মেয়াদ পূর্ণ করতে চান ইউপি চেয়ারম্যানরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ২৩: ৩৬
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০: ৪৮

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হতে পারে—এমন খবরে বিচলিত চেয়ারম্যানরা। ইউপি চেয়ারম্যানদের বেশির ভাগই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তাই তাঁরা পুরো মেয়াদ দায়িত্ব পালন করতে চান। আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে হোটেল ইম্পেরিয়ালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে আলাপ আলোচনা শুনছি, চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হতে পারে। এতে আমরা বিচলিত। 

আমজাদ হোসাইন বলেন, আমরা ১ হাজার ২৩ জন চেয়ারম্যানের মধ্যে বেশির ভাগ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান। এই সংখ্যা ৬৫ শতাংশ। আর নৌকার অল্প কিছু থাকলেও দেশের অন্য সব দলের চেয়ারম্যানও রয়েছে। তাই, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বাদ দেওয়া অন্যায় হবে। এমন ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসের আর কখনো ঘটেনি।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা, স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের সহযোগী এবং প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে কাজ করেন ইউপি চেয়ারম্যানেরা। যদি পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয় বা চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হয়, তাহলে প্রান্তিক পর্যায়ে জনগণকে সরকারি সেবা দেওয়ার কাজ ব্যাহত হবে। চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে গ্রামগঞ্জে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের প্রবণতা বেড়ে যাবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে পারে।

মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী বলেন, আমরা তৃণমূলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। ৬৫ শতাংশ চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত। দলমত-নির্বিশেষে মানুষকে সমানভাবে সেবা প্রদান করে আসছি। বর্তমান সরকারের সহযোগী হিসেবে প্রতিদিন অফিস করছি, যাতে জনসাধারণের সেবা প্রদান ব্যাহত না হয়।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে চলে যান। এ অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে কাজ চালাতে আইন সংশোধন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর আগস্টের মধ্যভাগে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে প্রশাসক বসানো হয়। এখন সেসব পরিষদ ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবদলের গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম আর মুজিব বলেন, আমি জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের যদি দায়িত্ব সম্পন্ন করতে না দেওয়া হয়, এটা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। এখানে সব দলেরই চেয়ারম্যান রয়েছে। 

নরসিংদী সদরের মহিষাশুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাওছার আহমাদ ভূঁইয়া বলেন, দেশের জন্য, গ্রামের মানুষের সেবার জন্য হলেও চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া উচিত। একপাক্ষিকভাবে অপসারণ অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত হবে, বৈষম্যমূলক হবে। 

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন খন্দকার বলেন, বিগত সরকারের সময়ে অনেক সচিব নিয়োগ পেয়েছে। সেসব সচিবদের বিলুপ্ত না করে আমাদের করলে অন্যায় হবে। আগে সচিবদের বিলুপ্ত করুন। 

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আবুল খায়ের বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের অপসারণ করলে প্রান্তিক পর্যায়ে ভিজিএফ ও ভিডব্লিউডির চাল বিতরণ, টিসিবি পণ্য বিক্রি, কৃষি ও মৎস প্রণোদনা বিতরণ, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের মতো সেবা প্রদান ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, ওয়ারিশান, চারিত্রিক, নাগরিক, জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যুনিবন্ধনের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই হয়। প্রান্তিক পর্যায়ে রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেই হয়।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার আওতাধীন খেদারমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্টু চাকমা বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হলে পাহাড়ে একটা অশান্তি হওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা চেয়ারম্যানরা পাহাড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করি। কোনো সমস্যা তৈরি হলে সেখানে সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান করি। কিন্তু চেয়ারম্যানরা না থাকলে এই সমন্বয়টা হবে না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত