‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অসম্মানজনক: পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২২, ০৯: ৫৩
Thumbnail image

‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার না করে সংবিধানসম্মত শব্দ চয়ন করার জন্য গত ৯ আগস্ট তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। এই পরিপত্রকে ‘অসম্মানজনক’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি। 

আজ সোমবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পরিপত্রের প্রতিবাদ জানানো হয়। সংগঠনটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই পরিপত্রকে ‘অসম্মানজনক’ বলে উল্লেখ করা হয়। 

জারি করা ওই পরিপত্রকেই ‘সংবিধান পরিপন্থী’ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের এই পরিপত্র জারির মাধ্যমে সংবিধান স্বীকৃত বাক্‌স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে। বাংলাদেশ একটি বহু জাতি, ধর্ম ও সংস্কৃতির দেশ। এই বৈচিত্র্যকে ধারণ করে আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সম্মানজনকভাবে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছি। পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় এই বিষয়ে যথাযথভাবে মীমাংসার সুযোগ থাকলেও আদিবাসীদের দাবি উপেক্ষা করে “উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়” শব্দগুচ্ছ সন্নিবেশ করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয়ের টিভি-২ শাখার উপসচিব শেখ শামছুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন ছোট ছোট সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীকে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা নৃগোষ্ঠী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত টক-শোতে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষজ্ঞ এবং সংবাদপত্রের সম্পাদকসহ সুশীল সমাজের অন্য ব্যক্তিদের বাংলাদেশের ক্ষেত্রে “আদিবাসী” শব্দটি ব্যবহার না করার বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে প্রচারের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ 

এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার গণমাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটিের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী একটি অপমানজনক শব্দ। ক্ষুদ্র বলার মধ্য দিয়ে সেই জাতিগোষ্ঠীর লোকজনকে চরমভাবে হেয় করা হয়, যা সংবিধান পরিপন্থী। সংখ্যায় কম হোক কিংবা বেশি হোক, কোনো জাতিগোষ্ঠী কখনো ক্ষুদ্র বা বৃহৎ হিসেবে পরিচিত হতে পারে না। কোন জাতিগোষ্ঠী কী নামে পরিচিত হতে চায়, সেটা আইন দিয়ে নির্ধারণ করা যায় না।’ 

এতে আরও বলা হয়, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের মাধ্যমে ‘আদিবাসী’ শব্দ টক-শো কিংবা মিডিয়ায় ব্যবহার না করার নির্দেশনা প্রদান অবান্তর। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের এই সংবিধান পরিপন্থী ও অপমানজনক পরিপত্র প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বহুত্ববাদের বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের আদিবাসীদের মর্যাদাপূর্ণভাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানাচ্ছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত