আরব আমিরাতে যাত্রী পাঠানোর জটিলতা কাটছেই না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

করোনাভাইরাস শনাক্তে আরব আমিরাতের শর্ত মেনে বিমানবন্দরে ছয়টি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছে। এসব ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ফলাফল এবং এসওপি পাঠানো হয়েছে দেশটিতে। কিন্তু এখনো ল্যাবগুলো অনুমোদন দেয়নি তারা। ফলে বাংলাদেশ থেকে আরব আমিরাতে যাত্রী পাঠানো যাচ্ছে না।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, 'ইউএই সরকারের শর্ত ছিল যে সংস্থাগুলোকে (পিসিএর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার জন্য) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্বাচিত করেছে তাদের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরটা (এসওপি) তাদের অবহিত করতে হবে, এরপর তারা অনুমোদন দেবে। এ কারণে আমরা দু-সপ্তাহ আগে এসওপি পাঠিয়েছি। আমরা পারসিউ করে যাচ্ছি।'

চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'এর মধ্যে আমরা দুটি টেস্ট ফ্লাইটও (আরব আমিরাতে) পাঠিয়েছি। এটা তাদেরই চাহিদা ছিল। তাদের নির্ধারিত একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে পিসিআর পরীক্ষা করতে বলেছিল, আমরা সেটা করে পাঠিয়েছি। সেটা সাকসেসফুলও হয়েছে।'

বিমানবন্দরে স্থাপন করা ছয়টি ল্যাবের কোনোটিই আরব আমিরাত অনুমোদন দেয়নি জানিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ছয়টির এসওপি আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। আগে যে প্রতিষ্ঠানটি আমিরাত অনুমোদন দিয়েছে, তাদের যোগ্য মনে করেছে কারণ তাদের মোবাইল ভ্যান ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের চাহিদা বেশি। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করল এত যাত্রীর জন্য আরও প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার। তাই যাচাই-বাছাই করে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের এসওপি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলোর অনুমোদন আসেনি। তাদের প্রথম অনুমোদন দেওয়া ল্যাবের মাধ্যমে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কিছু যাত্রী পাঠিয়েছিলাম। আজকেও তারা একটা ফ্লাইট পাঠাতে চেয়েছিল। আমি তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এই ফ্লাইটটি বাতিল করেছি। বলেছি, আমাদের ছয়টির অনুমোদন না আসলে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে আর কোনো যাত্রী পাঠাব না। চাপ সৃষ্টি করছি যাতে তারা দ্রুত অনুমোদন দিয়ে দেয়।

বাংলাদেশ থেকে এখন যাত্রার ৭২ বা ৪৮ ঘণ্টা আগে পিসিআর পরীক্ষা করে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত উড্ডয়নের ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পিসিআর টেস্টের সনদ চেয়েছে। এরপর গত রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়।

মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে কেক কাটছেন বিমান প্রতিমন্ত্রীআরব আমিরাতের বাছাই করা প্রতিষ্ঠানের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করে যাত্রী না পাঠালে কিছুটা ভোগান্তি হবে বলে স্বীকার করেন বেবিচক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, কিন্তু আমরা আমাদের দেশের রিকয়্যারমেন্টের ফ্লাইট বাতিল করেছি। আমাদের পাঠানো এসওপি ওদের একটি কমিটি (ন্যাশনাল কমিটি ফর ক্রাইসিস অ্যান্ড ইমার্জেন্সি) অনুমোদন দেবে।

চাপ প্রয়োগের কারন হিসেবে চেয়ারম্যান বলেন, 'ছয়টি এসওপি তারা যাচাই-বাছাই করেছে। আমাদের মৌখিকভাবে জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। এটা একটা ফর্মালিটিজ মাত্র। সেই ফর্মালিটি ত্বরান্বিত করার জন্য তাদের উপর চাপও প্রয়োগ করছি। আমি এমিরেটস এয়ারলাইনসের এরিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যেভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ্রুভাল নিয়ে টেস্ট করছে, বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোরও অনুমোদন সেভাবে নিয়ে আসো। আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য শ্রমিক ভাইয়েরা যেন দ্রুত ওই দেশে যেতে পারে। ওদেরও রিকয়্যারমেন্ট আছে, দুবাই এক্সপো শুরু হয়েছে, ওদের প্রচুর লোক দরকার। কিন্তু আমতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমাদের কাজটি দেরি হয়ে যাচ্ছে। আশা করছি আজকে-কালকের মধ্যে সমাধান হবে।'

নিজের মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের কেক কাটার পর বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ল্যাব স্থাপন করে গত রোববার আরব আমিরাতে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। যেহেতু আমিরাত থেকে অ্যাপ্রুভাল আসেনি সেহেতু এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত