ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের নিবন্ধ
অনলাইন ডেস্ক
প্রতিবছর যখন বাংলাদেশের বিজয় দিবস আসে, তখন অনেকের অবদানই লেখা হয়, স্মরণ করা হয়। কিন্তু এখনো এমন অনেক ইতিহাস আছে যা অজানা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমনই এক অজানা অধ্যায় হলো—তিব্বতি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ।
এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্যান্টমস অব চিটাগাং—দ্য ফিফথ আর্মি ইন বাংলাদেশ’—এ এসএফএফ—এর সৈন্যদের তিব্বতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি কেবল পরোক্ষভাবে এসব সেনা কোথা থেকে এসেছিলেন তার উৎসের কথা করেছেন।
সুজান সিং উবান বলেছেন, এসএফএফ গঠন করা হয়েছিল ‘অভিযোজনযোগ্য উত্তরের পাহাড়ি উপজাতি’ সদস্যদের নিয়ে। এই বাহিনী মূলত ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর গঠন করা হয়েছিল এবং তাদের ফুসফুসের অস্বাভাবিক ক্ষমতার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অসাধারণ ক্ষমতা হাই অলটিট্যুড বা ব্যাপক উচ্চতার এলাকা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশাল সুবিধা দিয়েছিল। এমন গোপনীয়তার কারণে, তিব্বতি যোদ্ধারা চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা এখনো অধিকাংশ সাধারণ ভারতীয়ের কাছে অজানা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হওয়ার পরপরই ‘টিবেটানস অব এস্টাব্লিশমেন্ট-২২’—এর সদস্যদের (যেটি প্রাথমিকভাবে এসএফএফ হিসেবে পরিচিত ছিল) ডাকা হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য। তাঁরা আগে থেকেই বেশ ভালোভাবেই প্রশিক্ষিত ছিলেন। তারা পার্বত্য ও জঙ্গলে যুদ্ধ পরিচালনায় এবং মর্টার থেকে রকেট লঞ্চার পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি অনেকেই প্যারাট্রুপার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর, তাদের সামনে নিজেদের আরও একবার প্রমাণের নতুন সুযোগ হাজির হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করারও সুযোগ ছিল এটি। কারণ, ভারত তাদের তিব্বত থেকে তুলে এনে আশ্রয় এবং আয়ের সুযোগ দিয়েছিল।
এসএফএফ—এর সদস্যদের ওই সময়কার অনুভূতিগুলো ‘তিব্বতি গেরিলার ইন এক্সাইল—ইন্ডিয়ার সিক্রেট আর্মি’—একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। লোমা ফিল্মস নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশে যুদ্ধ করা লামা কুংচক নামের এক এসএফএফ বলেন, তিনি তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান এবং ‘শত্রুর চোখে ধুলো দিতে চান।’ কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছা যেহেতু পূর্ণ হয়নি, তাই তিনি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
সুজান সিং উবান এই একই ধরনের অনুভূতি আর সব এসএফএফ সদস্যদের মধ্যে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, এসএফএফ সদস্যদের বিশেষ দক্ষতা—গেরিলা যুদ্ধ, পর্বত ও জঙ্গলে যুদ্ধ—কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাই উবান তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ করার জন্য বেছে নেন।
পাকিস্তানের অনিয়মিত বাহিনী এবং মিজো বিদ্রোহীরা এরই মধ্যেই চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে অপারেশন শুরু করেছিল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। সুজান সিং উবান জানতেন, যদি এসএফএফ এই পাহাড়ি অঞ্চলের কঠোর ভূমিকে সফলভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে এটি কেবল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি দুর্বল গ্যাপকেই পূরণ করবে না একই সঙ্গে এটি আরাকানের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ভারতীয় সমরকুশলীদের আশঙ্কা ছিল, পাকিস্তানি সেনারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে পারে।
জেনারেল উবান এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম মানেকশ এসএফএফকে এই অপ্রথাগত ভূমিকা পালন করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তারপরও উবান এসএফএফ সৈন্যদের লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তী যেকোনো অভিযানে অংশগ্রহণের অনুমতি চায়। আর এভাবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে এসএফএফ—এর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মঞ্চ তৈরি হয়।
চট্টগ্রাম একটি ঘন অভেদ্য জঙ্গলে পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এ ছাড়া নদী-নালার উপস্থিতিও আছে। এই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো পথই নেই। এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা এসএফএফের তিব্বতিদের ছিল। এই অঞ্চলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া ছিল ব্যাপক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। এমন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য আগেভাবেই ভালোভাবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এসব সমস্যা ছাড়াও আবহাওয়া ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন ঘন তীব্র হতো, যা সামরিক সরঞ্জামগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ভূখণ্ড যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এসএফএফের তিনটি কলাম নিযুক্ত ছিল। একটি কলাম ছিল আরাকান সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাও করার জন্য, দ্বিতীয়টি কাপ্তাই বাঁধ-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়েও একই কাজ করছিল এবং তৃতীয়টি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাওয়ে কাজে নিযুক্ত ছিল।
কাপ্তাই বাঁধ ছিল এসএফএফের একটি প্রধান লক্ষ্য। মেজর জেনারেল উবান এবং তাঁর দল এই স্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি এই বিষয়ে জেনারেল মানেকশর সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম চেয়েছিলেন এই বাঁধটি ধ্বংস করতে। কারণ এটি পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুৎ শক্তির একটি প্রধান উৎস ছিল। এই ভেঙে ফেললে জঙ্গলে বন্যা দেখা দিত এবং তা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য এই অঞ্চলে কার্যকর অভিযান পরিচালনা কঠিন তোলে।
একইভাবে আরাকান সড়ক বিচ্ছিন্ন করাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি অনুমান করা হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত মনে করলে এই সড়ক দিয়ে বার্মায় পালিয়ে যেতে পারে। আরাকান সড়ক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার এবং বার্মা পর্যন্ত যায়।
তবে জেনারেল উবান যখন সেনা সদর দপ্তর থেকে এসএফএফের জন্য নির্ধারিত কাজগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা পান, তখন তিনি খুব একটা খুশি হননি। তিনি মনে করেছিলেন, তাঁর বাহিনীর জন্য খুব কম অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এসএফএফকে কাপ্তাই বাঁধ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিতে হবে, যা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলোতে ‘হয়রানি’ করতে এবং তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী আঘাত প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছিল।
উবান মনে করেছিলেন, এই নির্দেশে এসএফএফ বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে না। তাই উবান তার সেনাদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম বন্দরের দখল। এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সব সমুদ্রপথের সরবরাহ আসত।
তবে সেনা সদর দপ্তর মনে করেছিল যে, যেহেতু এসএফএফের কাছে সরাসরি কামান এবং বিমান সহায়তা নেই—তাই একমাত্র গেরিলা কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম দখল সম্ভব নয়। বন্দরের চারপাশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। যার ফলে আক্রমণ করতে হলে বিমান এবং কামান দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হানতে হতো। উবান চেয়েছিলেন, তিনি এসএফএফের ১ হাজার সেনা চট্টগ্রামে প্রবেশ করাবেন এবং শহরে থাকা ২ হাজার মুজিব বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবী এসএফএফকে সমর্থন কবে। তবে এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। মূল নির্দেশনা তখনো বলবৎ থাকে।
‘অপারেশন ইগলের’—চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পর জেনারেল উবান এসএফএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাছাকাছি মিজোরাম সীমান্তে স্থানান্তর শুরু করেন। তাদের আকাশ ও স্থল পথে সেখানে নেওয়া হয়। এই অপারেশনের জন্য উবান সদর দপ্তর হিসেবে ডেমাগিরিকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারপাড়া, বর্ণপানসুড়ি এবং জারুলছড়িতে এসএফএফের তিনটি কলামের মূল ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন।
এসএফএফ ভারতের মূল বাহিনী থেকে আলাদাভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেছে। অনেককে দিনের পর দিন কেবল নদীর মাছ ধরে বাঁচতে হয়। কারণ, হেলিকপ্টারে খাদ্য সরবরাহ যথাসময়ে আসতে পারত না এবং তাদের খাবার প্রায়ই শেষ হয়ে যেত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, এসএফএফ বাহিনী আধপেটা অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে সেগুলি দখল করে নিয়েছে। এই বিষয়টি কেবল ভারতীয় কমান্ডারদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেনি বরং দখলকৃত পাকিস্তানি অবস্থানগুলো এসএফএফকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রেশনও প্রদান করেছিল। এসএফএফের সাফল্যের ফলেই সুজান সিং উবান একসময় রাঙামাটি শহর ঘেরাও করতে সক্ষম হন। এই শহর পাকিস্তান সেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল। অবশেষে উবানের বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক নাগরিক অভ্যর্থনা পায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহর ত্যাগ করার সময় প্রচুর জ্বালানি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে যায়।
এসএফএফ যখন দোহাজারী ব্রিজ ধ্বংস করে এবং সাংগু নদী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর পাকিস্তানি বাহিনীর বার্মায় আরাকান সড়ক দিয়ে পালানোর সম্ভব ছিল না। মেজর জেনারেল উবানের মতে, এটি ছিল একটি প্রধান কারণ—যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীকে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।
যুদ্ধ শেষে অপারেশন ইগলে অংশ নেওয়া এসএফএফ কর্মকর্তাদের ২৯টি পদক দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার যেসব এসএফএফের সঙ্গে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ছয়জনকে বীরচক্র, পাঁচ জনক ‘বিশিষ্ট সেবা’, পাঁচজনকে ‘সেনা’ পদক, একজনকে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা’ পদক এবং একজনকে ‘অতি বিশিষ্ট সেবা’ পদক দেওয়া হয়। আর ১১ জনের নাম অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এসএফএফের তিব্বতি জওয়ানরা গোপন বাহিনী হিসেবে পরিচিত থাকায় কোনো বীরত্বসূচক পদক পাননি। এক হিসাব অনুসারে, অপারেশন ইগলে ৫৬ জন তিব্বতি নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছিলেন। ৫ শতাধিক তিব্বতি সেনা কেবল নগদ পুরস্কার পেয়ে ছিলেন যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চক্রাতায় এক স্মৃতিস্তম্ভে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার নাম খোদাই করা রয়েছে।
লেখক: মান আমান সিং ছিনা। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সহকারী সম্পাদক। তিনি প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেন। মান আমান সিং ছিনা সামরিক ইতিহাস এবং পাঞ্জাব রাজনীতির সম্পর্কিত বিষয়েও লেখেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুদ্ধ নিয়ে ‘সেভেন হিরোজ অব ১৯৭১’—নামে একটি বই লিখেছেন।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান
প্রতিবছর যখন বাংলাদেশের বিজয় দিবস আসে, তখন অনেকের অবদানই লেখা হয়, স্মরণ করা হয়। কিন্তু এখনো এমন অনেক ইতিহাস আছে যা অজানা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমনই এক অজানা অধ্যায় হলো—তিব্বতি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ।
এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্যান্টমস অব চিটাগাং—দ্য ফিফথ আর্মি ইন বাংলাদেশ’—এ এসএফএফ—এর সৈন্যদের তিব্বতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি কেবল পরোক্ষভাবে এসব সেনা কোথা থেকে এসেছিলেন তার উৎসের কথা করেছেন।
সুজান সিং উবান বলেছেন, এসএফএফ গঠন করা হয়েছিল ‘অভিযোজনযোগ্য উত্তরের পাহাড়ি উপজাতি’ সদস্যদের নিয়ে। এই বাহিনী মূলত ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর গঠন করা হয়েছিল এবং তাদের ফুসফুসের অস্বাভাবিক ক্ষমতার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অসাধারণ ক্ষমতা হাই অলটিট্যুড বা ব্যাপক উচ্চতার এলাকা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশাল সুবিধা দিয়েছিল। এমন গোপনীয়তার কারণে, তিব্বতি যোদ্ধারা চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা এখনো অধিকাংশ সাধারণ ভারতীয়ের কাছে অজানা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হওয়ার পরপরই ‘টিবেটানস অব এস্টাব্লিশমেন্ট-২২’—এর সদস্যদের (যেটি প্রাথমিকভাবে এসএফএফ হিসেবে পরিচিত ছিল) ডাকা হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য। তাঁরা আগে থেকেই বেশ ভালোভাবেই প্রশিক্ষিত ছিলেন। তারা পার্বত্য ও জঙ্গলে যুদ্ধ পরিচালনায় এবং মর্টার থেকে রকেট লঞ্চার পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি অনেকেই প্যারাট্রুপার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর, তাদের সামনে নিজেদের আরও একবার প্রমাণের নতুন সুযোগ হাজির হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করারও সুযোগ ছিল এটি। কারণ, ভারত তাদের তিব্বত থেকে তুলে এনে আশ্রয় এবং আয়ের সুযোগ দিয়েছিল।
এসএফএফ—এর সদস্যদের ওই সময়কার অনুভূতিগুলো ‘তিব্বতি গেরিলার ইন এক্সাইল—ইন্ডিয়ার সিক্রেট আর্মি’—একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। লোমা ফিল্মস নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশে যুদ্ধ করা লামা কুংচক নামের এক এসএফএফ বলেন, তিনি তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান এবং ‘শত্রুর চোখে ধুলো দিতে চান।’ কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছা যেহেতু পূর্ণ হয়নি, তাই তিনি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
সুজান সিং উবান এই একই ধরনের অনুভূতি আর সব এসএফএফ সদস্যদের মধ্যে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, এসএফএফ সদস্যদের বিশেষ দক্ষতা—গেরিলা যুদ্ধ, পর্বত ও জঙ্গলে যুদ্ধ—কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাই উবান তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ করার জন্য বেছে নেন।
পাকিস্তানের অনিয়মিত বাহিনী এবং মিজো বিদ্রোহীরা এরই মধ্যেই চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে অপারেশন শুরু করেছিল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। সুজান সিং উবান জানতেন, যদি এসএফএফ এই পাহাড়ি অঞ্চলের কঠোর ভূমিকে সফলভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে এটি কেবল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি দুর্বল গ্যাপকেই পূরণ করবে না একই সঙ্গে এটি আরাকানের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ভারতীয় সমরকুশলীদের আশঙ্কা ছিল, পাকিস্তানি সেনারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে পারে।
জেনারেল উবান এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম মানেকশ এসএফএফকে এই অপ্রথাগত ভূমিকা পালন করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তারপরও উবান এসএফএফ সৈন্যদের লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তী যেকোনো অভিযানে অংশগ্রহণের অনুমতি চায়। আর এভাবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে এসএফএফ—এর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মঞ্চ তৈরি হয়।
চট্টগ্রাম একটি ঘন অভেদ্য জঙ্গলে পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এ ছাড়া নদী-নালার উপস্থিতিও আছে। এই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো পথই নেই। এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা এসএফএফের তিব্বতিদের ছিল। এই অঞ্চলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া ছিল ব্যাপক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। এমন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য আগেভাবেই ভালোভাবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এসব সমস্যা ছাড়াও আবহাওয়া ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন ঘন তীব্র হতো, যা সামরিক সরঞ্জামগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ভূখণ্ড যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এসএফএফের তিনটি কলাম নিযুক্ত ছিল। একটি কলাম ছিল আরাকান সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাও করার জন্য, দ্বিতীয়টি কাপ্তাই বাঁধ-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়েও একই কাজ করছিল এবং তৃতীয়টি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাওয়ে কাজে নিযুক্ত ছিল।
কাপ্তাই বাঁধ ছিল এসএফএফের একটি প্রধান লক্ষ্য। মেজর জেনারেল উবান এবং তাঁর দল এই স্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি এই বিষয়ে জেনারেল মানেকশর সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম চেয়েছিলেন এই বাঁধটি ধ্বংস করতে। কারণ এটি পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুৎ শক্তির একটি প্রধান উৎস ছিল। এই ভেঙে ফেললে জঙ্গলে বন্যা দেখা দিত এবং তা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য এই অঞ্চলে কার্যকর অভিযান পরিচালনা কঠিন তোলে।
একইভাবে আরাকান সড়ক বিচ্ছিন্ন করাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি অনুমান করা হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত মনে করলে এই সড়ক দিয়ে বার্মায় পালিয়ে যেতে পারে। আরাকান সড়ক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার এবং বার্মা পর্যন্ত যায়।
তবে জেনারেল উবান যখন সেনা সদর দপ্তর থেকে এসএফএফের জন্য নির্ধারিত কাজগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা পান, তখন তিনি খুব একটা খুশি হননি। তিনি মনে করেছিলেন, তাঁর বাহিনীর জন্য খুব কম অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এসএফএফকে কাপ্তাই বাঁধ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিতে হবে, যা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলোতে ‘হয়রানি’ করতে এবং তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী আঘাত প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছিল।
উবান মনে করেছিলেন, এই নির্দেশে এসএফএফ বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে না। তাই উবান তার সেনাদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম বন্দরের দখল। এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সব সমুদ্রপথের সরবরাহ আসত।
তবে সেনা সদর দপ্তর মনে করেছিল যে, যেহেতু এসএফএফের কাছে সরাসরি কামান এবং বিমান সহায়তা নেই—তাই একমাত্র গেরিলা কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম দখল সম্ভব নয়। বন্দরের চারপাশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। যার ফলে আক্রমণ করতে হলে বিমান এবং কামান দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হানতে হতো। উবান চেয়েছিলেন, তিনি এসএফএফের ১ হাজার সেনা চট্টগ্রামে প্রবেশ করাবেন এবং শহরে থাকা ২ হাজার মুজিব বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবী এসএফএফকে সমর্থন কবে। তবে এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। মূল নির্দেশনা তখনো বলবৎ থাকে।
‘অপারেশন ইগলের’—চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পর জেনারেল উবান এসএফএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাছাকাছি মিজোরাম সীমান্তে স্থানান্তর শুরু করেন। তাদের আকাশ ও স্থল পথে সেখানে নেওয়া হয়। এই অপারেশনের জন্য উবান সদর দপ্তর হিসেবে ডেমাগিরিকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারপাড়া, বর্ণপানসুড়ি এবং জারুলছড়িতে এসএফএফের তিনটি কলামের মূল ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন।
এসএফএফ ভারতের মূল বাহিনী থেকে আলাদাভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেছে। অনেককে দিনের পর দিন কেবল নদীর মাছ ধরে বাঁচতে হয়। কারণ, হেলিকপ্টারে খাদ্য সরবরাহ যথাসময়ে আসতে পারত না এবং তাদের খাবার প্রায়ই শেষ হয়ে যেত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, এসএফএফ বাহিনী আধপেটা অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে সেগুলি দখল করে নিয়েছে। এই বিষয়টি কেবল ভারতীয় কমান্ডারদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেনি বরং দখলকৃত পাকিস্তানি অবস্থানগুলো এসএফএফকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রেশনও প্রদান করেছিল। এসএফএফের সাফল্যের ফলেই সুজান সিং উবান একসময় রাঙামাটি শহর ঘেরাও করতে সক্ষম হন। এই শহর পাকিস্তান সেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল। অবশেষে উবানের বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক নাগরিক অভ্যর্থনা পায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহর ত্যাগ করার সময় প্রচুর জ্বালানি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে যায়।
এসএফএফ যখন দোহাজারী ব্রিজ ধ্বংস করে এবং সাংগু নদী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর পাকিস্তানি বাহিনীর বার্মায় আরাকান সড়ক দিয়ে পালানোর সম্ভব ছিল না। মেজর জেনারেল উবানের মতে, এটি ছিল একটি প্রধান কারণ—যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীকে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।
যুদ্ধ শেষে অপারেশন ইগলে অংশ নেওয়া এসএফএফ কর্মকর্তাদের ২৯টি পদক দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার যেসব এসএফএফের সঙ্গে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ছয়জনকে বীরচক্র, পাঁচ জনক ‘বিশিষ্ট সেবা’, পাঁচজনকে ‘সেনা’ পদক, একজনকে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা’ পদক এবং একজনকে ‘অতি বিশিষ্ট সেবা’ পদক দেওয়া হয়। আর ১১ জনের নাম অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এসএফএফের তিব্বতি জওয়ানরা গোপন বাহিনী হিসেবে পরিচিত থাকায় কোনো বীরত্বসূচক পদক পাননি। এক হিসাব অনুসারে, অপারেশন ইগলে ৫৬ জন তিব্বতি নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছিলেন। ৫ শতাধিক তিব্বতি সেনা কেবল নগদ পুরস্কার পেয়ে ছিলেন যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চক্রাতায় এক স্মৃতিস্তম্ভে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার নাম খোদাই করা রয়েছে।
লেখক: মান আমান সিং ছিনা। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সহকারী সম্পাদক। তিনি প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেন। মান আমান সিং ছিনা সামরিক ইতিহাস এবং পাঞ্জাব রাজনীতির সম্পর্কিত বিষয়েও লেখেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুদ্ধ নিয়ে ‘সেভেন হিরোজ অব ১৯৭১’—নামে একটি বই লিখেছেন।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান
উপসচিব পুলের কোটা নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ভাবনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে বিরোধ ক্রমেই জটিল হচ্ছে। একত্র হওয়া ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কলমবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণার পাল্টা হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারও পুরোদমে মাঠে নেমেছে। গতকাল রোববার প্রশাসন ক্যাডারের কয়েক শ কর্মকর্তা...
২ ঘণ্টা আগেঅবশেষে ডোপ টেস্টের (শরীরে মাদকের উপস্থিতি শনাক্তকরণ পরীক্ষা) খসড়া বিধিমালা তৈরি হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এটি তৈরি করে অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর সেখান থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গেজেট জারি করবে।
৩ ঘণ্টা আগেকক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত পাঁচ বছরে দুই শতাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের ৫৬ দশমিক ৪৩ শতাংশই হয়েছে মিয়ানমারের নিষিদ্ধ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হাতে। গত ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা কর্তৃক ১১৪টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বাহিনীর আর্মড...
৩ ঘণ্টা আগেকেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ডাকাতির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লিয়ন মোল্লা নীরব নামের যে যুবক, তিনি সৌদিপ্রবাসী এক নারীর স্বামী। স্ত্রীর পাঠানো রেমিট্যান্স তোলার কথা বলে নীরব ও তাঁর সহযোগীরা ব্যাংকটিতে ঢোকেন।
৪ ঘণ্টা আগে