সারা দেশে ২৬৮ থানার কার্যক্রম শুরু

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ৫৭
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ২০: ১৫

ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনর্গঠনে থানার কার্যক্রম শুরু চেষ্টা করছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু জীবনের নিরাপত্তাসহ আরও বেশ কয়েকটি দাবিতে কর্মবিরতিতে থেকে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশের অধীনস্থ সদস্যরা।

এর মধ্যে কাজে ফিরতে পুলিশ মহাপরিদর্শক ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। কিন্তু বেঁধের দেওয়া সময়ের একদিন পরও আজ সারা দেশে মাত্র এক তৃতীয়াংশ থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সারা দেশে ২৬৮টি কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট থাকা মহানগর পুলিশেরও (ডিএমপি) ২৯টি থানা কার্যক্রম শুরু হয়। রাতের মধ্যে আরও কয়েকটি থানা কার্যক্রমে যাবে। থানাগুলোর নিরাপত্তায় সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী। চালু হওয়া থানাগুলোতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সাধারণ ডায়েরিও হয়েছে। জানা যায়, সারা দেশে থানার সংখ্যা ৬৫২টি। আর ডিএমপিতে আছে ৫০টি থানা।

ছাত্র-জনতার বিপুল গণ–আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা হতে থাকে। নির্বিচারে আক্রমণ হতে থাকে থানায়, ভাঙচুর-লুটপাটও করা হয় অনেক থানায়। এসব হামলায় বহুসংখ্যক পুলিশ হতাহত হলে অন্যরা নিরাপদে সরে যেতে থাকেন। গা ঢাকা দেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে দেশের পুলিশি ব্যবস্থা।

এদিকে পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পর নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে পুলিশের অধস্তনরা। পুলিশ সদস্যদের দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রাজনীতিবিদদের তাঁবেদারি করার কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। এমনকি নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে সরকারকে বাঁচাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর হুকুম দেয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকলে পুলিশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করতে থাকে আন্দোলনকারীরা।

অধস্তন সদস্যরা পুলিশকে রাজনীতিতে না জড়ানোর এই সংস্কারে আন্দোলনে নেমে থানার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানার কার্যক্রম শুরু হয়। থানার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা কাজ করছে, সঙ্গে দেখা গেছে আনসার সদস্যদের। থানার কার্যক্রম শুরুর আগে তেজগাঁও থানা-পুলিশের সহায়তায় স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করে সেনাবাহিনী। সাধারণ মানুষ থানার কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট কোম্পানি অধিনায়ক শাখাওয়াত খন্দকার। তিনি বলেন, ‘আমরা স্থানীয়দের চিনি না। পুলিশের সহায়তায় সমাজের গ্রহণযোগ্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তেজগাঁও থানা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।’

তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘জনগণকে বলব, আমাদের আস্থায় নেওয়ার জন্য। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এটা অস্বীকার করব না যে, আমাদের ভুল বা ব্যর্থতার জন্য আজকের এই অবস্থা। এগুলো ওভারকাম করে আগামী দিনে সত্যিকারে মানুষের প্রয়োজনে যাতে এই বাহিনী থাকতে পারে, আমি আমার সহকর্মীদের নিয়ে এই সেবাগুলো অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব।’

অন্যদিকে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে এবং তাঁদের অভিযোগ শুনতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে উপস্থিত হয়েছেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘সম্প্রতি যেই ঘটনা ঘটে গেছে, এখানে আমাদের অসংখ্য ছাত্র–জনতা নিহত হয়েছে। আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য শহীদ হয়েছেন। জানমাল রক্ষার জন্য তাঁদের আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। এই কষ্ট যেমন আপনার, সেই কষ্ট আমাদের প্রত্যেকের। এখন যেই ঘটনা হয়ে গেছে, যেই ক্ষতি হয়ে গেছে—সেটি কোনো মতোই পূরণীয় নয়।’

আবার প্রশাসনিক কারণে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের কাজে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। তাঁদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়, পুলিশের সব ইউনিটে প্রশাসনিক কারণে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার (কনস্টেবল থেকে এসআই, ডিএমপিতে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পর্যন্ত) আদেশ প্রত্যাহার করতে আদেশক্রমে নির্দেশ দেওয়া হলো।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত