ্ছে না।
ট্রাইব্যনালের ১৫৪ পৃষ্ঠার রায়ে উঠে এসেছে, কীভাবে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আল বদর সদস্যদের নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যার পর বধ্যভূমিতে লাশ গুম করেছিলেন। আশরাফুজ্জামান ছিলেন হত্যাযজ্ঞের ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ও মুঈনুদ্দীন ‘অপারেশন ইনচার্জ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে হত্যার পরিকল্পনা ও একটি তালিকাও পাওয়া যায়।
জামায়াতের এই দুই ছাত্র নেতা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, এএনএম গোলাম মুস্তাফা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সেলিনা পারভীন, শহীদুল্লাহ কায়সার এবং চিকিৎসক মো. মর্তুজা, মো. ফজলে রাব্বি ও আলিম চৌধুরীকেও হত্যার পর গুম করে তারা।
‘ফ্যাসিস্ট’ জামায়াত
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছিল। আদালত বলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামী একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসাবে কাজ করেছে। ‘কিলিং স্কোয়াড’ আল বদরের নিয়ন্ত্রণ জামায়াতের হাতেই ছিল।
রায়ে বলা হয়, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলামীর সংগঠিত মহাপরিকল্পনার আলোকেই সে সময় আল বদর বাহিনীকে নামানো হয়। বাঙালি জাতিকে প্যারালাইজড করতে তারা বুদ্ধিজীবী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিহীন করতে চেয়েছিল।
একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘সন্তানের জন্য সেলিনা পারভীন প্রাণ ভিক্ষা চান, তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে, যাকে দেখাশুনা করার আর কেউ নেই। কিন্তু নিষ্ঠুর হত্যাকারীরা তাকে ছাড়েনি। বেয়নেট দিয়ে তাকে তাতক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয় বলে প্রসিকিউশনের ২২ নম্বর সাক্ষী জানিয়েছেন। সেলিনা পারভীন ছিলেন একজন মা। ভীতিকর আক্রমণ কেবল সেলিনা পারভীনের ওপরই করা হয় নাই। বরং মাতৃত্বের ওপরও হয়েছে। এটা বরং মাতৃহন্তাও। অবর্ণনীয় এই নিষ্ঠুরতা মানবতার বিবেককে আঘাত করেছে।’
এর আগে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আখ্যা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে পুলিশ প্রহরায় মুঈনুদ্দীনকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়ায় ওই দুই সামরিক শাসককেও ধিক্কার জানানো হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা জাতির বড় একটি বিরাট লজ্জা (গ্রেট শেম) যে, জিয়া ও এরশাদ তাকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দিয়েছেন। আত্মগোপনে গিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে সে সময় পুলিশি নিরাপত্তাও দেয়া হয়। বিচারের মুখোমুখি করার পরিবর্তে তাকে রাষ্ট্রীয় মেশিনারি দিয়ে সম্মান দেয়া হলো।’

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী। পরিকল্পিতভাবে একযোগে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী স্থানীয় আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরাই মূলত বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। আর এই দুই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা। পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের আগে ঢাকা শহরে ঘন ঘন কারফিউয়ের মধ্যে মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাদের সহায়তা করেছিল ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ছাত্রসংঘের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। দুই দেশই তাদের ফেরত দিচ্ছে না।
ট্রাইব্যনালের ১৫৪ পৃষ্ঠার রায়ে উঠে এসেছে, কীভাবে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আল বদর সদস্যদের নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যার পর বধ্যভূমিতে লাশ গুম করেছিলেন। আশরাফুজ্জামান ছিলেন হত্যাযজ্ঞের ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ও মুঈনুদ্দীন ‘অপারেশন ইনচার্জ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে হত্যার পরিকল্পনা ও একটি তালিকাও পাওয়া যায়।
জামায়াতের এই দুই ছাত্র নেতা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, এএনএম গোলাম মুস্তাফা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সেলিনা পারভীন, শহীদুল্লাহ কায়সার এবং চিকিৎসক মো. মর্তুজা, মো. ফজলে রাব্বি ও আলিম চৌধুরীকেও হত্যার পর গুম করে তারা।
‘ফ্যাসিস্ট’ জামায়াত
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছিল। আদালত বলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামী একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসাবে কাজ করেছে। ‘কিলিং স্কোয়াড’ আল বদরের নিয়ন্ত্রণ জামায়াতের হাতেই ছিল।
রায়ে বলা হয়, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলামীর সংগঠিত মহাপরিকল্পনার আলোকেই সে সময় আল বদর বাহিনীকে নামানো হয়। বাঙালি জাতিকে প্যারালাইজড করতে তারা বুদ্ধিজীবী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিহীন করতে চেয়েছিল।
একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘সন্তানের জন্য সেলিনা পারভীন প্রাণ ভিক্ষা চান, তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে, যাকে দেখাশুনা করার আর কেউ নেই। কিন্তু নিষ্ঠুর হত্যাকারীরা তাকে ছাড়েনি। বেয়নেট দিয়ে তাকে তাতক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয় বলে প্রসিকিউশনের ২২ নম্বর সাক্ষী জানিয়েছেন। সেলিনা পারভীন ছিলেন একজন মা। ভীতিকর আক্রমণ কেবল সেলিনা পারভীনের ওপরই করা হয় নাই। বরং মাতৃত্বের ওপরও হয়েছে। এটা বরং মাতৃহন্তাও। অবর্ণনীয় এই নিষ্ঠুরতা মানবতার বিবেককে আঘাত করেছে।’
এর আগে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আখ্যা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে পুলিশ প্রহরায় মুঈনুদ্দীনকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়ায় ওই দুই সামরিক শাসককেও ধিক্কার জানানো হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা জাতির বড় একটি বিরাট লজ্জা (গ্রেট শেম) যে, জিয়া ও এরশাদ তাকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দিয়েছেন। আত্মগোপনে গিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে সে সময় পুলিশি নিরাপত্তাও দেয়া হয়। বিচারের মুখোমুখি করার পরিবর্তে তাকে রাষ্ট্রীয় মেশিনারি দিয়ে সম্মান দেয়া হলো।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৪০ মিনিট আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’
বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’
বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৪০ মিনিট আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’
সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’
সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’
দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’
প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’
সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’
সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’
দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’
প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া দম্পতিদের শিশুসন্তানদের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত সম্পর্কে মামলাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চলা ‘দুঃখ ও হতাশাজনক এবং ন্যায়নীতির পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারিবারিক আদালতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এক শিক্ষিকার রিট আবেদনের সূত্র ধরে দেওয়া উচ্চ আদালতের...
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৪০ মিনিট আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে