কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
ভোট চুরি করলে দেশের মানুষ ধরিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে দেশের মানুষ তার ভোটটা চুরি করলে সে ঠিকই ধরে দেয়। যার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একটি নির্বাচন করেছিল। সেখানে কিন্তু সারা দেশের প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সবাইকে নামিয়ে দিয়ে নির্বাচন করে। কিন্তু সেখানে ভোটার যায়নি। তারপরও সিল মেরে বাক্স ভরে ২২ শতাংশের ওপরে ভোট হয় নাই। জনগণ কিন্তু তখন ওই নির্বাচন মেনে নেয়নি। তারা ভোট চুরি করেছিল। যে কারণে আন্দোলন হয়। এই আন্দোলনের মুখে ’৯৬ সালের ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে নাকে খত দিয়ে বিদায় নিতে হয়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘গত নির্বাচনে (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) অনেক বাধাবিপত্তি ছিল, অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ছিল। কোনোমতে নির্বাচন যেন না হয়, না হতে পারে—এটাই ছিল আসল চক্রান্ত। অথচ একটা গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয় না। এটা আমাদের দেশের জন্য প্রমাণিত সত্য।’
আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ দেশের উন্নয়ন করেনি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ’৭২ সাল থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত তিন বছর সাত মাস তিন দিন ক্ষমতায় থেকে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে রেখে যান একটি স্বল্পোন্নত দেশে। এরপর যারা ক্ষমতায় এসেছিল প্রথমে ২১ বছর, পরে প্রায় আট বছর। তারা দেশের কোনো উন্নতি করেনি। দেশের উন্নতি তখনই হয়েছে, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে।’
২০০৮ সালের পর থেকেই বিএনপি আর ইলেকশনে আসতে চায় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলাসহ নানা কারণে জনগণ তাদের ওপর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। যার জন্য ইমার্জেন্সি আসে। সেই জঙ্গিবাদ বাংলা ভাই সৃষ্টি করে মানুষের শান্তি কেড়ে নিয়েছিল। এরপর ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়। এককভাবে আওয়ামী লীগ ২৩৩টি সিট পেয়েছিল। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৩টি সিট। তখন থেকেই তারা ইলেকশনে আসতে চায় না। ইলেকশন আসলেই বানচাল করতে চায়। তাই আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই আপনারা তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন।’
এবার জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পেরেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পেরেছে। সত্যি কথা বলতে কী, বাংলাদেশে ’৭৫-এর পরে যে কয়টা নির্বাচন হয়েছে, সেখানে কিন্তু জনগণের কোনো ভোট ছিল না। মিলিটারি ডিক্টেটর এসেছে, তারা ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা থেকে শুরু করে উন্নয়ন করেছে। আমরা শুধু তেলে মাথায় তেল দিইনি, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীরও উন্নয়ন করেছি। দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান সমৃদ্ধিশালী হয়, সে জন্য কাজ করেছি। যার কারণে বিএনপি যতবার নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি।’
বিএনপি গণতন্ত্রের ‘গ’ বোঝে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা (বিএনপি) এখন আন্দোলন করে গণতন্ত্রের জন্য, যারা গণতন্ত্রের “গ” ও বোঝে না। গণতন্ত্র বানানও করতে পারবে না। তাদের আন্দোলন হচ্ছে জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা। বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, লঞ্চে আগুন, রেলে আগুন। তারা ’১৩ সালে করেছে, ’১৪ সালে করেছে, আবার এই নির্বাচনের আগে ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষদের পুড়িয়ে মেরেছে। এমনভাবে পুড়িয়েছে যে মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এই দৃশ্য কোনো মানুষ সহ্য করতে পারে না। যে কারণে তারা যতই চিৎকার-চেঁচামেচি করুক, তাদের কথায় জনগণ সাড়া দেয়নি। যারা মানুষদের পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের কোনো ছাড় নাই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেব। যারা এসব কাজ করেছে, তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দেশের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারাটা জীবন কষ্ট করে, সংগ্রাম করে এবং তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দেশ স্বাধীন করেছে। সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশের জন্য তাঁর জীবনটা উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। জীবন দিয়ে গেছেন আমার মা, আমার ভাই, আমার স্বজন। আজকের এই দিনে আমি জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমি শ্রদ্ধা জানাই আমার মা, আমার তিন ভাইসহ আত্মীয়স্বজন যারা ১৫ আগস্টে শহীদ হয়েছেন। আমি শ্রদ্ধা জানাই ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনকে। যাদের মহান আত্মত্যাগ আমাদের মহান বিজয় এনে দিয়েছে।’
’৭৫-এর সময় বিদেশে কাটানো সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘রেহানা ও আমি জার্মানিতে ছিলাম। মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে যাই। তারপর আমাদের জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। ১৫ আগস্ট, ’৭৫ সাল, একদিন শুনলাম আমাদের বাবা, মা, ভাই কেউ নেই। দেশেও আসতে পারি নাই। এমন কী জিয়াউর রহমান রেহানার পাসপোর্টটাও দেয় নাই। পাসপোর্টের সময় শেষ হয়ে গেছে, আর পাই নাই। বিদেশের মাটিতে আশ্রয় নিয়ে আমরা রিফিউজি হিসেবেই ছিলাম।’
দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছেন জানিয়ে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। ছেলে-মেয়ে রেখে আমি আসি আপনাদের মাঝে। আপনারাই আমাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। যে কারণে আমি বারবার জয়ী হতে পেরেছি। আমি জয়ী হয়ে এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের একটাই লক্ষ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল; দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, এ দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া—সেই লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি।’
দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, ব্রিজ যেগুলো বাকি আছে, আমরা সেগুলো করব। আমরা দেশের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখব। দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ শহরের নাগরিক সুবিধা পাবে। আমার গ্রাম আমার শহর সেভাবেই আমরা প্রতিটি গ্রামকে গড়ে তুলব। যেন কোনো মানুষের কষ্ট না হয়।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সামনে দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের দেশের মাটি উর্বর, আমাদের মানুষ আছে, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। জমি চাষ করা থেকে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালনের মধ্যে দিয়ে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশেও জিনিসের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশের মানুষের খাবারের যেন কোনো অভাব না হয়, সেটি আমাদের নিজেদের করতে হবে।’
নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়াবাসী আমার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে আপনারই আমার নির্বাচন করেছেন। আপনাদের ভোটে জয়ী হয়ে আজকে আমি বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। এখানে উপস্থিতসহ কোটালীপাড়াবাসী যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন, সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আজকে আমি আপনাদের ভোটে বারবার নির্বাচিত হয়েছি। আমার নির্বাচনী আসন নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। আমার সমস্ত দায়ভার আপনারাই তো নিয়ে নিয়েছেন। আপনারাই তো আমার সেই হারানো বাবা, মা, ভাইয়ের স্নেহ দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন। আমি আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদ চাই। আপনাদের প্রতি আমার ভালোবাসা রইল।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোট চুরি করলে দেশের মানুষ ধরিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে দেশের মানুষ তার ভোটটা চুরি করলে সে ঠিকই ধরে দেয়। যার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একটি নির্বাচন করেছিল। সেখানে কিন্তু সারা দেশের প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সবাইকে নামিয়ে দিয়ে নির্বাচন করে। কিন্তু সেখানে ভোটার যায়নি। তারপরও সিল মেরে বাক্স ভরে ২২ শতাংশের ওপরে ভোট হয় নাই। জনগণ কিন্তু তখন ওই নির্বাচন মেনে নেয়নি। তারা ভোট চুরি করেছিল। যে কারণে আন্দোলন হয়। এই আন্দোলনের মুখে ’৯৬ সালের ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে নাকে খত দিয়ে বিদায় নিতে হয়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘গত নির্বাচনে (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) অনেক বাধাবিপত্তি ছিল, অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ছিল। কোনোমতে নির্বাচন যেন না হয়, না হতে পারে—এটাই ছিল আসল চক্রান্ত। অথচ একটা গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয় না। এটা আমাদের দেশের জন্য প্রমাণিত সত্য।’
আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ দেশের উন্নয়ন করেনি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ’৭২ সাল থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত তিন বছর সাত মাস তিন দিন ক্ষমতায় থেকে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে রেখে যান একটি স্বল্পোন্নত দেশে। এরপর যারা ক্ষমতায় এসেছিল প্রথমে ২১ বছর, পরে প্রায় আট বছর। তারা দেশের কোনো উন্নতি করেনি। দেশের উন্নতি তখনই হয়েছে, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে।’
২০০৮ সালের পর থেকেই বিএনপি আর ইলেকশনে আসতে চায় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলাসহ নানা কারণে জনগণ তাদের ওপর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। যার জন্য ইমার্জেন্সি আসে। সেই জঙ্গিবাদ বাংলা ভাই সৃষ্টি করে মানুষের শান্তি কেড়ে নিয়েছিল। এরপর ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়। এককভাবে আওয়ামী লীগ ২৩৩টি সিট পেয়েছিল। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৩টি সিট। তখন থেকেই তারা ইলেকশনে আসতে চায় না। ইলেকশন আসলেই বানচাল করতে চায়। তাই আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই আপনারা তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন।’
এবার জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পেরেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পেরেছে। সত্যি কথা বলতে কী, বাংলাদেশে ’৭৫-এর পরে যে কয়টা নির্বাচন হয়েছে, সেখানে কিন্তু জনগণের কোনো ভোট ছিল না। মিলিটারি ডিক্টেটর এসেছে, তারা ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা থেকে শুরু করে উন্নয়ন করেছে। আমরা শুধু তেলে মাথায় তেল দিইনি, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীরও উন্নয়ন করেছি। দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান সমৃদ্ধিশালী হয়, সে জন্য কাজ করেছি। যার কারণে বিএনপি যতবার নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি।’
বিএনপি গণতন্ত্রের ‘গ’ বোঝে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা (বিএনপি) এখন আন্দোলন করে গণতন্ত্রের জন্য, যারা গণতন্ত্রের “গ” ও বোঝে না। গণতন্ত্র বানানও করতে পারবে না। তাদের আন্দোলন হচ্ছে জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা। বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, লঞ্চে আগুন, রেলে আগুন। তারা ’১৩ সালে করেছে, ’১৪ সালে করেছে, আবার এই নির্বাচনের আগে ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষদের পুড়িয়ে মেরেছে। এমনভাবে পুড়িয়েছে যে মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এই দৃশ্য কোনো মানুষ সহ্য করতে পারে না। যে কারণে তারা যতই চিৎকার-চেঁচামেচি করুক, তাদের কথায় জনগণ সাড়া দেয়নি। যারা মানুষদের পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের কোনো ছাড় নাই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেব। যারা এসব কাজ করেছে, তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দেশের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারাটা জীবন কষ্ট করে, সংগ্রাম করে এবং তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দেশ স্বাধীন করেছে। সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশের জন্য তাঁর জীবনটা উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। জীবন দিয়ে গেছেন আমার মা, আমার ভাই, আমার স্বজন। আজকের এই দিনে আমি জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমি শ্রদ্ধা জানাই আমার মা, আমার তিন ভাইসহ আত্মীয়স্বজন যারা ১৫ আগস্টে শহীদ হয়েছেন। আমি শ্রদ্ধা জানাই ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনকে। যাদের মহান আত্মত্যাগ আমাদের মহান বিজয় এনে দিয়েছে।’
’৭৫-এর সময় বিদেশে কাটানো সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘রেহানা ও আমি জার্মানিতে ছিলাম। মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে যাই। তারপর আমাদের জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। ১৫ আগস্ট, ’৭৫ সাল, একদিন শুনলাম আমাদের বাবা, মা, ভাই কেউ নেই। দেশেও আসতে পারি নাই। এমন কী জিয়াউর রহমান রেহানার পাসপোর্টটাও দেয় নাই। পাসপোর্টের সময় শেষ হয়ে গেছে, আর পাই নাই। বিদেশের মাটিতে আশ্রয় নিয়ে আমরা রিফিউজি হিসেবেই ছিলাম।’
দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছেন জানিয়ে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘’৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। ছেলে-মেয়ে রেখে আমি আসি আপনাদের মাঝে। আপনারাই আমাকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। যে কারণে আমি বারবার জয়ী হতে পেরেছি। আমি জয়ী হয়ে এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের একটাই লক্ষ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল; দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, এ দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া—সেই লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি।’
দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, ব্রিজ যেগুলো বাকি আছে, আমরা সেগুলো করব। আমরা দেশের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখব। দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ শহরের নাগরিক সুবিধা পাবে। আমার গ্রাম আমার শহর সেভাবেই আমরা প্রতিটি গ্রামকে গড়ে তুলব। যেন কোনো মানুষের কষ্ট না হয়।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সামনে দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের দেশের মাটি উর্বর, আমাদের মানুষ আছে, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। জমি চাষ করা থেকে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালনের মধ্যে দিয়ে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশেও জিনিসের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশের মানুষের খাবারের যেন কোনো অভাব না হয়, সেটি আমাদের নিজেদের করতে হবে।’
নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়াবাসী আমার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে আপনারই আমার নির্বাচন করেছেন। আপনাদের ভোটে জয়ী হয়ে আজকে আমি বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। এখানে উপস্থিতসহ কোটালীপাড়াবাসী যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন, সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আজকে আমি আপনাদের ভোটে বারবার নির্বাচিত হয়েছি। আমার নির্বাচনী আসন নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। আমার সমস্ত দায়ভার আপনারাই তো নিয়ে নিয়েছেন। আপনারাই তো আমার সেই হারানো বাবা, মা, ভাইয়ের স্নেহ দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন। আমি আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদ চাই। আপনাদের প্রতি আমার ভালোবাসা রইল।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন (জেআরসি) বিচার বিভাগের প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে অংশীজনদের মতামত গ্রহণের জন্য একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে। ২৩ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সাধারণ জনগণসহ বিচারক, আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্ট সহায়ক কর্মচারীদের কাছে মতামত চেয়েছে কমি
৭ ঘণ্টা আগেফৌজদারি মামলায় কোনো আসামি আদালত থেকে অব্যাহতি পেলেও তিনি পুরোপুরি বিপদমুক্ত হন না। তার বিপদ কিছুটা থেকেই যায়। তবে ফৌজদারি মামলায় চার্জ গঠনের পর খালাস পেলে আসামি বিপদমুক্ত হন। একটি ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়রা আদালত।
৯ ঘণ্টা আগেঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক রাজনীতি ও মানবাধিকারের ওপর প্রভাব ফেলবে।
৯ ঘণ্টা আগেনবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলাগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না। নিরীহ কারও নামে মামলা হলেও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১০ ঘণ্টা আগে