রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের ফিরতি সফরে ‘মোখা’ অজুহাত 

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ মে ২০২৩, ২০: ০৯
Thumbnail image

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দলের কক্সবাজারে ক্যাম্পগুলোয় ফিরতি সফরে আসার কথা ছিল চলতি মে মাসেই। ঘূর্ণিঝড় মোখার সতর্ক সংকেত পাওয়ার পর প্রথমে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের পরে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে গ্রহণের কথা জানায়। এখন ঘূর্ণিঝড়ের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির অজুহাতে প্রতিনিধি দল মিয়ানমার সফরে আসতে গড়িমসি করছে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা এ কথা জানান। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘সাইক্লোন মোখায় মিয়ানমারের রাখাইনে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল ঠিক কবে আসবে বা প্রত্যাবাসন কবে শুরু হবে তার তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।’
 
শিগগিরই এই তারিখ নির্ধারিত হবে বলে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান। 

সেহেলী সাবরীন বলেন, গত ৫ মে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধিদল এবং প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচের অন্তর্ভুক্ত ২০ জন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যের মংডু সফর করেন। সরেজমিন রাখাইন সফর শেষে ফিরে এসে রোহিঙ্গারা যে সকল অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছেন তা ইতিমধ্যে মিয়ানমারকে জানানো হয়েছে।
 
প্রত্যাবাসনের জন্য নির্বাচিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনার জন্য মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল মে মাসে বা তার নিকটবর্তী সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফর করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

আবহাওয়া বিভাগ ঘূর্ণিঝড় মোখার জন্য কক্সবাজার জেলায় ১০ নম্বর সতর্ক সংকেত ঘোষণা করেছিল। গত রোববার এই ঝড় আঘাত হানে। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের সম্ভাব্য সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার থেকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও ভূমিধসের আশঙ্কা থাকায় ঝড়ের পর মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে চেয়েছে বাংলাদেশ। 
এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করে দেশটির প্রতিনিধিদলের ফিরতি সফরের তারিখ চূড়ান্ত করবে। 

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রায় ১০ লাখ মানুষ বর্তমানে কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয়ে আছে। তাদের নিজ বাসভূমে ফিরতে ২০১৭ সালে নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিও হয়। এই চুক্তির আওতায় দুই দফা তাদের ফেরানোর উদ্যোগ ভেস্তে যায়। 

সম্প্রতি চীনের মধ্যস্থতায় অন্তত পরীক্ষামূলকভাবে হলেও কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরাতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হয় বাংলাদেশ। তবে এই ফেরা কবে নাগাদ শুরু হবে, কিংবা আদৌ শুরু হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। 

মিয়ানমারকে বিশ্বাস করা কঠিন, এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ফেরা কখন শুরু হবে, হবে। এ নিয়ে অপেক্ষা করা ছাড়া খুব বেশি কিছু করার আছে বলে মনে হচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত