জুনে আক্রান্তের ৭৮%–ই ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২১, ২০: ৫৯

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট। ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) দেখেছে, দেশে বর্তমান কোভিড-১৯ সংক্রমণে ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টের সুস্পষ্ট প্রাধান্য রয়েছে। এমনকি গত জুন মাসে আক্রান্তের ৭৮ শতাংশই ছিল এ ভ্যারিয়েন্ট। 

কভিড–১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোববার আইইডিসিআরের হালনাগাদ প্রতিবেদনের ১২ তম সংখ্যায় এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। 

করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.৬১৭। গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম করোনার এই ধরন শনাক্ত হয়। এরপর থেকে যুক্তরাজ্যে এখন ৯০ শতাংশ সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধরন। 

সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটি পরিবর্তিত হয়ে নতুন চেহারা ও বৈশিষ্ট্য ধারণ করছে। এটিই ভ্যারিয়েন্ট। আলফা, বিটা, গামা ও ডেলটা এই তিনটি প্রধান ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। 

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তে যৌথভাবে কাজ করছে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবি এবং আইদেশী। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মোট ৬৪৬টি কোভিড-১৯ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে এ তিনটি প্রতিষ্ঠান। 

আইডিসিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংগৃহীত নমুনায় কোভিড-১৯–এর আলফা ভ্যারিয়েন্ট (যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত), বিটা ভ্যারিয়েন্ট (দক্ষিণ আফ্রিকাতে প্রথম শনাক্ত), ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট (ভারতে প্রথম শনাক্ত), ইটা ভ্যারিয়েন্ট (নাইজেরিয়াতে প্রথম শনাক্ত), বি ১.১. ৬১৮ ভ্যারিয়েন্ট (আন আইডেন্টিফায়েড) শনাক্ত করা হয়েছে। 

দেশে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিকোয়েন্সকৃত সব নমুনায় আলফা ভ্যরিয়েন্ট পাওয়া গেছে। মার্চ মাসের সিকোয়েন্সকৃত নমুনার ৮২ শতাংশ নমুনায় বিটা ভ্যারিয়েন্ট ও ১৭ শতাংশ নমুনায় আলফা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। 

এপ্রিল মাসেও দেশে সংক্রমিতদের মধ্যে বিটা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য ছিল। এপ্রিলে দেশে প্রথম ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের হার বাড়তে থাকে। এ ভ্যারিয়েন্ট মে মাসে ৪৫ শতাংশ ও জুন মাসে ৭৮ শতাংশ নমুনায় শনাক্ত হয়। বর্তমান সংক্রমণে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য সুস্পষ্ট।

আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় একদিনে এটি সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। একই সময় এ ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৬১ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৬৫ আর আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭। এর আগে গত ১ জুলাই ১৪৩ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত