দেশে ফিরল ৯০ জেলে, ভারতে গেল ৯৫ জন

অনলাইন ডেস্ক    
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ১৪
Thumbnail image
গতকাল রোববার ভারত-বাংলাদেশ উভয় দেশে বন্দী জেলেদের বিনিময় করে। ছবি: এক্স

বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে থাকা ৯৫ ভারতীয় জেলেকে মুক্তি দিয়েছে ঢাকা। বিপরীতে ভারতে আটক ৯০ বাংলাদেশিকেও মুক্তি দিয়েছে নয়া দিল্লি। গতকাল রোববার উভয় পক্ষ এই বিনিময় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দুই দেশের হেফাজতে থাকা জেলেদের পারস্পরিক প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এমন সময় সম্পন্ন হলো, যখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক বেশ টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে।

উভয় দেশের জেলেদের এই বিনিময় কার্যক্রম সমন্বয় করেছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। ভারত সরকার বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশি পক্ষ ৯৫ জন ভারতীয় জেলে এবং চারটি মাছ ধরার নৌকা ভারতীয় কোস্ট গার্ডের কাছে হস্তান্তর করেছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, অন্যদিকে, ভারতীয় কোস্ট গার্ড ৯০ জন বাংলাদেশি জেলে মুক্তি দিয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন এমন জেলে ছিলেন, যাদের ডুবে যাওয়া মাছ ধরার নৌকা ‘কৌশিক’ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভারতীয় জেলেদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মৎস্য বিভাগের কাছে দক্ষিণ ২৪-পরগনার পোস্টে প্রত্যাবাসন পরবর্তী হস্তান্তর করা হয়েছে।’

গত অক্টোবরে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় চারটি ট্রলারে থাকা ৬৪ জন ভারতীয় জেলে গ্রেপ্তার হন। পরে পটুয়াখালী জেলায় আরও দুটি ট্রলারে থাকা ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাংলাদেশে তাঁরা কয়েক মাস বন্দী থাকার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক মৎস্যজীবী সংগঠন অভিযোগ করে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নতুন সরকার অপ্রয়োজনীয়ভাবে কঠোর হয়েছে।

সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘আগে বাংলাদেশের উপকূল প্রশাসন আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমানা ভুলবশত অতিক্রম করা জেলেদের ফিরিয়ে দিত...এবার অপ্রয়োজনীয়ভাবে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশি আদালতে বন্দীদের মুক্তির জন্য মৎস্যজীবীদের সংগঠন একাধিক আইনি পদক্ষেপ নিলেও তা সফল হয়নি। গত ২ ডিসেম্বর বিধানসভায় দেওয়া এক বক্তব্যে মমতা দুঃখ প্রকাশ করেন যে তাঁর সরকার প্রতিবেশী দেশে জেলেদের পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদানে সহযোগিতা করলেও কেন্দ্র এ বিষয়ে বিশেষ কিছু করেনি।

জেলেদের সংগঠন যখন বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছিল, তখন ভারতীয় কোস্ট গার্ড ওডিশার পারাদ্বীপের কাছে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করা ৭৮ জন বাংলাদেশি জেলেকে গ্রেপ্তার করে। একটি সূত্র বলেছে, ‘আরও প্রায় ১২ জন বাংলাদেশি জেলে আগে গ্রেপ্তার হয়েছিল...আমাদের হেফাজতে প্রায় ৯০ জন বাংলাদেশি থাকায় আমাদের জেলেদের মুক্তির জন্য দর-কষাকষি শুরু করা সহজ হয়েছিল।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘অবশেষে, উভয় সরকার সামুদ্রিক সীমানা রেখায় বিনিময় প্রক্রিয়া চালু করার জন্য একমত হয়।’

ভারতীয় জেলেদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয় গত ২৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব আটক ৯৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার মধ্যে দিয়ে এই প্রক্রিয়ার সূচনা হয়। পরে ভারত সরকারও ৯০ জন বাংলাদেশি জেলের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে। অবশেষে, দুই দেশের সিনিয়র কর্মকর্তারা ৫ জানুয়ারি যৌথ প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের জন্য সম্মত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত