শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত হয়েছেন শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ মানুষ। এসব হত্যার ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মামলা করা হচ্ছে। এসব মামলার এজাহারের বর্ণনা অনেকটা একই রকম। প্রধান আসামিদের নামও একই। অনেক মামলায় শতাধিক আসামির নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হচ্ছে আরও ৪০০-৫০০ জনকে।
আইনজীবীরা বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০২ ধারার মামলায় এজাহারের বর্ণনা সুস্পষ্ট হতে হয়। তবে আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর এজাহারে অস্পষ্টতা রয়েছে; যা মামলার দুর্বলতা। আবার আসামির সংখ্যাও অনেক। অজ্ঞাতনামা কয়েক শ আসামি থাকায় ‘বাণিজ্যের’ সুযোগও রয়েছে।
মামলার এজাহারের বর্ণনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহতদের স্বজনেরাও। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা এমন এজাহার দেননি।
এদিকে কয়েক বছর আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায়ও মামলা হচ্ছে। এমন মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।
কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলাগুলোর বিষয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, এ ধরনের মামলা দিয়ে কাজ হবে না, টিকবে না। প্রথম ধাপও পার হতে পারবে না। বিচার পেতে হলে এটা বন্ধ করতে হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। লুট হয় অস্ত্র, গুলি। নিহত হন পুলিশের ৪৪ জন সদস্য। অনেক থানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। কয়েক দিন পর থানাগুলোতে কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মামলা নেওয়া হয়নি।
২১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মাদ আবদুল মোমেনের সই করা পরিপত্রে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশের সব কমিশনার ও জেলার এসপিদের থানায় মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত না করতেও পুলিশকে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন থানায় জুলাই-আগস্টের ঘটনায় একের পর এক মামলা হতে থাকে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত অন্তত ২৫০টি মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে শতাধিক হত্যা মামলা।
হত্যার অভিযোগে করা মামলাগুলোর মধ্যে হাতে গোনা দু-একটি বাদে সব কটিতেই আসামি করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, পুলিশের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের। প্রায় সব এজাহারেই শেখ হাসিনাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হুকুমের অভিযোগ আনা হচ্ছে। তবে কার গুলিতে ঘটনাটি ঘটেছে, তা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে প্রথম হত্যা মামলা করা হয় ১৩ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে মুদিদোকানি আবু সায়েদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই মামলা করা হয়। মামলায় ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খানসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়। এজাহারে আসামিদের যোগসাজশে ও হুকুমে সায়েদকে গুলি করার কথা বলা হয়। কিন্তু কে গুলি করেছে, তা উল্লেখ নেই। দুজন সাক্ষীর নাম রয়েছে। তবে তাঁদের হদিস পাচ্ছে না পুলিশ।
২৪ আগস্ট আদাবরে পোশাকশ্রমিক মো. রুবেল হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, নাজমুল হাসান পাপনকেও আসামি করা হয়। অন্য আসামিরাও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। ঘটনার সময় সাকিব আল হাসান বিদেশে ছিলেন। এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরিকল্পনা করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে নাঈম নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর বাবার করা মামলায় আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা, ১৪ দলের শরিক বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাসহ কয়েকজন নেতা, পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ ১৯৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিকেরা কীভাবে জড়িত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
ঢাকার বাইরের কোনো কোনো মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম আসামি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০২ ধারার মামলায় এজাহারে হত্যার হুকুমদাতা ও হত্যাকারী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যও গুরুত্বপূর্ণ। যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোতে হুকুমের আসামি অনেক, কিন্তু সরাসরি সম্পৃক্ত আসামি কম। এসব ক্ষেত্রে আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিছু মামলার এজাহারের বর্ণনায় বিস্মিত হয়েছেন নিহতদের স্বজনেরাও। তাঁদের দাবি, তাঁরা এমন এজাহার দেননি। পুলিশ এমন এজাহার দিয়েছে। গণ আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি এমন না চাইলেও মামলা নিতে হবে। কাকে আসামি করবে, এজাহারের বর্ণনা কী হবে, সেসব বাদী নিজে ঠিক করে আনছেন। সেটা কাটাছেঁড়ার কোনো সুযোগ আপাতত পুলিশের হাতে নেই।
অবশ্য বাদীরা বলছেন ভিন্ন কথা। ধানমন্ডিতে পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এক আইনজীবীর চেম্বার থেকে মামলা ও আসামি ঠিক করে আনা হয়েছে। পরে মামলা নিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা অসহযোগিতা করায় শিক্ষার্থীরা ওই দুজনের নামও মামলায় দিয়েছেন।
মেহেরপুরে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তাঁর স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসাসহ ১৬৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করেছেন বাদী হাসনাত জামান। তিনি বলেছেন, তিনি অনেক নামই মামলায় দেননি। কিন্তু তাঁর মামলায় অনেক মানুষের নাম রয়েছে। পরে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
রাজশাহীর বাঘা থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন কিশোরপুর গ্রামের জাহিদ হাসান। এজাহারে ১৪ নম্বর আসামি হিসেবে বাঘা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান ও ১৫ নম্বর আসামি হিসেবে তাঁর ছেলে মো. স্বদেশের নাম রয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে নাম রয়েছে ১৩০ জনের।
সাংবাদিক নুরুজ্জামান জানান, অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট তাঁরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অভিযোগকারী জাহিদ হাসানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেন। পরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বাস্তবে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার মতো কেউ নেই। গায়েবি মামলা করতে এই এজাহার দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন যে মামলা হচ্ছে, সেগুলো বাদীর ইচ্ছার ওপরই নির্ভর করছে। বাদী আসামিদের নাম দিচ্ছেন, সে অনুযায়ী মামলা হচ্ছে।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার সবকিছু এজাহারে থাকবে না। সব থাকলে তো আর তদন্তের প্রয়োজন হতো না। তবে এভাবে গড়পড়তা আসামি করা, কার কী ভূমিকা, তার একটুও ধারণা না থাকা মামলাকে দুর্বল করে। তখন সেটা পরিষ্কার হয়, এখানে কারও না কারও স্বার্থ রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত হয়েছেন শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ মানুষ। এসব হত্যার ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মামলা করা হচ্ছে। এসব মামলার এজাহারের বর্ণনা অনেকটা একই রকম। প্রধান আসামিদের নামও একই। অনেক মামলায় শতাধিক আসামির নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হচ্ছে আরও ৪০০-৫০০ জনকে।
আইনজীবীরা বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০২ ধারার মামলায় এজাহারের বর্ণনা সুস্পষ্ট হতে হয়। তবে আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর এজাহারে অস্পষ্টতা রয়েছে; যা মামলার দুর্বলতা। আবার আসামির সংখ্যাও অনেক। অজ্ঞাতনামা কয়েক শ আসামি থাকায় ‘বাণিজ্যের’ সুযোগও রয়েছে।
মামলার এজাহারের বর্ণনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহতদের স্বজনেরাও। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা এমন এজাহার দেননি।
এদিকে কয়েক বছর আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায়ও মামলা হচ্ছে। এমন মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।
কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলাগুলোর বিষয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, এ ধরনের মামলা দিয়ে কাজ হবে না, টিকবে না। প্রথম ধাপও পার হতে পারবে না। বিচার পেতে হলে এটা বন্ধ করতে হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। লুট হয় অস্ত্র, গুলি। নিহত হন পুলিশের ৪৪ জন সদস্য। অনেক থানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। কয়েক দিন পর থানাগুলোতে কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মামলা নেওয়া হয়নি।
২১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মাদ আবদুল মোমেনের সই করা পরিপত্রে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশের সব কমিশনার ও জেলার এসপিদের থানায় মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত না করতেও পুলিশকে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন থানায় জুলাই-আগস্টের ঘটনায় একের পর এক মামলা হতে থাকে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত অন্তত ২৫০টি মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে শতাধিক হত্যা মামলা।
হত্যার অভিযোগে করা মামলাগুলোর মধ্যে হাতে গোনা দু-একটি বাদে সব কটিতেই আসামি করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, পুলিশের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের। প্রায় সব এজাহারেই শেখ হাসিনাসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হুকুমের অভিযোগ আনা হচ্ছে। তবে কার গুলিতে ঘটনাটি ঘটেছে, তা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে প্রথম হত্যা মামলা করা হয় ১৩ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে মুদিদোকানি আবু সায়েদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই মামলা করা হয়। মামলায় ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খানসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়। এজাহারে আসামিদের যোগসাজশে ও হুকুমে সায়েদকে গুলি করার কথা বলা হয়। কিন্তু কে গুলি করেছে, তা উল্লেখ নেই। দুজন সাক্ষীর নাম রয়েছে। তবে তাঁদের হদিস পাচ্ছে না পুলিশ।
২৪ আগস্ট আদাবরে পোশাকশ্রমিক মো. রুবেল হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, নাজমুল হাসান পাপনকেও আসামি করা হয়। অন্য আসামিরাও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। ঘটনার সময় সাকিব আল হাসান বিদেশে ছিলেন। এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরিকল্পনা করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে নাঈম নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর বাবার করা মামলায় আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা, ১৪ দলের শরিক বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাসহ কয়েকজন নেতা, পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ ১৯৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিকেরা কীভাবে জড়িত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
ঢাকার বাইরের কোনো কোনো মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম আসামি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০২ ধারার মামলায় এজাহারে হত্যার হুকুমদাতা ও হত্যাকারী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যও গুরুত্বপূর্ণ। যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোতে হুকুমের আসামি অনেক, কিন্তু সরাসরি সম্পৃক্ত আসামি কম। এসব ক্ষেত্রে আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কিছু মামলার এজাহারের বর্ণনায় বিস্মিত হয়েছেন নিহতদের স্বজনেরাও। তাঁদের দাবি, তাঁরা এমন এজাহার দেননি। পুলিশ এমন এজাহার দিয়েছে। গণ আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি এমন না চাইলেও মামলা নিতে হবে। কাকে আসামি করবে, এজাহারের বর্ণনা কী হবে, সেসব বাদী নিজে ঠিক করে আনছেন। সেটা কাটাছেঁড়ার কোনো সুযোগ আপাতত পুলিশের হাতে নেই।
অবশ্য বাদীরা বলছেন ভিন্ন কথা। ধানমন্ডিতে পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এক আইনজীবীর চেম্বার থেকে মামলা ও আসামি ঠিক করে আনা হয়েছে। পরে মামলা নিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা অসহযোগিতা করায় শিক্ষার্থীরা ওই দুজনের নামও মামলায় দিয়েছেন।
মেহেরপুরে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তাঁর স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসাসহ ১৬৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করেছেন বাদী হাসনাত জামান। তিনি বলেছেন, তিনি অনেক নামই মামলায় দেননি। কিন্তু তাঁর মামলায় অনেক মানুষের নাম রয়েছে। পরে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
রাজশাহীর বাঘা থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন কিশোরপুর গ্রামের জাহিদ হাসান। এজাহারে ১৪ নম্বর আসামি হিসেবে বাঘা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান ও ১৫ নম্বর আসামি হিসেবে তাঁর ছেলে মো. স্বদেশের নাম রয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে নাম রয়েছে ১৩০ জনের।
সাংবাদিক নুরুজ্জামান জানান, অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট তাঁরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অভিযোগকারী জাহিদ হাসানের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেন। পরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বাস্তবে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার মতো কেউ নেই। গায়েবি মামলা করতে এই এজাহার দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন যে মামলা হচ্ছে, সেগুলো বাদীর ইচ্ছার ওপরই নির্ভর করছে। বাদী আসামিদের নাম দিচ্ছেন, সে অনুযায়ী মামলা হচ্ছে।
সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার সবকিছু এজাহারে থাকবে না। সব থাকলে তো আর তদন্তের প্রয়োজন হতো না। তবে এভাবে গড়পড়তা আসামি করা, কার কী ভূমিকা, তার একটুও ধারণা না থাকা মামলাকে দুর্বল করে। তখন সেটা পরিষ্কার হয়, এখানে কারও না কারও স্বার্থ রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যেসব মামলা চলছিল, তা সংশোধিত আইনেও চলবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। আজ সোমবার প্রসিকিউশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ -এর সংশোধনী তুলে ধরতেই সংবাদ সম্মেলনের আ
১২ ঘণ্টা আগেজুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ আরও ৪৫ জনকে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে
১২ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর বেঞ্চ রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেওয়া হয়
১৫ ঘণ্টা আগেসংস্কারের অংশ হিসেবে গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রায়ণের পথ খোঁজা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ।
১৫ ঘণ্টা আগে