কামরুল হাসান, ঢাকা
কারা প্রশাসনের মহাপরিদর্শক বা আইজি (প্রিজনস) ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। গণমাধ্যমবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে সাংবাদিকদের মধ্যে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। সেই কর্মকর্তা একদিন বিকেলে ফোন করে তক্ষুনি তাঁর দপ্তরে যেতে বললেন। গলার স্বর কিছুটা অস্বাভাবিক, ভয় পেলে মানুষ যেমন হয়।
এটা ছিল ২০১৬ সালের ১৮ জুন, শনিবার। সরকারি পদস্থ চাকুরেরা ছুটির দিনে সাধারণত ফোন পর্যন্ত ধরেন না, সেখানে তিনি অফিসে আছেন শুনে কিছুটা বিস্মিত হলাম। তা আরও বেড়ে গেল তাঁর কথা শোনার পর। তিনি বললেন, আজ তাঁকে ফোনে ভয় দেখানো হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, রীতিমতো ‘শেষ দেখে নেওয়া হবে’ বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
কে হুমকি দিয়েছেন? তিনি একটি ফোন নম্বর দেখিয়ে বললেন, এটার কোনো আইডি নেই। হুমকির পর ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য যেখানে যেখানে জানানোর দরকার, সবই তিনি করছেন। কিন্তু তাতেও তিনি আশ্বস্ত হতে না পেরে সাংবাদিক ডেকেছেন।
আমি তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, সম্প্রতি এ রকম কোনো বিষয় আছে কি, যার কারণে হুমকি আসতে পারে? তিনি বললেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা তিন শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস, খোরশেদ আলম রাসু ও পিচ্চি হেলালকে কাশিমপুর কারাগার থেকে যথাক্রমে যশোর কারাগার, কুমিল্লা কারাগার ও রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। এটা করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে। মন্ত্রীর কাছে খবর ছিল, রোজার ঈদ সামনে রেখে এই সন্ত্রাসীরা কারাগারে বসে চাঁদাবাজি করছেন। তাঁদের অন্য কারাগারে পাঠানোর পরই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি তাঁকে জানান, সন্ত্রাসীদের লোকজন তাঁকে শেষ দেখে নেবে।
এখন সহজ একটি প্রশ্ন উঠতে পারে, কারাগারের আসামিদের যেখানে খুশি পাঠানো হবে, তাতে হুমকির কী আছে? উত্তর হলো, আছে। ঢাকার কারাগারে বসে মৌচাকে যে মধু জমিয়েছিলেন তাঁরা, সেই চাকে ঢিল দিয়েছেন ইফতেখার উদ্দিন। ব্যাপারটা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, খোরশেদ আলম রাসুর কথা। ২০০২ সালের ২৯ মে থেকে তিনি কারাগারে। কিন্তু কারাগারে তিনি কি চুপচাপ বসে আছেন? মোটেই না, তাঁর নামে সবই হচ্ছে। সিদ্ধেশ্বরীর মৌচাক-আনারকলি মার্কেটের আশপাশে শত শত হকার বসানো, মার্কেটের ভেতরের জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করা, নিচে হকার বসানো—সবই হয় রাসুর নামে। বেইলি রোডের দুই পাশে ফুটপাতে যে হকার বসে, তার সিংহভাগই চলে যায় রাসুর কাছে। রাসুর বাড়িও মৌচাক মার্কেটের পেছনে। তাঁর নিজের ভাই এখন আনারকলি মার্কেটের নিয়ন্ত্রক। ঈদ এলে তাঁর চাঁদার পরিমাণ যে অনেক গুণ বেড়ে যায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
পাঠক, ‘আষাঢ়ে নয়’-এ এর আগে সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ও পিচ্চি হেলালকে নিয়ে কথা বলেছি। রাসু নিয়ে কখনো কিছু বলা হয়নি। আজ তাই রাসুতেই থাকি।
রাসুর সঙ্গে আমার কয়েকবার দেখাও হয়েছিল। তখন তিনি ছিলেন আনারকলি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তাঁর আগে সন্ত্রাসী লিয়াকত ছিলেন এই মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়, তাতে সুব্রত বাইনের পরেই রাসুর ক্রমিক ছিল ২। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ১৩টি মামলা ছিল, যেগুলোর মধ্যে ১১টি মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।
গোপালগঞ্জের বাসিন্দা খোরশেদ আলম রাসু ঢাকায় এসেছিলেন জহুরুল হক হলের ক্যানটিন বয় হয়ে। সেই পদে ছিলেনও কিছুকাল। হলে থেকে গোপনে পুলিশের কাছে ক্যাডারদের অস্ত্র লেনদেনের খবর পাচার করতেন। সেখানে থাকতে গিয়ে ’৯০-এর পর জাসদ ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সঙ্গে মিশে যান। তারপর ফারুক-রশিদদের ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে মিলে অস্ত্রবাজি শুরু করেন। তখন থেকে তাঁর নাম হয়ে যায় ফ্রিডম রাসু। কিন্তু ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে রাসুর সম্পর্ক খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কিছুদিন পর তিনি যুবদলে যোগ দেন। এর কারণও ছিল। ঠিক একই সময়ে যুবদলে যোগ দিয়েছিলেন বিমানবন্দরকেন্দ্রিক শীর্ষ সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। মূলত তাঁর হাত ধরেই যুবদলে আসেন ফ্রিডম রাসু। এ সময় পোস্তগোলার শাহাদত সিকদার, শীর্ষ সন্ত্রাসী জয়, মালিবাগের ইমাম ও গোসাইবাড়ীর মিজান ছিলেন রাসুর সঙ্গে।
যশোরে তখন চোরাচালান সিন্ডিকেটের নেতা মুশফিকুর রহমান হিরক ও আসাদুজ্জামান লিটুর নাম খুব শোনা যেত। হিরক পরে বিদেশে পালিয়ে আত্মগোপন করেন আর লিটু ক্রসফায়ারে মারা যান। এঁরা দুজনই যশোরের চারণ সাংবাদিক শামসুর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সে সময় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, রাসুর সঙ্গে এই দুই সীমান্ত সন্ত্রাসীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ঢাকায় এলে তারা রাসুর আশ্রয়ে থাকতেন।
রাসু কারাগারে যাওয়ার পরও তাঁর সিন্ডিকেট থেমে থাকেনি। ২০০৩ সালে আনারকলি মার্কেটের নেতা সিদ্ধেশ্বরীর মামুনকে রাসুর লোকেরা গুলি করে পঙ্গু করে। এরপর মার্কেটের দখল নেয় রাসুর লোকেরা। এখন পর্যন্ত তারাই মার্কেটের নিয়ন্ত্রক।
শেষ করার আগে রাসুকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটা বলি। ২০০২ সালের ২৮ মে ছিল মঙ্গলবার, সেদিন সন্ধ্যায় শোরগোল পড়ে গেল—রাসু গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমরা ছুটলাম ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে। সেখানে গিয়ে শুনলাম, সেই ক্লাব থেকে রাসুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখনকার ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। সেদিন সন্ধ্যায় ডিবির কার্যালয়ে বসেই পুলিশের উপস্থিতিতে রাসু আমাদের বললেন, তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের খবর ঠিক নয়। ধরা দেওয়ার আগে তিনি শর্ত দিয়েছিলেন, তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে হবে এবং রিমান্ডে আনা যাবে না। পুলিশ সেই শর্ত মেনে নেওয়ার পর তিনি আত্মসমর্পণে রাজি হন। রাসুর কথাই সত্যি হয়েছিল। তাঁকে ৫৪ ধারায় কারাগারে পাঠানো হয় এবং তাঁকে কখনো রিমান্ডে আনা হয়নি। এমনকি রাসুর বিরুদ্ধে থাকা কোনো মামলারও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।
আজ অনেক দিন পর মনে হলো, একজন সন্ত্রাসীর কাছে রাষ্ট্রযন্ত্র কীভাবে অসহায় হতে পারে, আমাদের জামানায় রাসু এর বড় উদাহরণ। এখনো শুনি, কাশিমপুর কারাগারে থেকে আদালতে যাওয়ার সময় রাসু নাকি পরিবারের লোকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎও করেন।
এ দেশে সবই সম্ভব হয়, সেটা শুধু রাসুদের জন্যই।
আরও পড়ুন:
কারা প্রশাসনের মহাপরিদর্শক বা আইজি (প্রিজনস) ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। গণমাধ্যমবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে সাংবাদিকদের মধ্যে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। সেই কর্মকর্তা একদিন বিকেলে ফোন করে তক্ষুনি তাঁর দপ্তরে যেতে বললেন। গলার স্বর কিছুটা অস্বাভাবিক, ভয় পেলে মানুষ যেমন হয়।
এটা ছিল ২০১৬ সালের ১৮ জুন, শনিবার। সরকারি পদস্থ চাকুরেরা ছুটির দিনে সাধারণত ফোন পর্যন্ত ধরেন না, সেখানে তিনি অফিসে আছেন শুনে কিছুটা বিস্মিত হলাম। তা আরও বেড়ে গেল তাঁর কথা শোনার পর। তিনি বললেন, আজ তাঁকে ফোনে ভয় দেখানো হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, রীতিমতো ‘শেষ দেখে নেওয়া হবে’ বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
কে হুমকি দিয়েছেন? তিনি একটি ফোন নম্বর দেখিয়ে বললেন, এটার কোনো আইডি নেই। হুমকির পর ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য যেখানে যেখানে জানানোর দরকার, সবই তিনি করছেন। কিন্তু তাতেও তিনি আশ্বস্ত হতে না পেরে সাংবাদিক ডেকেছেন।
আমি তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, সম্প্রতি এ রকম কোনো বিষয় আছে কি, যার কারণে হুমকি আসতে পারে? তিনি বললেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা তিন শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস, খোরশেদ আলম রাসু ও পিচ্চি হেলালকে কাশিমপুর কারাগার থেকে যথাক্রমে যশোর কারাগার, কুমিল্লা কারাগার ও রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। এটা করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে। মন্ত্রীর কাছে খবর ছিল, রোজার ঈদ সামনে রেখে এই সন্ত্রাসীরা কারাগারে বসে চাঁদাবাজি করছেন। তাঁদের অন্য কারাগারে পাঠানোর পরই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি তাঁকে জানান, সন্ত্রাসীদের লোকজন তাঁকে শেষ দেখে নেবে।
এখন সহজ একটি প্রশ্ন উঠতে পারে, কারাগারের আসামিদের যেখানে খুশি পাঠানো হবে, তাতে হুমকির কী আছে? উত্তর হলো, আছে। ঢাকার কারাগারে বসে মৌচাকে যে মধু জমিয়েছিলেন তাঁরা, সেই চাকে ঢিল দিয়েছেন ইফতেখার উদ্দিন। ব্যাপারটা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, খোরশেদ আলম রাসুর কথা। ২০০২ সালের ২৯ মে থেকে তিনি কারাগারে। কিন্তু কারাগারে তিনি কি চুপচাপ বসে আছেন? মোটেই না, তাঁর নামে সবই হচ্ছে। সিদ্ধেশ্বরীর মৌচাক-আনারকলি মার্কেটের আশপাশে শত শত হকার বসানো, মার্কেটের ভেতরের জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করা, নিচে হকার বসানো—সবই হয় রাসুর নামে। বেইলি রোডের দুই পাশে ফুটপাতে যে হকার বসে, তার সিংহভাগই চলে যায় রাসুর কাছে। রাসুর বাড়িও মৌচাক মার্কেটের পেছনে। তাঁর নিজের ভাই এখন আনারকলি মার্কেটের নিয়ন্ত্রক। ঈদ এলে তাঁর চাঁদার পরিমাণ যে অনেক গুণ বেড়ে যায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
পাঠক, ‘আষাঢ়ে নয়’-এ এর আগে সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ও পিচ্চি হেলালকে নিয়ে কথা বলেছি। রাসু নিয়ে কখনো কিছু বলা হয়নি। আজ তাই রাসুতেই থাকি।
রাসুর সঙ্গে আমার কয়েকবার দেখাও হয়েছিল। তখন তিনি ছিলেন আনারকলি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তাঁর আগে সন্ত্রাসী লিয়াকত ছিলেন এই মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়, তাতে সুব্রত বাইনের পরেই রাসুর ক্রমিক ছিল ২। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ১৩টি মামলা ছিল, যেগুলোর মধ্যে ১১টি মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।
গোপালগঞ্জের বাসিন্দা খোরশেদ আলম রাসু ঢাকায় এসেছিলেন জহুরুল হক হলের ক্যানটিন বয় হয়ে। সেই পদে ছিলেনও কিছুকাল। হলে থেকে গোপনে পুলিশের কাছে ক্যাডারদের অস্ত্র লেনদেনের খবর পাচার করতেন। সেখানে থাকতে গিয়ে ’৯০-এর পর জাসদ ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সঙ্গে মিশে যান। তারপর ফারুক-রশিদদের ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে মিলে অস্ত্রবাজি শুরু করেন। তখন থেকে তাঁর নাম হয়ে যায় ফ্রিডম রাসু। কিন্তু ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে রাসুর সম্পর্ক খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কিছুদিন পর তিনি যুবদলে যোগ দেন। এর কারণও ছিল। ঠিক একই সময়ে যুবদলে যোগ দিয়েছিলেন বিমানবন্দরকেন্দ্রিক শীর্ষ সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। মূলত তাঁর হাত ধরেই যুবদলে আসেন ফ্রিডম রাসু। এ সময় পোস্তগোলার শাহাদত সিকদার, শীর্ষ সন্ত্রাসী জয়, মালিবাগের ইমাম ও গোসাইবাড়ীর মিজান ছিলেন রাসুর সঙ্গে।
যশোরে তখন চোরাচালান সিন্ডিকেটের নেতা মুশফিকুর রহমান হিরক ও আসাদুজ্জামান লিটুর নাম খুব শোনা যেত। হিরক পরে বিদেশে পালিয়ে আত্মগোপন করেন আর লিটু ক্রসফায়ারে মারা যান। এঁরা দুজনই যশোরের চারণ সাংবাদিক শামসুর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সে সময় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, রাসুর সঙ্গে এই দুই সীমান্ত সন্ত্রাসীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ঢাকায় এলে তারা রাসুর আশ্রয়ে থাকতেন।
রাসু কারাগারে যাওয়ার পরও তাঁর সিন্ডিকেট থেমে থাকেনি। ২০০৩ সালে আনারকলি মার্কেটের নেতা সিদ্ধেশ্বরীর মামুনকে রাসুর লোকেরা গুলি করে পঙ্গু করে। এরপর মার্কেটের দখল নেয় রাসুর লোকেরা। এখন পর্যন্ত তারাই মার্কেটের নিয়ন্ত্রক।
শেষ করার আগে রাসুকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটা বলি। ২০০২ সালের ২৮ মে ছিল মঙ্গলবার, সেদিন সন্ধ্যায় শোরগোল পড়ে গেল—রাসু গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমরা ছুটলাম ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে। সেখানে গিয়ে শুনলাম, সেই ক্লাব থেকে রাসুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখনকার ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। সেদিন সন্ধ্যায় ডিবির কার্যালয়ে বসেই পুলিশের উপস্থিতিতে রাসু আমাদের বললেন, তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের খবর ঠিক নয়। ধরা দেওয়ার আগে তিনি শর্ত দিয়েছিলেন, তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে হবে এবং রিমান্ডে আনা যাবে না। পুলিশ সেই শর্ত মেনে নেওয়ার পর তিনি আত্মসমর্পণে রাজি হন। রাসুর কথাই সত্যি হয়েছিল। তাঁকে ৫৪ ধারায় কারাগারে পাঠানো হয় এবং তাঁকে কখনো রিমান্ডে আনা হয়নি। এমনকি রাসুর বিরুদ্ধে থাকা কোনো মামলারও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।
আজ অনেক দিন পর মনে হলো, একজন সন্ত্রাসীর কাছে রাষ্ট্রযন্ত্র কীভাবে অসহায় হতে পারে, আমাদের জামানায় রাসু এর বড় উদাহরণ। এখনো শুনি, কাশিমপুর কারাগারে থেকে আদালতে যাওয়ার সময় রাসু নাকি পরিবারের লোকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎও করেন।
এ দেশে সবই সম্ভব হয়, সেটা শুধু রাসুদের জন্যই।
আরও পড়ুন:
যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ: গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সংকট’ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট দেশত্যাগ না করলে বিক্ষুব্ধ জনতার সহিংসতার শিকার হতে পারতেন হাসিনা। বিস্তারিত জানুন এই
৪ মিনিট আগেদেশে বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা সাড়ে ১৫ লাখের মতো। তাদের সবাইকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিতে হবে। তবে এরপর প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা জমা দিতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর এমনটাই জানানো হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেফরিদপুরের মল্লিকপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে খাগড়াছড়ি পরিবহন ও গ্রিন এক্সপ্রেস বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের দুর্ঘটনাস্থলকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ বা বারংবার দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতীয় তদন্ত কমিটি। মৃতুফাঁদে পরিণত ওই সড়কটির কাঠামোগত ত্রুটি সারানোসহ একগুচ্ছ সুপারিশ করে জরুরি ভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের
১০ ঘণ্টা আগেদেশের সব টিভি চ্যানেল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দিনে কমপক্ষে দুবার প্রচার করতে হবে ‘জুলাই অনির্বাণ’ ভিডিওচিত্র। আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগ জনগণকে অবহিত করার লক্ষ্যে তথ্য..
১২ ঘণ্টা আগে