Ajker Patrika

গুলশানের সেই ফ্ল্যাট এখনো টিউলিপ সিদ্দিকের নামে, ডেইলি মেইলের দাবি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ৩৮
গুলশানের সেই ফ্লাট ভবনের নাম ‘সিদ্দিকস’, যা টিউলিপের বাবার পারিবারিক নাম
গুলশানের সেই ফ্লাট ভবনের নাম ‘সিদ্দিকস’, যা টিউলিপের বাবার পারিবারিক নাম

শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকার গুলশানের ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে অসত্য তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে ডেইলি মেইল। ওই ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। তাঁর দাবি, এমপি হওয়ার পরপরই তিনি ওই বাসা ছোট বোনের কাছে হস্তান্তর করেন।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ ডেইলি মেইলকে বলেছেন, ২০০২ সালে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসেবে তিনি ওই ফ্ল্যাট পান। ২০১৫ সালের মে মাসে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফ্ল্যাটটি তিনি ‘বৈধভাবে’ বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর কাছে হস্তান্তর করেন।

এমপি হিসেবে পার্লামেন্টে দেওয়া টিউলিপের সম্পদের হিসাবে বলা হয়, পরিবারের একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ওই সম্পত্তির মালিকানায় ছিলেন টিউলিপ। জুলাই মাসেই তা হস্তান্তর করার কথা বলা হয়েছে সেখানে।

২০১৫ সালের ৯ জুন টিউলিপ ‘হেবা’র মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা রূপন্তীকে দেন। সেখানে দাতা হিসেবে রিজওয়ানা সিদ্দিক (টিউলিপ সিদ্দিক); গ্রহীতা ছিলেন আজমিনা সিদ্দিক। দলিলে বলা হয়, ‘ভালোবাসা ও স্নেহ’ থেকে বোনকে সম্পত্তি হেবা দিতে চান তিনি।

দলিল অনুযায়ী, ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় কেনা গুলশানের ফ্ল্যাটটি আজমিনা সিদ্দিককে দেওয়া হয়। দলিলে ফ্ল্যাটের সম্পূর্ণ মালিকানা, স্বত্ব, অধিকার এবং একটি পার্কিং স্পেস হস্তান্তরের কথা বলা রয়েছে।

দলিল অনুযায়ী ফ্ল্যাটের অবস্থান, গুলশান রেসিডেনশিয়াল মডেল টাউনের ১১ নম্বর প্লটে। এটি ভবনের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের একটি ফ্ল্যাট। দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে দলিল সম্পন্ন হয়।

তবে ডেইলি মেইল দাবি করছে, ঢাকার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান চালিয়ে তারা ভিন্ন তথ্য পেয়েছে। গত সপ্তাহে সেখানে সংরক্ষিত নথি তাদের প্রতিবেদক দেখেছেন। সেখানে টিউলিপকে এখনো ওই ফ্ল্যাটের মালিক, যা দুদকের অভিযোগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। গত ১০ মার্চ দুদক জানায়, গুলশানের ওই ফ্ল্যাট হস্তান্তরে টিউলিপ যে নোটারি ব্যবহার করেছেন, তদন্তে তা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।

সেই হেবা দলিলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের স্বাক্ষর রয়েছে। দুদককে দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি বলেছেন, টিউলিপের ফ্ল্যাট হস্তান্তরের হেবা দলিলটি তাঁর নোটারির নামে দেখানো হলেও স্বাক্ষর ‘তাঁর নয়’। হেবাদাতাকেও তিনি চেনেন না বলে দুদকের কাছে দাবি করেছেন।

বিশেষজ্ঞের বরাতে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেকর্ড করা না হলে ফ্ল্যাট বা সম্পত্তির হস্তান্তর বৈধ বলে গণ্য হয় না।

দুদকের দাবি, যেহেতু আইনজীবী অস্বীকার করেছেন এবং তাঁর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন, তাই হেবা দলিলটি ‘ভুয়া’।

খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

তবে টিউলিপের আইনজীবীর দাবি, যথানিয়মেই হেবা সম্পন্ন হয়। যেহেতু ফ্ল্যাটের ভাড়া তাঁর বোনই পেতেন। দুদকের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

আইনজীবী পল থুয়েট ডেইলি মেইলকে বলেন, এ ক্ষেত্রে হেবা দলিলই যথেষ্ট বলে বাংলাদেশি আইন বিশেষজ্ঞ তাঁকে জানিয়েছেন। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের যে নথির কথা বলা হচ্ছে, তা ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’। টিউলিপ সিদ্দিক পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছেন—এমন দাবি ‘অসত্য ও অযৌক্তিক’।

গত বছর আগস্টে গণবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ব্রিটেনে তাঁর ভাগনির ‘উপহারের’ ফ্ল্যাট নিয়ে ব্রিটিশ মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা শুরু হয়। হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লন্ডনে সাত লাখ পাউন্ড দামের ফ্ল্যাট টিউলিপ সিদ্দিক ‘উপহার’ পান বলে খবর বের হয়। বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ।

এর আগে ২০২২ সালে ডেইলি মেইলের কাছে টিউলিপ দাবি করেন, তাঁর বাবা-মা ওই ফ্ল্যাট কিনে তাঁকে দিয়েছেন। তবে পরে স্যার লরি ম্যাগনাসের তদন্তে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে’ জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিলেন।

এদিকে গত সপ্তাহে এক এক্স পোস্টে টিউলিপ দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুদকের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে দুদক ‘হয়রানিমূলক’ প্রচার চালাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

ওই পোস্টে টিউলিপ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের ঐতিহ্য আছে এখানে। তাদের যুক্তিসংগত যেকোনো প্রশ্নের জবাব আমি খুশিমনে দেব। কিন্তু আমাকে নোংরা রাজনীতিতে টেনে নামানোর চেষ্টায় জড়াব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি ব্রিটিশ নাগরিক ও পার্লামেন্টের গর্বিত সদস্য হিসেবে আমার কাজের মর্যাদা নষ্ট করে—এমন বাজে হয়রানিমূলক কিছু করার সুযোগও তাদের দেব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র: এবার গুলশান থানার মামলায় গ্রেপ্তার মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ১২
মেজর সাদিক ও স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।
মেজর সাদিক ও স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন।

মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

সুমাইয়ার স্বামী মেজর সাদিকুল হকের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কোর্ট-মার্শাল গঠন করেছে সেনাবাহিনী।

আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুমাইয়া জাফরিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক মামুন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল সকালে গুলশান-১-এর জব্বার টাওয়ারের পাশে ৩০-৩৫ জন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ-মিছিল করেন। আসামিরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা দেশবিরোধী স্লোগান দেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ ওই দিনই গুলশান থানায় মামলা করে।

আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের জবানবন্দি ও স্থানীয়ভাবে তদন্তে জানা যায়, সুমাইয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অর্থ জোগানদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা। তিনি সক্রিয়ভাবে দেশবিরোধী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। আসামি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়। তিনি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের অর্থ জোগান দিয়ে থাকেন বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই আসামি সারা দেশের আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সুসংগঠিত করে দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলেন বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে এ মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পরে আদালত তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণের ঘটনায় ভাটারা থানায় করা মামলায় গত ৬ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৭ আগস্ট তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড হয়। রিমান্ড শেষে ১২ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৭৫ থেকে ২০০ পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ: ইসি সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে বিভিন্ন পর্যায়ে ১৭৫ থেকে ২০০ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ বুধবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমাকে যেটা ধারণা দেওয়া হয়েছে—বিভিন্ন সময়ে ১৭৫ থেকে ২০০ জনের মতো আসবেন। এখন কে আগে আসবেন, তাঁদের সংখ্যা কত, তাঁরা কী কী দেখবেন, তাঁদের সঙ্গে পরবর্তীতে কেউ জয়েন করবেন কি না—এই সম্পর্কে কোনো প্রস্তাবনা এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।’

গত সোমবার চুক্তি হয়েছে জানিয়ে সচিব আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে একটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তির আওতায় আমরা তাঁদের ফ্যাসিলিটিজ প্রোভাইড করব। তাঁদের যাতায়াত, চলাফেরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে তাঁদের লোকাল প্রটোকল কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানতে হবে।’

এখন পর্যন্ত ইইউ ও তুরস্ক থেকে পর্যবেক্ষক দল আসবে নিশ্চিত হয়েছে বলে জানান সচিব।

প্রার্থীর নিরাপত্তায় অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন অনুমতি নিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে কি না—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় এটা বলেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে করতে হবে। তাঁরা ভালো মনে করেছেন এবং আমরা সবাই এ বিষয়ে একমত।’

কীভাবে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব—এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্নটা করলে বোধ হয় আমার জন্য ভালো হয়। আমার সঙ্গে উনার এ ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি। কাজেই, আমি এর ব্যাখ্যা দিতে গেলে অপব্যাখ্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যেটা আমি করতে চাই না।’

নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হতে পারে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এটার ব্যাপারেও আমি কোনো মন্তব্য করব না। নিরাপত্তার বিষয়টা কখনো ভীতি হয়? আমি আপনাকে পাল্টা প্রশ্ন করি। নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত করলে আবার ভীতি সঞ্চার হবে, এটা কোনো কথা হতে পারে? এটি তো সবারই চেষ্টা করা উচিত।’

আখতার আহমেদ আরও বলেন, বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টা যখন প্রাসঙ্গিক হবে, তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ উদ্বেগের কথা জানায়।

আজ বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। তাঁকে তলব করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, ঢাকায় কিছু ‘চরমপন্থী উপাদান’ প্রকাশ্যে ঢাকায় ভারতীয় মিশনের আশেপাশে একটি নিরাপত্তা সংকট তৈরি করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, এই ধরনের হুমকি কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক—এমনটাই প্রত্যাশিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা নিয়ে ‘চরমপন্থী উপাদানগুলো’র মাধ্যমে যে ‘মিথ্যা বয়ান’ তৈরি করার চেষ্টা চলছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার এই উদ্বেগজনক ঘটনাগুলোর কোনো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেনি বা ভারত সরকারের সঙ্গে কোনো অর্থবহ প্রমাণ দেয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়, যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এবং মানুষে-মানুষে উদ্যোগের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে। এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই নয়াদিল্লি বারবার বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে মত দিয়েছে। ভারত সরকার ধারাবাহিক আহ্বান জানিয়েছে, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে, বাংলাদেশ সরকার তাদের কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা বজায় রেখে সেদেশে অবস্থিত ভারতীয় মিশন এবং অন্যান্য বিদেশি পোস্টগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে, এই তলবের মূল কারণ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্য বলে উল্লেখ করা হলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে সে প্রসঙ্গ আনা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যাত্রীদের মালপত্রের নিরাপত্তায় শাহজালালে বডি ক্যামেরা পরবেন ট্রাফিক স্টাফরা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৪
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের মালপত্রের (ব্যাগেজ) নিরাপত্তা নিশ্চিতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট (জিএইচএ) হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠানটি ব্যাগেজ পরিবহনপ্রক্রিয়ায় নিয়োজিত ট্রাফিক স্টাফদের জন্য বডি ক্যামেরা সংযোজন করেছে।

এই বডি ক্যামেরা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিমানের হোল্ড থেকে শুরু করে ব্যাগেজ বেল্ট হয়ে যাত্রীর হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের আওতায় আসবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের পাশাপাশি যেসব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের জন্য প্রতিষ্ঠানটি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দেয়, তাদের ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ জানায়, বডি ক্যামেরা সংযোজনের ফলে ব্যাগেজ চুরি, হারানো কিংবা ক্ষতির অভিযোগ দ্রুত ও নির্ভুলভাবে যাচাই করা সম্ভব হবে। কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা শনাক্ত করে দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করা যাবে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রীদের আস্থা ও সন্তুষ্টি আরও সুদৃঢ় হবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ও সেবার একটি অভিন্ন কাঠামো প্রতিষ্ঠায় এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং যাত্রীকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তব উদাহরণ হিসেবে বডি ক্যামেরা উদ্যোগটি বিবেচিত হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা, সেবা ও আস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যকর ও আধুনিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত