স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করাই জাতির পিতার রক্তের ঋণ শোধ করা: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০: ১৮
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০: ৫৮

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রক্ত দিয়ে বাঙালির ভালোবাসার ঋণ শোধ করে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখন আমাদের পালা তাঁর রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় জাতির পিতার রক্তের ঋণ শোধ করা।’

মঙ্গলবার ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংসদে আনা একটি সাধারণ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদনেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান প্রস্তাবটি সংসদে আনেন। আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে, সেটা তাঁকে করতে দেওয়া হয়নি। তিনি নিজের জীবনে কিছু চাননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বলেছিলেন, রক্ত দিয়ে হলেও বাঙালি জাতির এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করে যাব। তিনি রক্ত দিয়েই ঋণ শোধ করে গেছেন। এখন আমাদের পালা তাঁর রক্তের ঋণ শোধ করার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেটা করতে পারব কখন? দেশের প্রতিটি গৃহহীন গৃহ পাবে, অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের মানুষকে যখন উন্নত, সমৃদ্ধিশালী করতে পারব, তখনই সেই রক্তের ঋণ আমরা শোধ দিতে পারব।

বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের মুক্তি চেয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনেছিলেন। সাধারণ স্কুলশিক্ষক জয়ী হয়েছিলেন। মানুষের ভোটের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সংবিধান মোতাবেক ১৯৭৩ সালেই নির্বাচন দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় যে রূপকল্প ২০২১ দিয়েছিলাম, সেটা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর সময়ই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।

বঙ্গবন্ধু দেশের প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপরে তুলেছিলেন বলে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে আট ভাগ পর্যন্ত পৌঁছেছিলাম। আওয়ামী লীগ যে কথা দেয়, সেটা রাখে। জাতির পিতা স্বাধীনতা দেবেন বলেছিলেন, সেটা দিয়ে গেছেন। স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরে এই দেশের মানুষের কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক সাশ্রয় এসেছে। মানুষ অন্তত দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারছে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা না থাকলে দেশের প্রবৃদ্ধি আট ভাগ থেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেত বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ ও অতিমারি কারোনার কারণে আমাদের খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, যেখানে উন্নত দেশ নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দা হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে। আমরা সেখানে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে সক্ষম হচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা দিয়েছে, সেটা পূরণ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার, প্রতিটা কাজ আমরা কিন্তু বাস্তবায়ন করেছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, ২০২৬ সালের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন করে ৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ব।’

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় জাতির পিতার রক্তের ঋণ শোধ হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতা বলে গেছেন, এই স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস কেউ মুছতে পারবে না। চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। জয় বাংলা বলেই আমরা এগিয়ে যাব।’

অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, কামরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, আবু হোসেন প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত