পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে সশস্ত্র বাহিনীসহ সব বাহিনীকে সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাসস, ঢাকা
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৬: ৩৮
Thumbnail image

আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিরোধিতাকারীরা যাতে কোনো রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে, সে জন্য সশস্ত্র বাহিনীসহ সব বাহিনীকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে এই নির্দেশ দেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো এত বড় একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। কিন্তু যারা সেতু নির্মাণের বিরোধিতা করেছিল, তাদের একটা উদ্দেশ্য রয়েছে, যার কিছু কিছু তথ্যও আমরা পেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, এমন একটা ঘটনা ঘটানো হবে, যাতে ২৫ তারিখে আমরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে না পারি। বিরোধিতাকারীরা কী করবে, তা কিন্তু আমরা জানি না।’ 

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি এবং আনসার ও ভিডিপির প্রধানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের সবাইকে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। সমস্ত বিষয়টাই একটু রহস্যজনক। এ জন্য সবাইকে বলব, একটু সতর্ক থাকতে হবে এবং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দিকেও সবাইকে নজর দিতে হবে। সেগুলোর নিরাপত্তা দিতে হবে।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ভুয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ দেশের ব্যক্তিবিশেষের প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলে তাঁর সরকার ঘোষণা দিয়েছিল নিজেদের অর্থায়নে করবে, না হলে করবে না। তাঁর সরকার সেই পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থে নির্মাণ করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন, রেলে আগুন, লঞ্চে আগুন, ফেরিতে আগুন—এমনকি সীতাকুণ্ডে যে আগুনটা, সেটা একটা জায়গা থেকে লাগতে পারে। কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা জায়গায় আগুন লাগে কীভাবে?’ আর রেলের আগুনের বিষয়ে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে, যেখানে দেখা গেছে রেলের চাকার নিকটে আগুন জ্বলছে, সেটা কী করে সম্ভব সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। 

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিকে মানুষের নাগালের মধ্যে এনে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু এসবের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ সৃষ্টির অপপ্রয়াস সম্পর্কেও সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, এই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা যেমন একদিকে আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠী তাদের নানা কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে থাকে। সে জন্য তাঁর সরকার আধুনিক বিশ্ব ও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসএসএফসহ অন্যান্য বাহিনীকে প্রযুক্তিনির্ভর করে শক্তিশালীভাবে গড়ে তুলছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, কারণ, আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং বিভিন্ন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকেও দমন করতে হবে। অতীতে বিভিন্ন বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণেই তাঁর সরকার জোট সরকারের আমলে সৃষ্ট সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে এবং মনে রাখতে হবে, আমরা যখন এগিয়ে যাই, তখনই এ ধরনের ঘটনা কোনো কোনো মহল ঘটানোর চেষ্টা করে থাকে। এটাই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। সে জন্য সবাইকে আমি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত