দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার শিশু অন্ধত্ব বরণ করে

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩: ২৫

অপরিণত ও স্বল্প ওজনের নবজাতকের চোখে অন্ধত্ব বয়ে আনতে পারে রেটিনোপ্যাথী অব প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি)। যখন নবজাতকেরা মাতৃগর্ভে ৩৫ সপ্তাহের আগেই জন্ম নেয় এবং তাদের ওজন যখন ২০০০ গ্রামের বা ২ কেজির নিচে থাকে। এদের বাঁচিয়ে রাখাতে নিউন্যাটোলজি বা এনআইসিইউতে রাখা হলে এই রোগটি দেখা যায়। আরওপি ও অন্যান্য চোখের সমস্যার কারণে দেশে বছরে ৪০ হাজার শিশু অন্ধত্ব বরণ করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অনুষ্ঠিত ‘রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি’ শীর্ষক মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনার এই তথ্য জানানো হয়।

আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউন্যাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সঞ্চয় কুমার দে ‘আরওপি: এ চ্যালেঞ্চ ফর ইনট্যাক্ট সারভাইভাল অফ প্রিটার্ম নিউবর্ন’ এবং চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী ‘আরওপি: ব্লাইন্ডিং অব নিউন্যাটোস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

এ সময় জানানো হয়, এই রোগটির বিশেষ দিক হল, জন্মের সময় নবজাতক এ রোগে আক্রান্ত থাকে না। এমনকি জন্মগ্রহণের প্রথম ১৪ বা ১৫ দিনের মধ্যে রোগটি নবজাতকদের হয় না। যখন এই রোগটি শনাক্তের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা না হলে নবজাতকরা অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২০০০ গ্রামের নিচে বা ৩৫ সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়া নবজাতকদে ৩০ দিনের ভেতর অনন্ত একবার চক্ষু পরীক্ষা করতে হবে। যারা ২৮ সপ্তাহের আগে হয়েছে এবং ১২০০ গ্রামের নিচে ওজন নিয় জন্ম নেয় তাদের ক্ষেত্রে এই স্ক্রিনিংয় নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ এদের ক্ষেত্রে আরও আগেই যদি রোগটি চিকিৎসা না হয়, তাহলে তারা শিগগিরই অন্ধত্বের দিকে যেতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ নবজাতক আরওপি আক্রান্ত। আরওপি চিকিৎসায় ভালো হয়। তবে যাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসায় আরওপি ভাল হবে না, তারা অন্ধ হয়ে যায়। সেই অন্ধত্ব অনিবারণযোগ্য।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নবজাতক সময়ের আগে জন্মায়, অতিরিক্ত অক্সিজেন পায়, সংক্রমণে ভোগে, মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন সেবা পায়, যাদের বার বার রক্ত সঞ্চালন করা হয়, তারা আরওপি ঝুঁকিতে থাকে।

আরওপি স্ক্রিনিং কম বয়সেই নির্ণয় করা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নবজাতক বিভাগ ২০১৩ সাল থেকে চক্ষু বিভাগের সঙ্গে আরওপি স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা দিয়ে আসছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আরওপি অনেকের কাছে নতুন। নবজাতকদের যখনই অক্সিজেন বেশি দেয়া হয় তখনই এটি বেশি হয়। আজকাল কিছু সিজারিয়ান সেকশন সময়ের আগে করা হয়, টেস্ট টিউব বেবির মা ও শিশুর সুস্থতায় আরলি সিজারিয়ান সেকশন করা হয়। এ সব নবজাতকদের মধ্যে অনেক শিশু আরওপি রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আরওপি সেন্টার প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ৫৯৬ জন রোগী এসেছে। যার মধ্যে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশের আরপি শনাক্ত হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত