গণভবনে ১৪ দলের বৈঠকে ডিবিপ্রধান হারুনের কঠোর সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২: ৫১
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৪, ১৪: ৪৩

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে খাবার গ্রহণের ছবি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, হারুনের কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেছেন হাইকোর্ট, যা দেশে-বিদেশে সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন আজকের পত্রিকা’কে বলেন, হারুনের কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হলো, আমলা দিয়ে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হয় না। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনীতিবিদদের দিয়েই করতে হয়। 

নিরাপত্তার অজুহাতে কোটা আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়। ডিবি হেফাজতে থাকার সময় গত রোববার রাতে তাঁরা ভিডিও বার্তায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। বক্তব্যে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। ভিডিওতে দেখা যায়, কম্পিউটারে টাইপ করা পত্র সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম পাঠ করেন। সেখানে ছয়জন সমন্বয়কের স্বাক্ষরও রয়েছে।

এর আগে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ এই সমন্বয়কদের সঙ্গে খাবার খাওয়ার ছবি তাঁর ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন।

পরে অন্য সমন্বয়কেরা দাবি করেন, হেফাজতে থাকা সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁরা আজ সোমবার সারা দেশে কর্মসূচি পালন করেন। 

এদিকে সমন্বয়কদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। আজ শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা টিভিতে দেখেছি, এই ছয়জন (সমন্বয়ক) ডিবিতে বসে কাঁটাচামচ দিয়ে খাচ্ছে।’ এ সময় হাইকোর্ট তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘এগুলো করতে কে বলেছে? কেন করবেন এগুলো? আপনারা জাতিরে লইয়া মশকরা কইরেন না। যাকে ধরে নেন একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’ 

বিষয়টি ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকেও আলোচনা হয়। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে রাশেদ খান মেনন ছাড়াও জাসদের সভাপতি হাসানুল ইনু, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারিসহ একাধিক নেতা কথা বলেন।

এক নেতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কি আজকে দেখছেন, হাইকোর্টে এ রকম দুঃসময়ে একটা মন্তব্য করেছেন, যা দেশ-বিদেশে খারাপ প্রভাব পড়েছে। এটা সরকারের বিরুদ্ধে গেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সমন্বয়কদের ধরলই-বা কেন? আবার ধরে ওদের খাওয়ায়ে মিডিয়ার প্রচার জাতির সঙ্গে মশকরা।’ জবাবে বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘হারুন সব সময় উল্টাপাল্টা কাজ করে। ওরে দ্রুতই বদলি করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

বৈঠক সূ‌ত্রে জানা গেছে, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ও বিবৃতি পরিস্থিতিকে উসকে দিয়েছে, তিনি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন রাশেদ খান মেনন।

মেনন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের যে চার মন্ত্রীকে সমানে আনা হয়েছে, তাঁদের না এনে রাজনীতিবিদদের সামনে আনা যেত। প্রয়োজন ১৪ দলীয় জোটের নেতাদেরও আনা যেত।

সূত্রে জানায়, পরে জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু বলেন, পরিস্থিতি যেভাবে ঘোলাটে হয়ে উঠেছে, ওই সময় ছাত্রলীগকে মাঠে নামানো হয়েছে। ছাত্রলীগের যেসব নেতা বাড়াবাড়ি করেছে তাদের বিষয়ে দেখা উচিত বলেও মত দেন ইনু।

আরও খবর পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত