কাউন্সিল সামনে রেখে বেফাককে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ৩৯
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ০৫

বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) ১১তম কাউন্সিল আগামী ৭ অক্টোবর শনিবার। এই কাউন্সিলের কার্যক্রম গোপনে পরিচালনাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি, মহাসচিব ও মহাপরিচালক বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সহসভাপতি এবং গাজীপুরের বরমি জামেয়া আনোয়ারিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা আশেকে মোস্তফার পক্ষে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ব্যারিস্টার আশিকুর রহমান।

মাওলানা আশেকে মোস্তফার পাঠানো নোটিশে বলা হয়, ‘আগামী ৭ অক্টোবর কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করলেও এজেন্ডা, আলোচ্য সূচি বা কার্যসূচি প্রকাশ করা হয়নি। কাউন্সিল অধিবেশনের কাউন্সিলরদের নামের তালিকা, মজলিসে আমেলা ও মজলিসে খাসের তালিকা, ভোটার তালিকা, নির্বাচনের বিস্তারিত তফসিল নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান, নিয়মকানুন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের গঠনতন্ত্র—কোনো কিছুই প্রকাশ না করে সব কার্যক্রম গোপনে করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি, গভীর ষড়যন্ত্রমূলক এবং অসৎ উদ্দেশ্যমূলক।’

নোটিশে কাউন্সিলের ভেন্যু পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে আরও বলা হয়, ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির (মাওলানা মাহমুদুল হাসান) নিজস্ব মাদ্রাসা জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় কাউন্সিল অধিবেশনের ভেন্যু নির্ধারণ করেছেন। যা আইনকানুন, বিধিবিধান, নীতি-নৈতিকতা, ন্যায়নীতি ও নিরপেক্ষতা নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এবং নির্বাচনকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস বিধায় এই ভেন্যু পরিবর্তন করে অন্য কোনো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে কাউন্সিল অধিবেশন হওয়া অত্যাবশ্যক।’

নোটিশে লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির দুই দিনের মধ্যে কাউন্সিল অধিবেশনের ভেন্যু পরিবর্তন করে প্রকাশ্যে লিখিত ঘোষণা প্রদান, আলোচ্য সূচি প্রকাশ, কাউন্সিলরদের নামের তালিকা, মজলিসে আমেলা মজলিসে খাসের তালিকা, ভোটার তালিকা প্রকাশ, নির্বাচনের বিস্তারিত তফসিল নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন, বিধিবিধান এবং গঠনতন্ত্র প্রকাশের আহ্বান জানানো হয়।

তবে গত ১ অক্টোবর নোটিশ পাঠানো হলেও এখনো এর জবাব পাননি বলে জানান মাওলানা আশেকে মোস্তফা। কাউন্সিলের নিজেদের মধ্যে পদ ভাগাভাগি করে নিতেই কোনো কিছু প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেহেতু ওনার (সভাপতি) মাদ্রাসায় কাউন্সিল করতেছে স্বাভাবিকভাবেই ওনার প্রভাব পড়তে পারে। তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে কাউন্সিল করতে চাইতেছে।’ জবাব না পেলে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো এক দিন বাকি আছে। এর মধ্যে উত্তর না দিলে মামলা করব।’

বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বা বেফাকুল মাদারিসিলি আরাবিয়াতে (বেফাক) সারা দেশের ২৫ হাজারের মতো মাদ্রাসা নিবন্ধিত রয়েছে। পাঁচ বছর অন্তর কাউন্সিলের মাধ্যমে বেফাকের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব নির্ধারণ হয়। সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ গত আট মাস আগে শেষ হয়। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে মাওলানা মাহফুজুল হক প্রতিষ্ঠানটিতে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের ওপর কাউন্সিল আয়োজনের দায়িত্ব থাকলেও নানা কারণ দেখিয়ে তাঁরা কাউন্সিল বিলম্বিত করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের সঙ্গে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তাঁরা কেউ রিসিভ করেননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত