অনলাইন ডেস্ক
ঢাকার সব কূটনীতিক, মন্ত্রী, সচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার চলাচলের সময় নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে পুলিশকে সরিয়ে আনসার সদস্যদের দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতদের জন্য বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তাও থাকছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে এই রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই পরিস্থিতি নাই, তাই বাড়তি সুবিধারও প্রয়োজন নাই।
২০১৬ সালে ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় বিদেশিসহ ২০ জনের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে পুলিশের কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগ চালু করা হয়। তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বাড়তি প্রটোকল পেতেন।
সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে প্রটোকলেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ, প্রটোকলের জন্য কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য রাখতে হয়। সেই জন্য আনসার সদস্য দিয়ে প্রটোকল ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। অবশ্য কোনো দূতাবাস চাইলে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে পুলিশের নিরাপত্তা সুবিধা নিতে পারবেন।
কূটনীতিকদের পুলিশি নিরাপত্তা প্রত্যাহারে আন্তর্জাতিক কোনো বিধির ব্যত্যয় হয়নি বলে সরকারের দাবি। তবে বিরোধী দল বিএনপি বলছে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত বিদেশিদের সঙ্গে সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এ বিষয়ে অন্য কোনো দেশের প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও যুক্তরাষ্ট্র মন্তব্য করেছে। সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কোনো আপত্তি তুলেনি দেশটি। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ২০১৮ সালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট ব্লুমের গাড়িবহরে হামলা এবং এ বছর নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে আসে।
তবে বেদান্ত প্যাটেল বাংলাদেশকে ভিয়েনা কনভেনশন প্রতিপালনের আহ্বান জানান। এই কনভেনশনে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কী বলা হয়েছে, তা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
ভিয়েনা কনভেনশন কী?
১৯৬১ সালে ভিয়েনায় জাতিসংঘে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ে এক চুক্তি হয়। যা ‘ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন্স’ বা ভিয়েনা কনভেনশন হিসেবে পরিচিত।
স্বাধীন দেশগুলো তখন চুক্তিতে সই করেছিল। পরে ধাপে ধাপে যেসব দেশ স্বাধীন হতে থাকে তারাও এই চুক্তিতে নিজেদের অন্তর্ভূক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর এই চুক্তিতে সই করে ।
বহুকাল থেকেই এক দেশের কূটনীতিকেরা আরেক দেশে অবস্থান করে আসছেন। কিন্তু তাঁরা কী ধরণের সুবিধা পাবেন বা তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে—সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নীতি ছিল না।
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা, বাসস্থান ও আইন প্রয়োগসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করে থাকে গ্রাহক দেশ।
কূটনীতিক মিশন প্রেরণকারী দেশ মিশনের জন্য বরাদ্দকৃত অফিস সীমার বাইরে অন্য কোনো জায়গায় কোনো অফিস স্থাপন করতে পারবে না।
মিশনের প্রধানকে ওই মিশন এলাকা-সম্পর্কিত বিষয়ে সব ধরনের জাতীয়, আঞ্চলিক বা মিউনিসিপ্যালের বকেয়া ও করের বাইরে রাখতে হবে অর্থাৎ তাদের এ-সম্পর্কিত কোনো কর দিতে হয় না।
কূটনীতিক মিশনের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার এবং কূটনীতিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের গৃহকর্মে ব্যবহৃত যেকোনো পণ্য আনা হলে তা সব ধরনের শুল্ক ও করের বাইরে থাকবে।
নিরাপত্তা নিয়ে ভিয়েনা কনভেনশনে যা আছে
ভিয়েনা কনভেনশনের ২২ ধারায় আছে, বিদেশি কূটনীতিক মিশনের অফিস এলাকায় মিশনপ্রধানের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের প্রতিনিধি প্রবেশ করতে পারবে না।
তবে কূটনীতিক মিশনের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে গ্রাহক দেশকেই। কোনো অনুপ্রেবশ বা ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা এবং মিশনের শান্তিহানি ও মর্যাদাহানি প্রতিরোধ করতে হবে। কূটনীতিক মিশনের প্রাঙ্গণ এবং তাদের যানবাহনে তল্লাশি, সেটি ব্যবহার, বাজেয়াপ্ত বা সংযুক্তি কোনো কিছুই করা যাবে না। মারাত্মক কোনো অভিযোগ থাকলে কূটনীতিক এজেন্টদের ব্যাগ তল্লাশি করা যাবে।
২৬ ধারায় বলা হয়েছে, কূটনীতিক মিশনের সব সদস্য গ্রহীতা দেশের সবখানে স্বাধীন ও অবাধে চলাচল করতে পারবেন। শুধু জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সংরক্ষিত এলাকায় তাঁদের প্রবেশ সীমাবদ্ধ হবে।
২৭ ধারায় বলা হয়েছে, সব ধরনের দাপ্তরিক উদ্দেশ্যে মিশনের দিক থেকে অবাধ যোগাযোগ গ্রহীতা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। মিশন প্রেরক রাষ্ট্রের সরকার, অন্য মিশন ও কনস্যুলেটে—অবস্থান যেখানেই থাকুক না কেন—ডিপ্লোম্যাটিক কুরিয়ার, কোডে বার্তা বা সাইফারসহ যেকোনো যথার্থ মাধ্যম মিশন ব্যবহার করতে পারবে এবং এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে হবে। তবে অয়ারলেস ট্রান্সমিটার ব্যবহারে মিশন গ্রহীতা রাষ্ট্রের অনুমতি নিতে হবে।
২৯ ধারা অনুযায়ী, বিদেশি কূটনীতিকদের আটক বা গ্রেপ্তার করা যাবে না। তাঁরা গ্রাহক দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার বাইরে থাকবে। এমনকি তাঁরা কোনো ঘটনায় সাক্ষ্য দিতে বাধ্য থাকবেন না।
৩০ ধারায় বলা হয়েছে, মিশন প্রাঙ্গণের মতোই কূটনীতিকদের বাসভবন এবং নথিপত্র, আদান-প্রদান ও সম্পত্তিও একই রকম নিরাপত্তা পাবে।
৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্কোচ্ছেদ বা মিশন প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে—সশস্ত্র সংঘাতের ক্ষেত্রেও মিশন প্রাঙ্গণ, সম্পত্তি ও আর্কাইভ রক্ষার দায়িত্ব গ্রহীতা রাষ্ট্রের। এ ক্ষেত্রে গ্রহীতা রাষ্ট্রের সম্মতিক্রমে তৃতীয় কোনো দেশকে মিশনের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিতে পারবে প্রেরক রাষ্ট্র।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ যেকোনো রাজনৈতিক সংকট এলেই তৎপর হতে দেখা যায় বিদেশি কূটনীতিকদের।
কূটনীতিকদের নানা মন্তব্যকে সরকারি দল বিভিন্ন সময়ে পাত্তা না দিলেও বিরোধী দলগুলো বরাবরই তাঁদের মন্তব্যকে সমর্থন করে থাকে। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে ভিয়েনা কনভেনশনের যে ধারার কথা বলা হয়, তা চুক্তির ৪১ নম্বর ধারা।
এই ধারায় বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি অন্য কোনো দেশে কূটনীতিকের মর্যাদা ও সুবিধা ভোগ করেন; তাঁরা ওই দেশের আইন ও নীতি মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন। তাঁরা ওই দেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।
এই ধারায় আরও দুটি উপধারা রয়েছে। যেমন ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, প্রেরক দেশ কূটনীতিক মিশনের ওপর ন্যস্ত সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ গ্রাহক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা এ-সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হতে হবে।
মিশন অফিসের প্রাঙ্গণ মিশনের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়—এমন কোনো উদ্দেশ্যে কূটনীতিকেরা ব্যবহার করতে পারবেন না।
সূত্র: জাতিসংঘের ‘ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন্স’
আরও পড়ুন:
ঢাকার সব কূটনীতিক, মন্ত্রী, সচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার চলাচলের সময় নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে পুলিশকে সরিয়ে আনসার সদস্যদের দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতদের জন্য বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তাও থাকছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে এই রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই পরিস্থিতি নাই, তাই বাড়তি সুবিধারও প্রয়োজন নাই।
২০১৬ সালে ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় বিদেশিসহ ২০ জনের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে পুলিশের কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগ চালু করা হয়। তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বাড়তি প্রটোকল পেতেন।
সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে প্রটোকলেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ, প্রটোকলের জন্য কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য রাখতে হয়। সেই জন্য আনসার সদস্য দিয়ে প্রটোকল ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। অবশ্য কোনো দূতাবাস চাইলে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে পুলিশের নিরাপত্তা সুবিধা নিতে পারবেন।
কূটনীতিকদের পুলিশি নিরাপত্তা প্রত্যাহারে আন্তর্জাতিক কোনো বিধির ব্যত্যয় হয়নি বলে সরকারের দাবি। তবে বিরোধী দল বিএনপি বলছে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত বিদেশিদের সঙ্গে সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এ বিষয়ে অন্য কোনো দেশের প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও যুক্তরাষ্ট্র মন্তব্য করেছে। সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কোনো আপত্তি তুলেনি দেশটি। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ২০১৮ সালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট ব্লুমের গাড়িবহরে হামলা এবং এ বছর নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে আসে।
তবে বেদান্ত প্যাটেল বাংলাদেশকে ভিয়েনা কনভেনশন প্রতিপালনের আহ্বান জানান। এই কনভেনশনে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কী বলা হয়েছে, তা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
ভিয়েনা কনভেনশন কী?
১৯৬১ সালে ভিয়েনায় জাতিসংঘে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ে এক চুক্তি হয়। যা ‘ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন্স’ বা ভিয়েনা কনভেনশন হিসেবে পরিচিত।
স্বাধীন দেশগুলো তখন চুক্তিতে সই করেছিল। পরে ধাপে ধাপে যেসব দেশ স্বাধীন হতে থাকে তারাও এই চুক্তিতে নিজেদের অন্তর্ভূক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর এই চুক্তিতে সই করে ।
বহুকাল থেকেই এক দেশের কূটনীতিকেরা আরেক দেশে অবস্থান করে আসছেন। কিন্তু তাঁরা কী ধরণের সুবিধা পাবেন বা তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে—সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নীতি ছিল না।
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা, বাসস্থান ও আইন প্রয়োগসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করে থাকে গ্রাহক দেশ।
কূটনীতিক মিশন প্রেরণকারী দেশ মিশনের জন্য বরাদ্দকৃত অফিস সীমার বাইরে অন্য কোনো জায়গায় কোনো অফিস স্থাপন করতে পারবে না।
মিশনের প্রধানকে ওই মিশন এলাকা-সম্পর্কিত বিষয়ে সব ধরনের জাতীয়, আঞ্চলিক বা মিউনিসিপ্যালের বকেয়া ও করের বাইরে রাখতে হবে অর্থাৎ তাদের এ-সম্পর্কিত কোনো কর দিতে হয় না।
কূটনীতিক মিশনের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার এবং কূটনীতিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের গৃহকর্মে ব্যবহৃত যেকোনো পণ্য আনা হলে তা সব ধরনের শুল্ক ও করের বাইরে থাকবে।
নিরাপত্তা নিয়ে ভিয়েনা কনভেনশনে যা আছে
ভিয়েনা কনভেনশনের ২২ ধারায় আছে, বিদেশি কূটনীতিক মিশনের অফিস এলাকায় মিশনপ্রধানের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের প্রতিনিধি প্রবেশ করতে পারবে না।
তবে কূটনীতিক মিশনের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে গ্রাহক দেশকেই। কোনো অনুপ্রেবশ বা ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা এবং মিশনের শান্তিহানি ও মর্যাদাহানি প্রতিরোধ করতে হবে। কূটনীতিক মিশনের প্রাঙ্গণ এবং তাদের যানবাহনে তল্লাশি, সেটি ব্যবহার, বাজেয়াপ্ত বা সংযুক্তি কোনো কিছুই করা যাবে না। মারাত্মক কোনো অভিযোগ থাকলে কূটনীতিক এজেন্টদের ব্যাগ তল্লাশি করা যাবে।
২৬ ধারায় বলা হয়েছে, কূটনীতিক মিশনের সব সদস্য গ্রহীতা দেশের সবখানে স্বাধীন ও অবাধে চলাচল করতে পারবেন। শুধু জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সংরক্ষিত এলাকায় তাঁদের প্রবেশ সীমাবদ্ধ হবে।
২৭ ধারায় বলা হয়েছে, সব ধরনের দাপ্তরিক উদ্দেশ্যে মিশনের দিক থেকে অবাধ যোগাযোগ গ্রহীতা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। মিশন প্রেরক রাষ্ট্রের সরকার, অন্য মিশন ও কনস্যুলেটে—অবস্থান যেখানেই থাকুক না কেন—ডিপ্লোম্যাটিক কুরিয়ার, কোডে বার্তা বা সাইফারসহ যেকোনো যথার্থ মাধ্যম মিশন ব্যবহার করতে পারবে এবং এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে হবে। তবে অয়ারলেস ট্রান্সমিটার ব্যবহারে মিশন গ্রহীতা রাষ্ট্রের অনুমতি নিতে হবে।
২৯ ধারা অনুযায়ী, বিদেশি কূটনীতিকদের আটক বা গ্রেপ্তার করা যাবে না। তাঁরা গ্রাহক দেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার বাইরে থাকবে। এমনকি তাঁরা কোনো ঘটনায় সাক্ষ্য দিতে বাধ্য থাকবেন না।
৩০ ধারায় বলা হয়েছে, মিশন প্রাঙ্গণের মতোই কূটনীতিকদের বাসভবন এবং নথিপত্র, আদান-প্রদান ও সম্পত্তিও একই রকম নিরাপত্তা পাবে।
৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্কোচ্ছেদ বা মিশন প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে—সশস্ত্র সংঘাতের ক্ষেত্রেও মিশন প্রাঙ্গণ, সম্পত্তি ও আর্কাইভ রক্ষার দায়িত্ব গ্রহীতা রাষ্ট্রের। এ ক্ষেত্রে গ্রহীতা রাষ্ট্রের সম্মতিক্রমে তৃতীয় কোনো দেশকে মিশনের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিতে পারবে প্রেরক রাষ্ট্র।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ যেকোনো রাজনৈতিক সংকট এলেই তৎপর হতে দেখা যায় বিদেশি কূটনীতিকদের।
কূটনীতিকদের নানা মন্তব্যকে সরকারি দল বিভিন্ন সময়ে পাত্তা না দিলেও বিরোধী দলগুলো বরাবরই তাঁদের মন্তব্যকে সমর্থন করে থাকে। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে ভিয়েনা কনভেনশনের যে ধারার কথা বলা হয়, তা চুক্তির ৪১ নম্বর ধারা।
এই ধারায় বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি অন্য কোনো দেশে কূটনীতিকের মর্যাদা ও সুবিধা ভোগ করেন; তাঁরা ওই দেশের আইন ও নীতি মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন। তাঁরা ওই দেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।
এই ধারায় আরও দুটি উপধারা রয়েছে। যেমন ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, প্রেরক দেশ কূটনীতিক মিশনের ওপর ন্যস্ত সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ গ্রাহক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা এ-সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হতে হবে।
মিশন অফিসের প্রাঙ্গণ মিশনের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়—এমন কোনো উদ্দেশ্যে কূটনীতিকেরা ব্যবহার করতে পারবেন না।
সূত্র: জাতিসংঘের ‘ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোম্যাটিক রিলেশন্স’
আরও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার মত বা সুপারিশ করেছেন সংশ্লিষ্টজনেরা। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা এবং মতামত-সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন মনে করছে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের পরই হতে পারে স্থানীয় নির্বাচন। আবার এ নির্বাচন আলাদাভাবে না করে একসঙ্গে করা যায় কি না, সেটাও রয়
১ ঘণ্টা আগেউন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার পর প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ির বেশির ভাগই সরকারি দপ্তরে জমা হয় না। প্রভাবশালীরা কৌশলে এসব গাড়ি ব্যবহার করেন। ফলে প্রকল্পের গাড়ির ব্যবহার ও জমা দেওয়ার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
২ ঘণ্টা আগেবিচারপতি রুহুল আমিনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শোকবার্তায় তিনি মরহুমের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেদেশে প্রতিদিন ১ হাজার ৩৪০টি অপরিণত শিশুর জন্ম হচ্ছে। সে হিসাবে ঘণ্টায় অপরিণত শিশুর জন্ম হচ্ছে ৫৬টি। দেশে অপরিণত শিশু জন্মে প্রতিরোধ কার্যক্রমে গতি নেই। এখনো বছরে সাড়ে চার লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম হচ্ছে।
৩ ঘণ্টা আগে