টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠজুড়ে কড়া নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০: ৩২
Thumbnail image
গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠজুড়ে নিরাপত্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধের পর থেকেই ইজতেমা মাঠজুড়ে কড়া নিরাপত্তায় রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ভোর রাত থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইজতেমার মাঠসহ আশপাশের এলাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মাঠের প্রবেশ মুখগুলোয় কড়া নিরাপত্তায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

আজ বুধবার বিকেল তিনটার দিকে সরেজমিনে গাজীপুর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ইজতেমা ময়দানে কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য অধিকাংশ গেইট বন্ধ রাখা হয়েছে। ইজতেমার ময়দানের প্রধান ফটকে যাওয়ার স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। স্টেশন রোডে সেনাবাহিনী ও বিজিবির কড়া নিরাপত্তা ও ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। যান চলাচল বন্ধসহ বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

কামারপাড়া ব্রিজের মুখে ব্যারিকেড দিয়ে কড়া নিরাপত্তায় রেখেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও এপিবিএন এর সদস্যরা। এ ছাড়া ইজতেমার মাঠে প্রবেশের প্রধান ফটকের এই সড়কটিতে র‍্যাব, পুলিশ সদস্যদের টহল, সাঁজোয়া যানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন যানবাহন দেখা গেছে।

ইজতেমা ময়দানের প্রধান ফটকের প্রবেশ মুখে সেনাবাহিনী সদস্যদের কড়া নিরাপত্তায় থাকতে দেখা যায়। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশেপাশের এলাকায় মাইকিং করে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধের কথা জানিয়ে মুসল্লিদের ময়দান ছেড়ে দিতে বলা হয়।

এদিকে বিকেল সোয়া তিনটার সময় সাদ পন্থীদের আমির সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম মূল ফটকের ভেতরে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। এ সময় সৈয়দ ওয়াসিফ তাবলীগের সদস্যদের মাঠ ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত দেন বলেও জানান তিনি। তার এই অনুরোধে তাবলীগের সদস্যরা সম্মতি দেন। তারা শান্তিপূর্ণভাবে স্থান ত্যাগ করা ও নিরাপত্তার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

এই সিদ্ধান্তের পর মাঠ ছাড়তে থাকেন সাদপন্থীরা। প্রধান ফটক দিয়ে অনেকেই বের হতে থাতেন। তবে যেসব ফটক বন্ধ ছিল সেসব এলাকায় মুসল্লিদের দেয়াল ও গেট টপকে ময়দান ছাড়তে দেখা যায়।

মাঠ ছাড়ার সময় যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় তার জন্য কড়া নিরাপত্তা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃংখলার দায়িত্বে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ার মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইজতেমার মাঠ ও আশপাশের এলাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই এখানে কাউকে থাকতে দেওয়া হবে না। সবাই যেতে শুরু করেছে। কিছু লোক সন্ধ্যা পর্যন্ত রয়েছে, তাদের গাড়ি আসলে তারাও মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন।’

এদিকে মুসল্লিরা জানান, মঙ্গলবার ভোর রাতেই জোবায়ের পন্থীরা মুসল্লিরা যখন ভেতরে প্রবেশ করছিল তখন হামলা করে। হামলায় কয়েকজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

আব্দুল হান্নান শেখ নামে এক মুসল্লি বলেন, সকালে এসেই শুনি মুসল্লিদের ওপর হামলা হয়েছে। কযেকজন মারা গেছেন। মুরব্বিদের পরামর্শে বিকেলেই চলে যাচ্ছি।

মাহাদী হাসান নামে আরেকজন বলেন, আমাদের কয়েকজন সাথীকে মারা হয়েছে। অনেকেই আহত। আমিরের সিদ্ধান্তে সবাই মাঠ ছেড়ে চলে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, কিছু মুসল্লি আছেন। প্রশাসন মাইকিং করে ময়দান ছেড়ে দিতে বলায়, ধীরে ধীরে বের হয়ে যাচ্ছে। তালিকা করে কে কোথায় যাবে তা বলে দেওয়া হচ্ছে।

গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠজুড়ে নিরাপত্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠজুড়ে নিরাপত্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বলা হচ্ছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মায়দানসহ আশপাশের ৩ (তিন) কিলোমিটার এলাকার মধ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একত্রে ঘোরাফেরা জমায়েত এবং কোনো মিছিল সমাবেশ করতে পারবে না, কোনো প্রকার অস্ত্র, ছুরি, লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্যাদি বা এ জাতীয় কোনো পদার্থ বহন করতে পারবে না, কোনো প্রকার লাউড স্পিকার বা এ জাতীয় কোনো যন্ত্র দ্বারা উচ্চস্বরে কোনো শব্দ করতে পারবে না। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত