অজ্ঞতার কারণে সাইবার হয়রানির শিকার হন গ্রামীণ নারীরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ২১: ৫০
Thumbnail image

দেশে বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যেমন বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে সাইবার হয়রানি। গ্রামীণ নারীরাও এর বাইরে নেই। ফেসবুক, ইমোসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাইবার হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রামীণ নারী ও কিশোরীরা। সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে এমন হয়রানির মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। 

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণকারী বক্তারা অনলাইনে নারী ও কিশোরীদের যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতার পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্যে জানানো হয়, ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও ছেড়ে দেওয়া, গোপন তথ্য বা একান্ত ব্যক্তিগত কথা বা ছবি ফাঁস, ব্ল্যাকমেলিং করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া অথবা জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি, ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের ধরে আইডি হ্যাক করা, যৌন নিপীড়নমূলক বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত কিশোরী ও নারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে। 

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ৩৬ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু অনলাইনে যৌন হয়রানির শিকার হয়। ২৭ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু পরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও আত্মীয় এবং ১৮ শতাংশ অপরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। বৈশ্বিক আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়েদের যত হয়রানি করা হয়, তার ৩৯ শতাংশ করা হয় ফেসবুকে, ২৩ শতাংশ ইনস্টাগ্রামে, ১৪ শতাংশ হোয়াটসঅ্যাপে। 

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির সচিবালয় সমন্বয়কারী ফেরদৌস আরা রুমী বলেন, ‘আমাদের দেশের গ্রামগুলোতে এখন ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপের মতো বিভিন্ন অ্যাপ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সচেতনতার অভাবে অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছে এবং হয়রানির শিকার হচ্ছে। এই হয়রানি প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।’ 

বক্তারা জানান, অনলাইনে সহিংসতা ও সাইবার হয়রানির শিকার হলে আইনি সহায়তা নেওয়ার কিছু হেল্প ডেস্ক রয়েছে। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন, সাইবার পুলিশ সেন্টার, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন (পিসিএসডব্লিউ), হ্যালো সিটি অ্যাপ, রিপোর্ট টু র‍্যাব অ্যাপ, ৯৯৯ এবং এগুলোর ফেসবুক পেজে অভিযোগ জানানো যায়। মানুষকে এই হেল্প ডেস্কগুলো সম্পর্কে জানানোর আহ্বান জানান বক্তারা। 

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি শামীমা আক্তার। 

১৯৯৫ সালে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের চতুর্থ নারী সম্মেলনে ১৫ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস হিসেবে পালনের কথা বলা হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে বিশ্বে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন দিবসটি পালন করছে। বাংলাদেশেও ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর বেসরকারিভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। 

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটি জানায়, দেশের ৫০টির বেশি জেলায় আগামীকাল রোববার আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদ্‌যাপন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত