মানবপ্রেমের গানে নতুন বছরকে স্বাগত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯: ৫০
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০: ২০

সূর্য উঠে গেছে ততক্ষণে। রমনার বটমূলে প্রস্তুত ছায়ানটের শিল্পীরা। ভোরের আলো ফুটতেই বাঁশির সুরে ভেসে এল রাগ ‘আহির ভৈরব’। বৈশাখী পোশাকে হাজির শত শত নারী-পুরুষ। এই সাতসকালে হাজির হয়েছে শিশুরাও। রমনা লেকের পাড়ে নিজেদের পরিবার নিয়ে বসেছে সবাই। কেউ বসেছে বটমূলের সামনে। ভোরের স্নিগ্ধ আলো ছাড়িয়ে সূর্যের তেজ ক্রমেই বাড়ছে আর চলছে শিল্পীদের কণ্ঠে গান ও পাঠ। এভাবেই বাংলা নতুন বছরকে বাঙালি স্বাগত জানাল নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। 

মর্তুজা কবির মুরাদের রাগালাপ ‘আহির ভৈরব’ পরিবেশনের পরে গাওয়া হয় ‘আঁধার রজনী পোহাল’। একে একে শিল্পীরা পরিবেশন করলেন ‘বিমল আনন্দে জাগো রে’, ‘তোমার সুর শোনায়ে’, ‘তিমির দুয়ার খোলো’, ‘প্রথম আলোক লহ প্রণিপাত’, ‘কারার ওই লৌহ কপাট’, ‘আমি টাকডুম টাকডুম বাজাই’সহ ২৯টি পরিবেশনা। 

অংশগ্রহণ করেন সত্যম কুমার দেবনাথ, তানিয়া মান্নান, এ টি এম জাহাঙ্গীর, রামেন্দু মজুমদার, শারমিন সাথী ইসলাম ময়না, খায়রুল আনাম শাকিল, চন্দনা মজুমদার, মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মনীষ সরকার, সেমন্তী মঞ্জরী, তাহমিদ ওয়াসিফ ঋভু, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, মুহাম্মদ কামরুল বাশার এবং ছায়ানটের শিল্পীরা। 

পরিবেশনার শেষের দিকে ছিল ছায়ানটের নববর্ষ কথন। ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ‘আজ ভোগবাদ ও রক্ষণশীলতার দাপটে আমরা নতুন সংকটের সম্মুখীন। হারাতে বসেছি বাঙালির স্বাভাবিকতা। আলগা হয়ে পড়ছে পারস্পরিক সম্প্রীতির বাঁধন। বিস্তার ঘটছে লোভ ও স্বার্থপরতার। চেনা মানুষও হয়ে উঠছে অচেনা। তৈরি হচ্ছে এক অস্বাভাবিক ও অসহিষ্ণু সমাজ।  অমানবিক এই অস্বাভাবিকতা থেকে বেরোতে হবে। নইলে বাঙালির প্রাণপ্রিয় এই নববর্ষ উদ্‌যাপনও হয়ে পড়বে কেবল একটি দিনের জন্য বাঙালি সাজবার উপলক্ষ।’ 

বর্ষবরণের আয়োজন থেকে নববর্ষের নবীন আলোয়, নবীন আশায়, নবজীবন লাভ করে সবাই যেন স্বাভাবিকতায় ফেরেন ও সম্প্রীতির সাধনায় নিজেদের নিমগ্ন করেন—এই প্রতিজ্ঞা করা হয়। জাতীয় সংগীত গেয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়। 

পাকিস্তান আমলে ১৯৬১ সালে মানুষের মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতি ও সংগীতের ঐতিহ্য প্রচার ও লালন করার লক্ষ্যে ছায়ানট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সংগঠনটি ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে প্রতিবছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। কেবল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কারণে ১৯৭১ সালে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনি ছায়ানট।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত