সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের এনবিআর মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছে, এটা হতে পারে না। রং ডিসিশন। ভ্যাট বসলে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হবে। ভারতে মেট্রোরেলে কি ভ্যাট আছে? ভারতে ভ্যাট নেই, আমরা কেন করব? আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’ 

আজ রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা মেট্রোরেলের ব্র্যান্ডিং সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের এসব কথা বলেন। 

কাদের বলেন, ভ্যাট বসলে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হবে। আমি মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি তুলে ধরেছি। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। 

ঢাকার উন্নয়ন নিয়ে কাদের বলেন, এই ঢাকা সিটি, যেটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নে-অর্জনে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশের রাজধানী এখন ইকোনমিস্টের পর্যবেক্ষণে মোস্ট আন বিলিভ্যাবল সিটি অব দ্য ওয়ার্ল্ড। 

বহির্বিশ্বের পরিবহনের সঙ্গে তুলনা করে কাদের বলেন, এই শহরে যে বাসগুলো চলে, এখানে এত গরিব বাস। টিভিতে দেখি, আফ্রিকায় ছোট ছোট গাড়ি চলে, সেগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। অথচ এই শহরের বাসগুলো জরাজীর্ণ। 

মন্ত্রী বলেন, ‘এই জরাজীর্ণ বাস নিয়ে আমরা মিটিং করে বিআরটিএর সঙ্গে কথা বলেও সমাধান করতে পারিনি। ঢাকার সঙ্গে এসব যায় না। আজ আমাদের বুড়িগঙ্গা শেষ, কর্ণফুলীও শেষ।’ 

কাদের বলেন, ‘আমাদের মেট্রোরেল অনেক সুন্দর, শব্দদূষণ নেই। অথচ পিলারগুলো পোস্টার দিয়ে ভরা। অপরিচ্ছন্ন নোংরা। মেট্রোরেল আমাদের সম্পদ। ২০৩০ সালে আমাদের টার্গেট ছিল ছয়টি এমআরটি লাইনের কাজ শেষ হবে। ১ ও ৫-এর গ্রাউন্ড ম্যাপিং হয়ে গেছে। 

প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা নিয়ে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ব্রেইনে আজ মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এই বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর যে বহুমুখী পরিকল্পনা। এই ঢাকা তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। যারা ইউজার, তারা যেন মূল্যবান সম্পদ রক্ষা করে।’ 

কাদের মেয়রের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাকে সহযোগিতা করুন। যে বাসগুলো চলে, ভীষণ খারাপ লাগে। এত আধুনিক মেট্রোরেল থেকে নেমে গরিব গরিব বাস, জীর্ণশীর্ণ বাস দেখতে কেমন লাগে। আমাদের মালিকেরা কি লজ্জা পায় না? তারা কি বিদেশে যান না, দেখেন না?’ 

জানিয়েছেন, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হলে ডিএমটিসিএলের ওপর চাপ বাড়বে। তখন এটা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে। 

ছিদ্দিক বলেন, এর আগে মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো হয়েছিল। তখন কথা বলে জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন সেটা আবার ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা বলা হচ্ছে। যদি ভ্যাট দিতে হয়, তাহলে এটি যাত্রীর দিতে হবে। তাই এটি রিভিউ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। 

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকা বাংলাদেশে প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহোদি।