আনোয়ারুল হত্যাকাণ্ড: আ. লীগ নেতা গ্যাস বাবুকে এখনও গ্রেপ্তার দেখায়নি ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুন ২০২৪, ১৮: ৫৫
Thumbnail image

ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই জেলার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে (গ্যাস বাবু) এখনো হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। তাকে আটক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

কাজী কামাল আহমেদ ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। তাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে ডিবি। 

আজ শনিবার মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ এসব কথা বলেন।

ডিবি প্রধান বলেন, সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদকে আটক করা হয়েছে। তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে জানতে চাওয়া হচ্ছে। তবে এখনো তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে যদি তাঁর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তবে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। 

কলকাতায় উদ্ধার হওয়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অংশ বিশেষের ফরেনসিক পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য এমপির পরিবারের সদস্যরা খুব দ্রুত ভারতে যাবেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া ভারতের তদন্ত কর্মকর্তারাও পরিবারের সদস্যদের নাম ও মোবাইল নম্বর নিয়েছে। শিগগির তারা ডাকবে। যদি তারা ডাকে তবে ধরে নিতে হবে ডিএনএ টেস্টের জন্য ডেকেছে।

বাংলাদেশের সিআইডি’র ল্যাবে পরীক্ষা করা যায় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, আমি মনে করি সেখানে গেলে কম সময়ের ভেতরে হয়ে যাবে।

মূল হোতা আখতারুজ্জামান শাহীনকে ফেরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘শাহীন নেপাল থেকে দুবাই হয়ে আমেরিকা চলে গেছে। ভারতে যখন ছিলাম সেখানকার পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে, বৈঠক হয়েছে। যেহেতু ভারতে হত্যা হয়েছে সেহেতু শাহীন তাদের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। আমরাও কাজ করছি তারাও কাজ করছে। আমরা পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি’তে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। তারা হয়তো ইন্টারপোলের কাছে এসব বিষয় জানিয়েছে। বাংলাদেশের অ্যাম্বাসির সঙ্গে আমরা কথা বলছি। তবে এইটুকু বলতে পারি আনার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা যেখানে যেভাবে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’

হারুন বলেন, ‘সিয়ামকে ভারত নিয়ে গেছে। আনারকে হত্যা করে পৈশাচিক কায়দায় গুম করার বিষয়টি জানে সিয়াম ও জিয়াদ। এ দুজনই এখন তাদের কাছে রয়েছে। তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করলে ভালো ফল পাবে। প্রয়োজনে আমরাও সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। সিয়াম নেপালে আছে। সেই তথ্য পাওয়ার পরে আমরা এনসিবিকে চিঠি লিখেছি। এনসিবি দ্রুত কাঠমুন্ডু এনসিবিকে তথ্য পাঠিয়ে বলেছে সিয়ামকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য।’ 

ডিবি প্রধান বলেন, ‘কাঠমান্ডুতে গিয়ে অপরাধীরা লুকিয়ে থাকে, মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে, সেখানে অপরাধের একটা রুট হয়ে গেছে। নেপালের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন হোটেলে গিয়েছি। সব তথ্যই নিয়ে এসেছি। আমরা মনে করি এটা আমাদের একটা অর্জন, কারণ আমরা তথ্য দিয়েছি। ভারতও কাজ করছে। দুই দেশের তদন্ত কর্মকর্তারা পারস্পরিক সহযোগীতার মাধ্যমে কাজ করার কারণে ভালো ফলাফল আসছে।’ 

এদিকে ঢাকায় ডিবির হাতে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি আদালতে দায় স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছে। এ বিষয় হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তারাও দায় স্বীকার করেছে।’ 

বাংলাদেশে গ্রেপ্তার আসামিদের কি ভারত নিয়ে যেতে পারবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, ‘সেটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কথা বলতে হবে। আমরা আগেও যখন ভারত গিয়েছিলাম তখন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গিয়েছিলাম।’

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত