পাঠ্যপুস্তক সংস্কার ও পরিমার্জন কমিটিতে আলেমদের অন্তর্ভুক্তি দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২: ৫৮

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য ১০ সদস্যের সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে সরকার। সেই কমিটি থেকে চিহ্নিত ইসলাম ও দেশবিরোধী ব্যক্তিদের দ্রুত অপসারণ এবং দেশপ্রেমী মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল শিক্ষাবিদদের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন আলেমেরা। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবি করেন তাঁরা। মানববন্ধনে প্রায় শতাধিক আলেম ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। 

চলতি মাসে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য ১০ সদস্যের সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইয়ানুর রহমানকে সদস্যসচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আখতার খান, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান, এনসিটিবি শিক্ষাক্রমের সদস্য অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী এবং এনসিটিবি প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের সদস্য অধ্যাপক এ এফ এম সারোয়ার জাহান। 

কমিটিতে ইসলাম বিদ্বেষী, সমকামিতাকে সমর্থন করে এমন ব্যক্তিরা রয়েছে। কমিটি থেকে তাদের বাদ দেওয়া দাবি জানান আলেমেরা। মানববন্ধনে ইসলামি বক্তা মাওলানা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘হুজুরদের দ্বারা এই সামাজের যে সকল নৈতিক উন্নতি, দেশের পরিবর্তন হয়েছে, জেনারেল (সাধারণ) মানুষের দ্বারা তা হয়নি। যাদের হুজুর বলে কটাক্ষ করেন তাঁদের বাপ-মা কয়জন বৃদ্ধাশ্রমে থাকে আর অন্যদের কয়জন থাকে। চুরি, মাদকাসক্তসহ বিভিন্ন মামলায় কয়জন হুজুর আর অন্যরা কতজন।’

বিভিন্ন মুসলিম বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, গবেষকদের কথা উল্লেখ করে সাইফুল্লাহ বলেন, ‘যারা মনে করে বিজ্ঞান চর্চার যুগে বিরাট বড় অবদান রেখেছেন তাদের বলব হুজুর বলে যাদের কটাক্ষ করেন তাঁদের বই পড়েই জ্ঞানবান হয়েছেন। আর হওয়ার পরে হুজুর বলে কটাক্ষ করেন। হুজুর বলে নয়, জ্ঞানকে খণ্ডন করবেন জ্ঞান দিয়ে অন্য কিছু দিয়ে নয়। আমরা আপনাদের সহযোগী হয়ে থাকতে চাই। কিন্তু আপনাদের আচরণ প্রমাণ করছে আপনারা সহযোগিতা নিতে চান না। কথা শুনতে চান না। ফ্যাসিস্টের বিষয়কে চাপিয়ে দিতে চান।’ কমিটিতে ইসলামবিদ্বেষীদের সরিয়ে দিয়ে প্রকৃত ইসলামপন্থীদের জায়গা করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। 

ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাওলানা মুক্তার আহমেদ বলেন, ‘জুলাইয়ের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এর মধ্যেই আবার আমাদের রাস্তায় নামতে হবে তা ভাবতে পারিনি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেই আন্দোলন হয়েছে সেখানে অনেক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আমাদের শিক্ষাকে কেন্দ্র করে আবারও শাহবাগি চেতনার লোকেরা, হতে পারে তারা স্বৈরাচারের সহযোগী ছিল না কিন্তু স্বৈরাচারের শিক্ষার চেতনা তারা লালন করে। এই চেতনাধারীরা আমাদের ৯০ ভাগ মুসলমানের শিক্ষার সিলেবাস কি হবে এটা তারা ঠিক করে দেবে তা মেনে নেওয়া হবে না।’ 

এ সময় ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন বক্তারা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত