অনলাইন ডেস্ক
ফেসবুক লাইভে ধর্ম অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় সম্প্রতি শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে (জেলা জজ পদমর্যাদার) বদলি করা হয়েছে। ফেসবুক লাইভে আল্লাহ, ঈশ্বর ও ভগবান নিয়ে স্পর্শকাতর ও অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছিলেন বলে আইন মন্ত্রণালয়ের বদলি আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই বিচারক অবসর সময়ে লেখালেখি ও গানের সুর করতেন। ‘গানে জ্ঞানে’ নামে তাঁর একটি ইউটিউব চ্যানেলও ছিল। নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ধর্ম অবমাননাকর কথাবার্তা বলেছিলেন তিনি। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর তাঁর ফেসবুক আইডি ও ইউটিউব চ্যানেল ডিজেবল রয়েছে।
এই ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অনুসরণীয় নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) এস কে এম তোফায়েল হাসানের সই করা এ-সংক্রান্ত সার্কুলার গত রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জারি করা সার্কুলারে (নম্বর-৪ জে) প্রদত্ত নির্দেশনা প্রতিপালন করছেন না।
কোনো কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা বিচারিক কর্মঘণ্টার মধ্যেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের চেম্বার অথবা কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বরত অবস্থায় তোলা ছবি বা ভিডিও আপলোড করছেন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ভঙ্গকারী ছবি পাবলিক পোস্ট হিসেবে আপলোড করছেন। অন্যের আপলোড করা ছবি, ভিডিও বা কনটেন্ট শেয়ার বা তাতে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্যও করছেন।
এ ছাড়া রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে মন্তব্য/শেয়ার করছেন এবং ইউটিউব বা অন্য কোনো মাধ্যমে নিজ বা ছদ্মনামে চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করাসহ অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন অনুষ্ঠানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করছেন।
কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডের ফলে বিচার বিভাগ সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিত।
এ অবস্থায় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রদত্ত অনুসরণীয় নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অনুসরণীয় নির্দেশনা জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির আদেশে রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা জারি করা হয়। সেটিই আবার সংশ্লিষ্টদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার, স্মার্টফোন এবং অনুরূপ যেকোনো ডিভাইসের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির তথ্য, ছবি, অডিও ও ভিডিও আদান-প্রদান করা যায়। তবে অতিমাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ফলে এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয়, যা ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘সকল সরকারি কর্মচারীদের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৬’ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে কোনো নীতিমালা বা নির্দেশিকা গ্রহণ করা হয়নি। বর্ণিত অবস্থায় ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফরম’-এর সুপারিশক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনুসরণীয় নির্দেশনা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে যেসব বিষয় অনুসরণ করতে হবে-
ক. প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
খ. প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
গ. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং বিচারকসুলভ মনোভাব অবলম্বন করতে হবে।
ঘ. অপ্রয়োজনীয় বা গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেওয়া যাবে না।
ঙ. বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল/গ্রুপ থাকতে পারে, যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ব্যতীত কেবল আইনগত বিষয়ে একাডেমিক আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে।
চ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
ছ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।
জ. বাস্তব ও স্বাভাবিক অবস্থায় সহকর্মীদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াসংক্রান্ত নিয়মনীতি, করণীয় ও বর্জনীয় দিকসমূহের প্রতিফলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিশ্চিত করতে হবে।
যে বিষয়গুলো পরিহার করতে হবে
ক. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো প্রকার তথ্য, মন্তব্য ও অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
খ. কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
গ. রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনাসংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ঘ. কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয়প্রতিপন্নমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ঙ. কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয়প্রতিপন্ন করে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
চ. লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ছ. জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রচার ও প্রকাশ।
জ. কোনো মামলাসংক্রান্তে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।
ঝ. নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।
ঞ. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ ও প্রচার।
ট. অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, মানহানিকর এবং নৈতিকতা পরিপন্থী কোনো স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদিতে অন্যজনকে সংযুক্তকরণ (ট্যাগিং), আদান-প্রদান (শেয়ারিং), প্রকাশ ও প্রচার।
এ ছাড়া, বিচারিক কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে এই সময় (৯.৩০ থেকে ৪: ৩০) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কঠোরভাবে পরিহার করতে হবে।
তা ছাড়া বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট প্রচারিত এই নির্দেশনা অমান্য করলে তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং সে ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭’ এর পাশাপাশি প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফেসবুক লাইভে ধর্ম অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় সম্প্রতি শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে (জেলা জজ পদমর্যাদার) বদলি করা হয়েছে। ফেসবুক লাইভে আল্লাহ, ঈশ্বর ও ভগবান নিয়ে স্পর্শকাতর ও অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছিলেন বলে আইন মন্ত্রণালয়ের বদলি আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই বিচারক অবসর সময়ে লেখালেখি ও গানের সুর করতেন। ‘গানে জ্ঞানে’ নামে তাঁর একটি ইউটিউব চ্যানেলও ছিল। নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ধর্ম অবমাননাকর কথাবার্তা বলেছিলেন তিনি। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর তাঁর ফেসবুক আইডি ও ইউটিউব চ্যানেল ডিজেবল রয়েছে।
এই ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অনুসরণীয় নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) এস কে এম তোফায়েল হাসানের সই করা এ-সংক্রান্ত সার্কুলার গত রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জারি করা সার্কুলারে (নম্বর-৪ জে) প্রদত্ত নির্দেশনা প্রতিপালন করছেন না।
কোনো কোনো বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা বিচারিক কর্মঘণ্টার মধ্যেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের চেম্বার অথবা কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বরত অবস্থায় তোলা ছবি বা ভিডিও আপলোড করছেন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ভঙ্গকারী ছবি পাবলিক পোস্ট হিসেবে আপলোড করছেন। অন্যের আপলোড করা ছবি, ভিডিও বা কনটেন্ট শেয়ার বা তাতে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্যও করছেন।
এ ছাড়া রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে মন্তব্য/শেয়ার করছেন এবং ইউটিউব বা অন্য কোনো মাধ্যমে নিজ বা ছদ্মনামে চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করাসহ অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন অনুষ্ঠানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করছেন।
কতিপয় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডের ফলে বিচার বিভাগ সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিত।
এ অবস্থায় বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রদত্ত অনুসরণীয় নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অনুসরণীয় নির্দেশনা জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির আদেশে রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা জারি করা হয়। সেটিই আবার সংশ্লিষ্টদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার, স্মার্টফোন এবং অনুরূপ যেকোনো ডিভাইসের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির তথ্য, ছবি, অডিও ও ভিডিও আদান-প্রদান করা যায়। তবে অতিমাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ফলে এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয়, যা ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘সকল সরকারি কর্মচারীদের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৬’ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে কোনো নীতিমালা বা নির্দেশিকা গ্রহণ করা হয়নি। বর্ণিত অবস্থায় ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফরম’-এর সুপারিশক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনুসরণীয় নির্দেশনা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে যেসব বিষয় অনুসরণ করতে হবে-
ক. প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
খ. প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
গ. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং বিচারকসুলভ মনোভাব অবলম্বন করতে হবে।
ঘ. অপ্রয়োজনীয় বা গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেওয়া যাবে না।
ঙ. বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল/গ্রুপ থাকতে পারে, যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ব্যতীত কেবল আইনগত বিষয়ে একাডেমিক আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে।
চ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
ছ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।
জ. বাস্তব ও স্বাভাবিক অবস্থায় সহকর্মীদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াসংক্রান্ত নিয়মনীতি, করণীয় ও বর্জনীয় দিকসমূহের প্রতিফলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিশ্চিত করতে হবে।
যে বিষয়গুলো পরিহার করতে হবে
ক. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো প্রকার তথ্য, মন্তব্য ও অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
খ. কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
গ. রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনাসংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ঘ. কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয়প্রতিপন্নমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ঙ. কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয়প্রতিপন্ন করে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
চ. লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।
ছ. জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রচার ও প্রকাশ।
জ. কোনো মামলাসংক্রান্তে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।
ঝ. নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।
ঞ. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ ও প্রচার।
ট. অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, মানহানিকর এবং নৈতিকতা পরিপন্থী কোনো স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদিতে অন্যজনকে সংযুক্তকরণ (ট্যাগিং), আদান-প্রদান (শেয়ারিং), প্রকাশ ও প্রচার।
এ ছাড়া, বিচারিক কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে এই সময় (৯.৩০ থেকে ৪: ৩০) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কঠোরভাবে পরিহার করতে হবে।
তা ছাড়া বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট প্রচারিত এই নির্দেশনা অমান্য করলে তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং সে ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭’ এর পাশাপাশি প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশে প্রতিদিন ১ হাজার ৩৪০টি অপরিণত শিশুর জন্ম হচ্ছে। সে হিসাবে ঘণ্টায় অপরিণত শিশুর জন্ম হচ্ছে ৫৬টি। দেশে অপরিণত শিশু জন্মে প্রতিরোধ কার্যক্রমে গতি নেই। এখনো বছরে সাড়ে চার লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম হচ্ছে।
১৯ মিনিট আগেমেট্রোরেল চালানো কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ পদে আর আমলা-নির্ভরতা থাকছে না। গত ৯ অক্টোবর প্রকাশিত নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এমডি পদের জন্য সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে
১ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকার গঠিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন (জেআরসি) বিচার বিভাগের প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে অংশীজনদের মতামত গ্রহণের জন্য একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে। ২৩ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সাধারণ জনগণসহ বিচারক, আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্ট সহায়ক কর্মচারীদের কাছে মতামত চেয়েছে কমি
৯ ঘণ্টা আগেফৌজদারি মামলায় কোনো আসামি আদালত থেকে অব্যাহতি পেলেও তিনি পুরোপুরি বিপদমুক্ত হন না। তার বিপদ কিছুটা থেকেই যায়। তবে ফৌজদারি মামলায় চার্জ গঠনের পর খালাস পেলে আসামি বিপদমুক্ত হন। একটি ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়রা আদালত।
১১ ঘণ্টা আগে