ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে সিপিডির গবেষণা ভূমিকা রেখেছে: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪৪
Thumbnail image
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানের মনন সৃষ্টিতে সিপিডির গবেষণা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অশেষ ভূমিকা রেখেছে। এ কারণে, এই প্রতিষ্ঠান সবসময় আমার কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।’

আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে সিপিডির ৩০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ধারণ করা এক ভিডিও ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সিপিডি সব সময় স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা করেছে এবং দেশের স্বার্থে নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সব সময় সিপিডি সচেষ্ট থেকেছে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষের সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের যে চেষ্টা আমি সারা জীবন ধরে করেছি, সিপিডির কাজে সব সময় তার প্রতিফলন দেখেছি। ৩০ বছরের দীর্ঘযাত্রায় সিপিডি দেশে-বিদেশে স্বনামধন্য থিংকট্যাংক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে আমাদের যখন কথা বলার সুযোগ সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, তখন সিপিডির অনুষ্ঠানে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর মতপ্রকাশে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে।’

বিগত আওয়ামী সরকার ভোটাধিকার হরণ করেছে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, ‘ভোটের অধিকার হরণ করলে, জনগণের অন্যান্য অধিকার বঞ্চিত করতেই হয়। বর্তমানে এমন একটি পরিবেশ এসেছে, সরকারব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের মধ্যেও সংস্কার করতে হচ্ছে। সংস্কার করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

সংস্কারকে চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংস্কার হতে হবে, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। কিছু মানুষ বসে চাপিয়ে দিলেই সংস্কার হবে না।’

‘দ্য সিপিডি জার্নি: মেমোরেটিং থার্টি ইয়ারস অব সিপিডি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘সিপিডি সরকার, বিরোধী দলসহ সব অংশীজনের সমন্বয়ে গঠনমূলক আলোচনার সূত্রপাত করতে পেরেছিল। দুঃখজনক হলো গত ১৫ বছরে তা বাধার মুখে পড়েছে। গত সরকারের অর্থমন্ত্রীদের কেউ সিপিডির সংলাপে অংশ নেয়নি।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরা আওয়ামী সরকার পতনের অন্যতম বড় কারণ ছিল। তারা (আওয়ামী সরকার) যদি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিত, তাহলে তাদের কাছে অনেক পর্যালোচনার তথ্য পৌঁছাতো। কিন্তু গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের কারণে তাদের (আওয়ামী সরকারের) কাছে সত্য যেত না।’

মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘গত ১৫ বছর মুক্তচিন্তাকে আঘাত করা হয়েছে। আমরা এখনো মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছি।’ সিপিডি জনগণের জন্য বিকল্প মাধ্যম হয়ে উঠেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিপিডির সব মতামত গবেষণামূলক ও তথ্যভিত্তিক। সিপিডির সঙ্গে গণমাধ্যমের সম্পর্ক সুদৃঢ়।’

সিপিডির ফেলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক রওনক জাহান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) বোর্ডের পরিচালক নিহাদ কবির, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতারসহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

দেওয়ানি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে একগুচ্ছ সুপারিশ কমিশনের

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত