প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: যে কারণে পেছাল চূড়ান্ত ফল প্রকাশ  

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২২, ১৮: ০৭
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৪: ২১

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল আজ প্রকাশের কথা থাকলেও তা আবার পিছিয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ ফল প্রকাশের কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, সহকারী শিক্ষক পদের চূড়ান্ত ফল আজ প্রকাশের প্রস্তুতি থাকলেও কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করছি আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।

আজকে ফল প্রকাশ করা হবে এমনটা জানানোর পরেও কেন প্রকাশ করা হল না এমন প্রশ্ন অনেকের। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারণ হিসেবে টেকনিক্যাল সমস্যা বললেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, আজ ফল প্রকাশ করা হবে এমন খবর গণমাধ্যমে আসায় বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী পদ সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান ফটকে অবস্থান নেয়। কোনো রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শেষ মুহূর্তে আজ ফল প্রকাশ না করার নির্দেশ দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আজ ফল প্রকাশ হবে-বিষয়টি কীভাবে গণমাধ্যম জানল এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব।

এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আজ চূড়ান্ত ফল প্রকাশের কাজে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। এ সময় তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা। সেখান থেকে তাঁদের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আসার কথা ছিল। কিন্তু পদ সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে চাকরিপ্রার্থীরা প্রধান ফটকে অবস্থান নেওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে যাননি।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা আজ ফল প্রকাশের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিলেন।

পদ বাড়ছে না
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, সহকারী শিক্ষকের পদসংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা থাকলেও এটি হচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদেই নিয়োগ হচ্ছে। সে অনুসারে ৩২ হাজার ৫৭৭ পদেই নিয়োগ দেওয়া হবে।

যা আছে নিয়োগ বিধিতে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯-এর ৮ ধারার ২ নম্বর উপধারাতে (ঘ) বলা হয়েছে, ‘নির্ধারিত কোটার শিক্ষকদের মধ্যে প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে (নারী ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ ও অবশিষ্ট পুরুষ শতাংশ) অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তবে শর্ত থাকে, এভাবে ২০ শতাংশ কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে।’

জানা গেছে, এ নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা তিন ধাপে নেওয়া হলেও, চূড়ান্ত ফল একবারেই প্রকাশ করা হবে। প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪০ হাজার ৮৬২, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৫৯৫ এবং তৃতীয় ধাপে ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন।

২০২০ সালের ২০ অক্টোবর সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়োগ পরীক্ষায় মোট আবেদন করেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী।

বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৬২০ টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ শিক্ষক ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৩০ এবং নারী শিক্ষক ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৬ জন।

শিক্ষা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত