জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে হবে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খামার বাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ আয়োজিত ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ের ওপর কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের সামনে মিথ্যায় ভরা তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। ইতিহাস নিজের গতিতে চলে। নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস জেনে কারা বঙ্গবন্ধুর ঘাতক ছিল, কারা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, এসব বিষয় জেনে তারা তাদের বিচার বুদ্ধি দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হবে।’ 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে হবে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা করে যাচ্ছেন তা জানতে হবে।’ 

ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, তাঁর ত্যাগের কথা জানতে হবে, দেশের জন্য, মানুষের জন্য ভালোবাসার কথা জানতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলেছেন। যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আজ তারা এখানে উপস্থিত। তোমাদেরকে জানতে হবে প্রধানমন্ত্রী দেশকে কোন পর্যায় থেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন।’ 

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদেরকে স্বাধীনতার জন্য হাজার বছর ধরে লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অপমানের ক্ষত নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে একজন বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে হাজার বছরের ক্ষত থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের মুক্তিদাতা, ত্রাণকর্তা। তিনি আমাদেরকে স্বল্প সময়ে একটি পতাকা, একটি দেশ, একটি মানচিত্র উপহার দিয়েছেন।’ 

আইজিপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ, আত্মমর্যাদাশীল জাতির জন্য লড়াই করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আজ আমরা দারিদ্র্য জয়ের দ্বার প্রান্তে। আজ অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, এসডিজি অর্জন এমন কোন সামাজিক দিক নেই যেখানে আমরা আলোচিত হচ্ছি না। এটা সম্ভব হয়েছে কারণ বঙ্গবন্ধু দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন।’ 

আইজিপি বলেন, ‘আগামী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে যত বেশি চর্চা করবে আমাদের পারস্পরিক ঐক্য ও দেশপ্রেম তত বেশি সুদৃঢ় হবে। আর যত বেশি পারস্পরিক ঐক্য ও দেশপ্রেম সুদৃঢ় হবে দেশ তত এগিয়ে যাবে। পরিবর্তনের জন্য বেশি মানুষের প্রয়োজন হয় না। যে দশ হাজার শিক্ষার্থী কুইজে অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্য থেকে দশ জন বের হয়ে আসলেই দেশ বদলাতে পারবে।’ 

পুলিশ প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ আজ মর্যাদার আসনে রয়েছে। জনগণের সম্মানের জায়গাটা তারা অর্জন করতে পেরেছে।’ 

‘এসো বই পড়ি, পুরস্কার জিতি’ স্লোগানে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ের ওপর কুইজ প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দশ হাজার ৮০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১০০ তে ১০০ নম্বর পেয়েছে ৪৩৯ জন। এ ৪৩৯ জনকেই পুরস্কৃত করা হয়েছে। এর মধ্যে  লটারির মাধ্যমে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ জন এবং একাদশ থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ে ১০ জন নির্বাচিত করা হয়। 

তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।