নিরাপরাধীরা কারাগারে যাক, চান না অভ্যুত্থানে নিহত রিকশাচালকের স্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
ছবি: এএফপি

গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের সময় এক রিকশাচালকের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগে পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি একজন আইনজীবীর বরাতে সোমবার এই খবর জানিয়েছে এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে আহত রিকশাচালকের মৃত্যুর বিষয়টি সামনে আসে। পরে এ নিয়ে ব্যাপক হইচই শুরু হয়। নিহত ওই রিকশাচালকের নাম মোহাম্মদ ইসমাইল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এএফপিকে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে ডেল্টা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক সাদি বিন শামস সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘অভিযোগে বলা হয়েছে, তাঁরা ইসমাইলকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাঁকে চার ঘণ্টা অযত্নে ফেলে রাখা হয়।’

তবে ডেল্টা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম সেলিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিপ্লবের সময় প্রতিবাদকারীদের চিকিৎসা দিতে বারবার নিষেধ করেছিল পুলিশ।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের মাধ্যমে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন শেষ হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমতে, এই আন্দোলনে আট শ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, রিকশাচালক ইসমাইল গত ১৯ জুলাই ঢাকার রামপুরা এলাকায় পুলিশের অভিযানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। একটি ফেসবুক পোস্টে দেখা যায়, ইসমাইলের রক্তমাখা দেহ ডেল্টা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের সিঁড়িতে পড়ে আছে।

হাসপাতালটির পরিচালক সেলিম দাবি করেছেন, তাঁর হাসপাতালের কর্মীরা পুলিশি বাধা অগ্রাহ্য করেও আহতদের যতটা সম্ভব সাহায্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের চারপাশ ছিল যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। পুলিশ ও তৎকালীন শাসক দল আওয়ামী লীগের সদস্যরা প্রতিবাদকারীদের চিকিৎসা না করার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছিল।’

হাসপাতালের কর্মীরা ইসমাইলের দেহ ভেতরে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেও জানান সেলিম। তবে পুলিশ গুলি চালালে তাঁরা পিছু হটতে বাধ্য হন। সেলিম বলেন, ‘আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না। আমরা দেহটি সেখানে রেখেই চলে যাই।’

আদালতের তদন্ত ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘আদালত সেই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, যিনি ইসমাইলকে গুলি করেছিলেন। আর এমন চিকিৎসক ও কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, যারা প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন।’

নিহত ইসমাইলের স্ত্রী লাকি বেগম বলেছেন, তিনি ‘ন্যায়বিচার’ চান। তিনি আরও বলেছে, ‘আমি চাই না নিরপরাধেরা কারাগারে যাক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত