Ajker Patrika

৬ মাসেও হয়নি তথ্য কমিশন, জমেছে ৩০০ অভিযোগ

  • প্রধান তথ্য কমিশনারসহ শীর্ষ তিন পদই শূন্য।
  • দৈনন্দিন কাজ চালানোর জন্যও অর্থ ব্যয় করতে পারছে না।
  • নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৩০০ অভিযোগ, প্রতিদিন আরও বাড়ছে।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯: ১৫
৬ মাসেও হয়নি তথ্য কমিশন, জমেছে ৩০০ অভিযোগ

ছয় মাস পরও পুনর্গঠন না হওয়ায় চরম সংকটে পড়েছে তথ্য কমিশন। প্রধান তথ্য কমিশনার, দুই কমিশনার ও সচিব নিয়োগ না হওয়ায় দৈনন্দিন কাজ চালানোর জন্যও অর্থ খরচ করতে পারছে না কমিশন। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ৩০০ অভিযোগ।

তথ্য কমিশন কবে নাগাদ গঠন করা হবে, সে বিষয়েও কোনো আভাস নেই। কারণ, কমিশনের শীর্ষ তিন পদে নিয়োগের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ দিতে এখনো বাছাই কমিটি করেনি অন্তর্বর্তী সরকার।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢিলেঢালাভাবে চলছিল তথ্য কমিশনের কার্যক্রম। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন কমিশন ও সংস্থায় নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে পদত্যাগ- অপসারণ শুরু হয়। ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান তথ্য কমিশনার আবদুল মালেক ও তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক পদত্যাগ করেন। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টিকে অপসারণ করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর তথ্য কমিশনের সচিব জুবাইদা নাসরীনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে তথ্য কমিশনের শীর্ষ পদগুলো শূন্য।

সূত্র জানায়, তথ্য কমিশনের ৭৪টি পদের বিপরীতে একজন পরিচালক ও একজন একান্ত সচিব প্রেষণে এবং ২৭ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ২০ জন আউটসোর্সিংসহ মোট ৪৯ জনবল আছে। কমিশন গঠন না হওয়ায় বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ হচ্ছে প্রতিদিন অফিসে আসা। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা অভিযোগগুলো তাঁরা শুনানির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন।

সরকারি কোনো দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তার কাছে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্য চেয়ে না পেলে ওই দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে তথ্য চেয়ে আপিল আবেদন করা যায়।

আপিল করার পরও তথ্য না দিলে তথ্য কমিশনে অভিযোগ করা যায়। অভিযোগ পেলে তথ্য কমিশন উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করে রায় দেয়।

তথ্য কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, কমিশন না থাকায় কোনো অভিযোগের শুনানি হচ্ছে না। কমিশনে বর্তমানে তিন শতাধিক অভিযোগ জমা হয়ে আছে। এর সঙ্গে প্রতিদিন নতুন অভিযোগ জমা হচ্ছে। তিনি বলেন, তথ্য কমিশনের পরিচালকের আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় কমিশনের অর্থসংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এক টাকা খরচ করারও উপায় নেই। কমিশনের কর্মকর্তারা দুটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। টাকার জোগান না থাকায় একটি গাড়ি বাদ দিয়ে কর্মকর্তারা নিজেরা চাঁদা দিয়ে একটি গাড়ি ব্যবহার করছেন।

সূত্র বলেছে, তথ্য কমিশনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ না থাকায় কমিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ জন চাকরি ছেড়েছেন। কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি শেষে পেনশন পাওয়ারও সুযোগ নেই।

তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রধান তথ্য কমিশনার এবং দুজন তথ্য কমিশনার নিয়ে তথ্য কমিশন গঠন করা হয়। তথ্য কমিশনারদের মধ্যে একজন হবেন নারী। প্রধান তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনার নিয়োগে রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ দিতে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি করা হয়। কিন্তু এই তিন পদে নিয়োগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকার এখনো বাছাই কমিটি করেনি। কমিশনাররা নিয়োগ না হওয়ায় কমিশনও সচল হচ্ছে না।

তথ্য কমিশনের উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হেলাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশন না থাকায় আমাদের মূল কাজই হচ্ছে না। জনগণ সেবা পাচ্ছে না। তথ্য কমিশনারদের হাতে আর্থিক বিষয় থাকায় এখন কমিশন কোনো ধরনের খরচ করতে পারছে না। অর্থসংশ্লিষ্ট কাজগুলো আমরা এড়িয়ে চলছি। আমরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়ে বিষয়গুলো জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আশুলিয়ায় টেনেহিঁচড়ে সাব-রেজিস্ট্রারকে অফিস থেকে বের করে দিল ‘ছাত্র-জনতা’

টিকিটের কালোবাজারি ঠেকাতে না পারলে চুক্তি বাতিল, সহজ ডটকমকে রেল উপদেষ্টার হুঁশিয়ারি

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, লালমনিরহাটে জেলা বিএনপির নেতা আটক

ট্রাম্পের শুল্কে বাংলাদেশের সর্বনাশ, ভারতসহ যাদের পৌষ মাস

বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের ভিসা স্থগিত করল সৌদি আরব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত