বেনজীরের বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দুই মাসের মধ্যে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২০: ৫১
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ১৫

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের সম্পদ নিয়ে ওঠা অভিযোগের অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই মাসের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 

বেনজীর আহমেদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সাঈদ আহমেদ রাজা ও ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন ও মনোজ কুমার ভৌমিক। 

শুনানিতে বেনজীর আহমেদের অনিয়ম–দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সারোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, দুদক ১০ হাজার অভিযোগ অনুসন্ধান না করে অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দিয়েছে। এটি যাতে ক্লিয়ার সার্টিফিকেট হতে না পারে তার জন্য আমরা বিচারিক তদারকি চাচ্ছি।’

বেনজীর আহমেদের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে এসব প্রতিবেদন করা হয়েছে। রিটে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কিন্তু দুদক এরই মধ্যে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। আদালত তদারকি বা হস্তক্ষেপ করলে স্বাধীন অনুসন্ধান হবে না। এতে অন্তর্বর্তী আদেশ দেওয়া ঠিক হবে না।

এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ‘ভারতে পাবলিক সার্ভিস হোল্ডারদের (সরকারি চাকরিজীবী) জন্য সম্পদ বিবরণী আইন আছে। চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় সম্পদ কত ছিল, আর অবসরে যাওয়ার সময় কত, তার বিবরণী দিতে হয়। অবসরে যাওয়ার সময় সম্পদের পার্থক্য ১০ শতাংশের বেশি হলেই মামলা হয়। এ ধরনের সিস্টেম আমাদের দেশেও করা দরকার। নইলে অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জন বা দুর্নীতি–কোনোটিই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’

হাইকোর্ট বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে। শুধু বাতাস খেয়ে বেড়ালে হবে না। আমাদের চোখ খোলা রাখতে হবে। আপনাদের শুধু মামলা করলেই চলবে না। রাষ্ট্রের স্বার্থ আপনাদের দেখতে হবে। আমরা চাই, দেশ দুর্নীতিমুক্ত হোক। কেউ অন্যায় করে যাতে পার পেতে না পারে।’

এ সময় দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘সাবেক পুলিশপ্রধানের বিরুদ্ধে এটি গুরুতর অভিযোগ। অনুসন্ধানের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। এর আগে অভিযোগ অনুসন্ধান করতে ৪ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন তিনি। চিঠিতে সাড়া না পেয়ে ১৮ এপ্রিল আইনি নোটিশ দেন রিগ্যান।

এরপরও সাড়া না পেয়ে গত ২১ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। আজ সেটি শুনানিতে ওঠে।

গত রোববার বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিতে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত