চালকের দোষ ও নাশকতাকে সামনে নিয়ে তদন্ত: রেলমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৬: ২৯
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ১৪

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ২৩ অক্টোবর রেল দুর্ঘটনায় লোক মাস্টারদের (রেল চালক) গাফিলতিকে বড় করে দেখছেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। একই সঙ্গে নাশকতার কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রেলওয়ে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। 

রেলপথ মন্ত্রী বলেন, ‘তারা তদন্ত করে দেখছেন শুধুমাত্র সিগনাল (সংকেত) অমান্য করার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে নাকি তার পেছনে কোনো নাশকতার উদ্দেশ্য আছে। প্রাথমিকভাবে চালকদের ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। তারা সংকেত অমান্য করে ট্রেন চালিয়েছে।’ 

নাশকতার আশঙ্কার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট যা দেখেছে এ ছাড়া সেখানে লাইনের ওপর কিছু হয়েছে কি না। কারণ এর আগেও ২০১৩ সালে ২০১৪ সালে রেল নিয়ে নাশকতা হয়েছে, রেলের ওপর আঘাত এসেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে, স্ক্রু খুলে ফেলেছে, ঢিল মারা হতো।’ 

রেলপথ মন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় রেল মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে ৷ এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ তবে প্রাথমিকভাবে তাদের ধারণা লোক মাস্টারের অবহেলা বা অক্ষমতায় এ ঘটনা ঘটেছে ৷ 

মন্ত্রী বলেন, সংকেত আগেই দেওয়া থাকে। সেটা দেখেই চালক যাবে। সেখানে থামার সংকেত দেওয়া ছিল। সেটা অমান্য করেই সে (চালক) এসেছে। 

তবে শুধুমাত্র চালকের দায় কেন দেওয়া হচ্ছে তার উত্তরে মন্ত্রী বলেন, রেলের লোকোমোটিভ মাস্টার নিয়োগ বন্ধ ছিল। ফলে লোকবল সংকটে অবসরে থাকা লোকমাস্টাদের আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমন ২৪ জন কে চুক্তিভিত্তিক নেওয়া হয়েছে। তারা অন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সেখানে ৩ থেকে ১২ বছর লাগছে লোকমাস্টার হতে। এসব ঘাটতির কারণে এমন হচ্ছে। এখানে অদক্ষ নয় বরং বয়স্ক হওয়ার কারণও আছে। 

মন্ত্রী বলেন, তবে ওই ট্রেনে যে লোকমাস্টার ছিলেন তাঁর বয়স ছিল ৪৫ বছর। এই কারণে তার থেকে এটা হওয়ার কথা নয়। প্রাথমিকভাবে ট্রাফিক বিভাগের কোনো ভুল ছিল না। 

রেলের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার যে দুর্ঘটনা হয় সেখানে ২১ জন নিহত হয়েছিল উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন পর আবার একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটল ৷ এ ঘটনায় সব মিলে মোট ২০ জন মারা গেছেন ৷ এ ছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৫ জন ৷ 

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ফার্স্ট এশিয়ান রেল সামিটে যোগ দিতে গত ২৩ অক্টোবর তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। তারা ব্যক্তিগত সেক্রেটারিও ছিলেন সে সফরে ৷ আরও কয়েকজন গিয়েছিলেন ৷ ২৭ অক্টোবর অবধি সেখানে অবস্থানের কথা ছিল ৷ কিন্তু এ দুর্ঘটনার পর তিনি যাত্রা বাতিল করে গতকাল রাতেই ঢাকা এসেছেন। 

এ ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারকে এক লাখ টাকা ও এ ছাড়া যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার খরচ রেল কর্তৃপক্ষ বহন করবে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত