ড. রিফাত হাসান মজুমদার
অমিত সম্ভাবনাময় প্রতিভাবান তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও উদ্যোক্তা ছিলেন রাহিব রেজা। ছিলেন ফুটফুটে এক কন্যাশিশুর বাবা। ছিলেন বলতে হচ্ছে কারণ, ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডির নামি বেসরকারি হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। একে ‘অবহেলা ও ভুল চিকিৎসা’ বলছে পরিবার। আসলে সুস্থ একজন মানুষ সাধারণ পরীক্ষা করাতে গিয়ে মারা গেলে চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি জনসাধারণের যেমন আস্থার সংকট তৈরি হয়, তেমনি তৈরি হয় উদ্বেগ। অসাবধানতা আর অবহেলায় মর্মান্তিক এমন মৃত্যুর ঘটনা যেন ফের না ঘটে, সে জন্য ভুলগুলো পর্যালোচনা করা সবার নৈতিক দায়িত্ব।
শুরু করি রোগ নির্ণয় দিয়ে। একজন রোগী কোনো চিকিৎসকের কাছে গেলে ওই রোগীর ইতিহাস বিশ্লেষণ করে, অজানা প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলো বের করে, পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে, একটি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করে সম্ভাব্য রোগ শনাক্ত করা একজন চিকিৎসকের মৌলিক দায়িত্ব। রাহিবের চিকিৎসক দেশের অন্যতম প্রধান হাসপাতালের একজন সিনিয়র লিভার বিশেষজ্ঞ। অথচ কনসাল্টেশন ফাইলে রোগের ইতিহাস, পরীক্ষার ফলাফল বা রোগ নির্ণয়ের বিষয়গুলো উল্লেখ ছিল না—এটা কোনোভাবেই আদর্শ প্রক্রিয়া নয়।
আবার রোগীর জন্য ওষুধ নির্ধারণের আগে সব সমস্যা চিহিত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। এক্ষেত্রে রোগী তার পূর্ববর্তী শারীরিক অবস্থার বা চিকিৎসা ইতিহাসের প্রাসঙ্গিকতার তাৎপর্যের বিষয়ে সচেতন থাকবেন, এমনটা আশা করা যায় না। কাজটা একজন চিকিৎসকের। কোনো ডাক্তার যদি এক্ষেত্রে রোগীকে দায়ী করেন, সেটা গুরুতর দায়িত্বহীনতা ও চূড়ান্ত ব্যর্থতা।
পেশাগত পরীক্ষার সময় একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে কিন্তু রোগীর পূর্ববর্তী ইতিহাস এবং তথ্য ছাড়াই রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা করতে হয়। এ কারণেই নানা প্রশ্ন, নিরীক্ষামূলক চিন্তাভাবনা এবং অনুমানমূলক যুক্তি চিকিৎসক হওয়ার অপরিহার্য দিক। চিকিৎসকেরাই যদি তাদের এই প্রশিক্ষণকে উপেক্ষা করেন এবং চিকিৎসা পরিস্থিতি বিবেচনা করতে ব্যর্থ হন, তখন প্রশ্ন ওঠে, রোগ নির্ণয়ের সময় চিকিৎসক কি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন? নাকি দায়িত্বে অবহেলা করেছিলেন? নাকি তাঁর প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাব ছিল?
রাহিবের যেহেতু স্থূলতাজনিত ঘুমের সমস্যা ছিল, সেক্ষেত্রে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাটি আগে উপলব্ধি করতে হতো। বিশেষ করে রোগীর স্থূলকায় শরীর দেখেই তার অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ এপনিয়ার (ঘুমের সময় ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটার সমস্যা) বিষয়ে চিকিৎসকের সন্দেহ হওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে রোগীর নাক ডাকার ইতিহাস আছে কি না, সেটি জানতে হতো। কারণ এমন রোগীদের ক্ষেত্রে ক্লোনাজেপামের (একটি বেনজোডিয়াজেপাইন ড্রাগ) মতো ওষুধের ব্যবহারে অবস্থার আরো অবনতি ঘটাতে পারে। অথচ রাহিবকে সেই ক্লোনাজেপামই দেওয়া হয়েছিল।
আরেকটি বিষয় হলো, একজন চিকিৎসক কোন কোন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করছেন, তা সম্পূর্ণ জানা রোগীর অধিকার। রোগীর বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চিকিৎসা প্রক্রিয়ার ঝুঁকি ও সম্ভাব্য জটিলতাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা চিকিৎসকের নৈতিক দায়িত্ব। রোগী এগুলো জেনে-বুঝে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসার সম্মতি দেন। রাহিবের ঘটনায় যেসব রিপোর্ট ও বিবৃতি এসেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, তাকে এগুলো ব্যাখ্যা করা হয়নি। এমনকি রাহিবের স্বাক্ষরিত কোনো আনুষ্ঠানিক সম্মতিপত্রও ছিল না। এন্ডোসকোপি করার আগে যেহেতু তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন, কাজেই সম্মতি ফর্মে তাঁর স্বাক্ষর না থাকা আইনত অগ্রহণযোগ্য।
চিকিৎসা পেশার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য কতগুলো রীতি বা পদ্ধতি রয়েছে। এন্ডোস্কোপির সময় রোগীর কাছে ডিপ সিডেশনের (গভীর ঘুমের ওষুধ) বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান বা সে বিষয়ে রোগীর সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা না থাকার দাবি যাঁরা করছেন, তাঁরা স্পষ্টতই মিথ্যা বলছেন। ব্রিটিশ সোসাইটি অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজির মতে, ‘সিডেটিভ প্রয়োগে রোগীর শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, সে সম্পর্কে রোগীর বিস্তারিত জানা উচিত এবং সম্ভব হলে এন্ডোস্কোপিতে একাধিক ধরনের সিডেটিভ (যদি প্রয়োজন হয়) থেকে উপযুক্ত ওষুধটি বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও রোগীর মতামত প্রদানের সুযোগ থাকা উচিত।’
এখন সেডেটিভ না এনেস্থেশিয়া ওষুধ, কোনটি বেশি উপযুক্ত তা রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস এবং অবস্থার ওপর নির্ভর করেই নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ। রয়্যাল কলেজ অব অ্যানেসথেটিক্স সিডেশনকে এমন একটি অবস্থা হিসাবে ব্যাখ্যা করে যেখানে রোগী ঘুমিয়ে থাকবে, কোনো প্রক্রিয়া চলাকালীন তার সাড়া প্রদান করার সম্ভাবনা নেই, এবং যা ঘটেছে তা সে মনে করতে অক্ষম হবে। সিডেশন না সাধারণ এনেস্থেশিয়া দরকার হবে তা রোগীর চেতনার স্তর, শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তা করার জন্য সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা এবং সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে। উভয়ের মধ্যে কোন ওষুধটি প্রয়োগ করা হচ্ছে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকাটাও চিকিৎসকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ওষুধের পরিমাণের সামান্য অসঙ্গতি রোগীর জীবনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
আর বেজেল এবং অন্যান্য (১৯৮৭) কর্তৃক প্রকাশিত এক কেস রিপোর্টে মিডাজোলাম প্রয়োগের পর অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যায় ভোগা এক রোগীর ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী অ্যাপনিয়ায় (শ্বাসপ্রশ্বাসের অস্থায়ী বন্ধ) আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করা আছে।
ওভার সিডেশনের (অতিরিক্ত ঘুম পাড়ানোর ঝুঁকি) সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিকূল ঘটনাগুলোর বিপত্তি কমাতে ব্রিটিশ সোসাইটি অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি উচ্চ শক্তির ফর্মুলেশনের পরিবর্তে কম শক্তির মিডাজোলাম (১ মিলিগ্রাম/মিলি) মজুদ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়। প্রোপোফোল বা সাধারণ অ্যানেস্থেশিয়ার মাধ্যমে ডিপ-সিডেশনের ব্যবস্থা করে এন্ডোস্কোপি করা রোগীদের জন্য ইসিজি, স্বয়ংক্রিয় নন-ইনভেসিভ রক্তচাপ, ক্যাপনোগ্রাফি (একটি ডিভাইস যা রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা পরিমাপ করে) এবং শরীরের কোর তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ এবং রেকর্ড করা ইত্যাদি নিরীক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয় যেন রোগীর অবস্থার অবনতি হলে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীরা দ্রুত তা শনাক্ত করতে পারেন এবং রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এক্ষেত্রে রোগী ঘুমিয়ে যাওয়া না পর্যন্ত শিরার লাইনের ভেতর দিয়ে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করার আগে সাবধানে ওষুধের ডোজ সমন্বয় করা প্রয়োজন হয়। অন্যথায় এটি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রাখে এবং এই প্রক্রিয়ায় ওভার-সিডেশন হওয়ার মারাত্মক ঝুঁকি থাকে। এই প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে কোনো বিচ্যুতি দেখলে এই সিদ্ধান্তেই আসতে হবে যে, পর্যাপ্ত সতর্কতা পালন করা হয়নি।
আবার অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, যথাযথ যন্ত্রপাতি এবং দক্ষ ব্যক্তিদের অভাব— এসবই দ্রুত মারাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। স্বাভাবিক অবস্থায়, রক্তের পিএইচ ৭.৩৫-৭. ৪৫ পরিসরের মধ্যে বজায় থাকার কথা যা রাহিবের ক্ষেত্রে ৭.০১-এ নেমে এসেছিল। এ থেকে বোঝা যায় যে, প্রক্রিয়া চলাকালে দেওয়া ওষুধটি মারাত্মক রেসপারেটরি ডিপ্রেশন সৃষ্টি করেছিল। ফলস্বরূপ, রাহিবের শ্বাস-প্রশ্বাস অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায় এবং তার শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে থাকে।
যখন একজন রোগীর রক্তের ভেতরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধরে রাখে, তখন উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন প্রয়োগ করলে তার জন্য প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে এবং তা তার শারীরিক অবনতিকে ত্বরান্বিত করে। এমন অবস্থায় কেউ সঠিকভাবে নজরদারি না করলে রোগীর শারীরিক অবস্থার এতোটাই অবনতি ঘটবে যে সেখান থেকে তাকে জীবিত ফিরিয়ে আনা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ভুল সিডেটিভ ড্রাগ নির্বাচন ও ভুল ডোজ এবং একজন রোগীর শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতির বিষয়টি শনাক্ত করার দক্ষতা ও সুবিধার অভাব থাকলে নানা সব জটিলতার সৃষ্ট হতে পারে। হাসপাতালে আইসিইউ সেবার বেহাল অবস্থার দরুন সহজেই রোগীর সেপসিস ও এরপর মাল্টি-অর্গান ফেইলিয়রের মতন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। অধিকন্তু, একজন মুমূর্ষ রোগীর অবস্থা যখন চিকিৎসার আওতার বাইরে চলে যায় তখন অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের জড়িত করা এবং রোগীর মারাত্মক পরিণতির প্রধান কারণটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াল করার প্রয়াস নিশ্চিতভাবেই অগ্রহণযোগ্য।
আবার বিভিন্ন প্রসিডিউর সম্পন্ন করার জন্য অপেক্ষারত রোগীদেরকে যেন লম্বা সময় ধরে অপেক্ষা করতে বাধ্য না হয় এটি নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার বা পানীয় ছাড়া ১২ ঘন্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করা অযথা ক্লান্তি, চাপ এবং ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, যেটি রাহিবের ক্ষেত্রে হয়েছিল। যদি ডাক্তাররা ৪ থেকে ৫ ঘন্টা দেরি করেই ফেলেন, তাদের উচিত ছিল অন্য দিন পুনরায় পরীক্ষাটির ব্যবস্থা করা।
দ্য ব্রিটিশ সোসাইটি অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি এমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং/অথবা উচ্চ বডি মাস ইনডেক্সধারী (বিএমআই) (≥ ৩৫ কেজি/মি২) রোগীদের জন্য প্রাক-মূল্যায়ন ও উন্নত পেরিপ্রোসিডারাল মনিটরিংয়ের সুপারিশ করে, কারণ এই রোগীদের পেরিপ্রোসিডারাল অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। রাহিবের ক্ষেত্রে এই দুটি অবস্থারই উপস্থিতি ছিল।
রাহিবের পরীক্ষায় ডায়াস্টোলিক কর্মহীনতা এবং হার্ট পাম্পিং ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে স্বাভাবিক সীমার (৪২%) নিচে ছিল। যেহেতু ওই দিন এমন কোনো জরুরি পরিস্থিতি ছিল না, রাহিবের কার্ডিয়াক পরিস্থিতি উপযুক্ত অবস্থায় আসার বিষয়টি একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নিশ্চিত না করার আগ পর্যন্ত এন্ডোস্কোপির প্রক্রিয়াটি স্থগিত করা উচিত ছিল।
কোনো স্বাস্থ্যব্যবস্থাই একজন চিকিৎসককে রোগীর নিরাপত্তার সাথে আপস করার অনুমতি দেয় না। এজন্য পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট এন্ডোস্কোপির পূর্বে পর্যালোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদি ডাক্তারের তা করার সময় না থাকে তিনি কেন পরীক্ষাগুলো করালেন এবং কেন তিনি প্রসিডিউরটি চালাবেন?
আফসোস, এমন ভুল কিংবা অবহেলার ঘটনায় যখন ডাক্তার বা হাসপাতাল কোনো পক্ষের কাছ থেকেই অনুশোচনা প্রকাশ পায় না, তখন তা সার্বিকভাবে চিকিৎসা পেশার জন্য লজ্জার। এমন ঘটনা আসলে সার্বিকভাবে দায়িত্বের প্রতি অবহেলারই উদাহারণ হয়ে দাঁড়ায়। ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট একজন রোগী শুধুমাত্র একটি সংখ্যা হতে পারেন না। মনে রাখতে হবে একজন মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু একটা পরিবারে স্থায়ী এবং অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করে। কাজেই চিকিৎসকদের সহমমির্মতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা খুব জরুরি।
লেখক: ড. রিফাত হাসান মজুমদার
কনসালটেন্ট রিউমাটোলজিস্ট ও একিউট ফিজিসিয়ান
এডুকেশনাল সুপারভাইসর ফর মেডিসিন ট্রেইনি
কুইন এলিজাভেথ হাসপাতাল কিং লিন এনএইচ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, যুক্তরাজ্য
অমিত সম্ভাবনাময় প্রতিভাবান তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও উদ্যোক্তা ছিলেন রাহিব রেজা। ছিলেন ফুটফুটে এক কন্যাশিশুর বাবা। ছিলেন বলতে হচ্ছে কারণ, ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডির নামি বেসরকারি হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। একে ‘অবহেলা ও ভুল চিকিৎসা’ বলছে পরিবার। আসলে সুস্থ একজন মানুষ সাধারণ পরীক্ষা করাতে গিয়ে মারা গেলে চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি জনসাধারণের যেমন আস্থার সংকট তৈরি হয়, তেমনি তৈরি হয় উদ্বেগ। অসাবধানতা আর অবহেলায় মর্মান্তিক এমন মৃত্যুর ঘটনা যেন ফের না ঘটে, সে জন্য ভুলগুলো পর্যালোচনা করা সবার নৈতিক দায়িত্ব।
শুরু করি রোগ নির্ণয় দিয়ে। একজন রোগী কোনো চিকিৎসকের কাছে গেলে ওই রোগীর ইতিহাস বিশ্লেষণ করে, অজানা প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলো বের করে, পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে, একটি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করে সম্ভাব্য রোগ শনাক্ত করা একজন চিকিৎসকের মৌলিক দায়িত্ব। রাহিবের চিকিৎসক দেশের অন্যতম প্রধান হাসপাতালের একজন সিনিয়র লিভার বিশেষজ্ঞ। অথচ কনসাল্টেশন ফাইলে রোগের ইতিহাস, পরীক্ষার ফলাফল বা রোগ নির্ণয়ের বিষয়গুলো উল্লেখ ছিল না—এটা কোনোভাবেই আদর্শ প্রক্রিয়া নয়।
আবার রোগীর জন্য ওষুধ নির্ধারণের আগে সব সমস্যা চিহিত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হয়। এক্ষেত্রে রোগী তার পূর্ববর্তী শারীরিক অবস্থার বা চিকিৎসা ইতিহাসের প্রাসঙ্গিকতার তাৎপর্যের বিষয়ে সচেতন থাকবেন, এমনটা আশা করা যায় না। কাজটা একজন চিকিৎসকের। কোনো ডাক্তার যদি এক্ষেত্রে রোগীকে দায়ী করেন, সেটা গুরুতর দায়িত্বহীনতা ও চূড়ান্ত ব্যর্থতা।
পেশাগত পরীক্ষার সময় একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে কিন্তু রোগীর পূর্ববর্তী ইতিহাস এবং তথ্য ছাড়াই রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা করতে হয়। এ কারণেই নানা প্রশ্ন, নিরীক্ষামূলক চিন্তাভাবনা এবং অনুমানমূলক যুক্তি চিকিৎসক হওয়ার অপরিহার্য দিক। চিকিৎসকেরাই যদি তাদের এই প্রশিক্ষণকে উপেক্ষা করেন এবং চিকিৎসা পরিস্থিতি বিবেচনা করতে ব্যর্থ হন, তখন প্রশ্ন ওঠে, রোগ নির্ণয়ের সময় চিকিৎসক কি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন? নাকি দায়িত্বে অবহেলা করেছিলেন? নাকি তাঁর প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাব ছিল?
রাহিবের যেহেতু স্থূলতাজনিত ঘুমের সমস্যা ছিল, সেক্ষেত্রে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাটি আগে উপলব্ধি করতে হতো। বিশেষ করে রোগীর স্থূলকায় শরীর দেখেই তার অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ এপনিয়ার (ঘুমের সময় ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটার সমস্যা) বিষয়ে চিকিৎসকের সন্দেহ হওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে রোগীর নাক ডাকার ইতিহাস আছে কি না, সেটি জানতে হতো। কারণ এমন রোগীদের ক্ষেত্রে ক্লোনাজেপামের (একটি বেনজোডিয়াজেপাইন ড্রাগ) মতো ওষুধের ব্যবহারে অবস্থার আরো অবনতি ঘটাতে পারে। অথচ রাহিবকে সেই ক্লোনাজেপামই দেওয়া হয়েছিল।
আরেকটি বিষয় হলো, একজন চিকিৎসক কোন কোন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করছেন, তা সম্পূর্ণ জানা রোগীর অধিকার। রোগীর বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চিকিৎসা প্রক্রিয়ার ঝুঁকি ও সম্ভাব্য জটিলতাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা চিকিৎসকের নৈতিক দায়িত্ব। রোগী এগুলো জেনে-বুঝে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসার সম্মতি দেন। রাহিবের ঘটনায় যেসব রিপোর্ট ও বিবৃতি এসেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, তাকে এগুলো ব্যাখ্যা করা হয়নি। এমনকি রাহিবের স্বাক্ষরিত কোনো আনুষ্ঠানিক সম্মতিপত্রও ছিল না। এন্ডোসকোপি করার আগে যেহেতু তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন, কাজেই সম্মতি ফর্মে তাঁর স্বাক্ষর না থাকা আইনত অগ্রহণযোগ্য।
চিকিৎসা পেশার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য কতগুলো রীতি বা পদ্ধতি রয়েছে। এন্ডোস্কোপির সময় রোগীর কাছে ডিপ সিডেশনের (গভীর ঘুমের ওষুধ) বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান বা সে বিষয়ে রোগীর সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা না থাকার দাবি যাঁরা করছেন, তাঁরা স্পষ্টতই মিথ্যা বলছেন। ব্রিটিশ সোসাইটি অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজির মতে, ‘সিডেটিভ প্রয়োগে রোগীর শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে, সে সম্পর্কে রোগীর বিস্তারিত জানা উচিত এবং সম্ভব হলে এন্ডোস্কোপিতে একাধিক ধরনের সিডেটিভ (যদি প্রয়োজন হয়) থেকে উপযুক্ত ওষুধটি বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও রোগীর মতামত প্রদানের সুযোগ থাকা উচিত।’
এখন সেডেটিভ না এনেস্থেশিয়া ওষুধ, কোনটি বেশি উপযুক্ত তা রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস এবং অবস্থার ওপর নির্ভর করেই নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ। রয়্যাল কলেজ অব অ্যানেসথেটিক্স সিডেশনকে এমন একটি অবস্থা হিসাবে ব্যাখ্যা করে যেখানে রোগী ঘুমিয়ে থাকবে, কোনো প্রক্রিয়া চলাকালীন তার সাড়া প্রদান করার সম্ভাবনা নেই, এবং যা ঘটেছে তা সে মনে করতে অক্ষম হবে। সিডেশন না সাধারণ এনেস্থেশিয়া দরকার হবে তা রোগীর চেতনার স্তর, শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তা করার জন্য সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা এবং সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে। উভয়ের মধ্যে কোন ওষুধটি প্রয়োগ করা হচ্ছে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকাটাও চিকিৎসকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ওষুধের পরিমাণের সামান্য অসঙ্গতি রোগীর জীবনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
আর বেজেল এবং অন্যান্য (১৯৮৭) কর্তৃক প্রকাশিত এক কেস রিপোর্টে মিডাজোলাম প্রয়োগের পর অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যায় ভোগা এক রোগীর ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী অ্যাপনিয়ায় (শ্বাসপ্রশ্বাসের অস্থায়ী বন্ধ) আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করা আছে।
ওভার সিডেশনের (অতিরিক্ত ঘুম পাড়ানোর ঝুঁকি) সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিকূল ঘটনাগুলোর বিপত্তি কমাতে ব্রিটিশ সোসাইটি অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি উচ্চ শক্তির ফর্মুলেশনের পরিবর্তে কম শক্তির মিডাজোলাম (১ মিলিগ্রাম/মিলি) মজুদ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়। প্রোপোফোল বা সাধারণ অ্যানেস্থেশিয়ার মাধ্যমে ডিপ-সিডেশনের ব্যবস্থা করে এন্ডোস্কোপি করা রোগীদের জন্য ইসিজি, স্বয়ংক্রিয় নন-ইনভেসিভ রক্তচাপ, ক্যাপনোগ্রাফি (একটি ডিভাইস যা রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা পরিমাপ করে) এবং শরীরের কোর তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ এবং রেকর্ড করা ইত্যাদি নিরীক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয় যেন রোগীর অবস্থার অবনতি হলে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীরা দ্রুত তা শনাক্ত করতে পারেন এবং রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এক্ষেত্রে রোগী ঘুমিয়ে যাওয়া না পর্যন্ত শিরার লাইনের ভেতর দিয়ে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করার আগে সাবধানে ওষুধের ডোজ সমন্বয় করা প্রয়োজন হয়। অন্যথায় এটি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রাখে এবং এই প্রক্রিয়ায় ওভার-সিডেশন হওয়ার মারাত্মক ঝুঁকি থাকে। এই প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে কোনো বিচ্যুতি দেখলে এই সিদ্ধান্তেই আসতে হবে যে, পর্যাপ্ত সতর্কতা পালন করা হয়নি।
আবার অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, যথাযথ যন্ত্রপাতি এবং দক্ষ ব্যক্তিদের অভাব— এসবই দ্রুত মারাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। স্বাভাবিক অবস্থায়, রক্তের পিএইচ ৭.৩৫-৭. ৪৫ পরিসরের মধ্যে বজায় থাকার কথা যা রাহিবের ক্ষেত্রে ৭.০১-এ নেমে এসেছিল। এ থেকে বোঝা যায় যে, প্রক্রিয়া চলাকালে দেওয়া ওষুধটি মারাত্মক রেসপারেটরি ডিপ্রেশন সৃষ্টি করেছিল। ফলস্বরূপ, রাহিবের শ্বাস-প্রশ্বাস অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায় এবং তার শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে থাকে।
যখন একজন রোগীর রক্তের ভেতরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধরে রাখে, তখন উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন প্রয়োগ করলে তার জন্য প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে এবং তা তার শারীরিক অবনতিকে ত্বরান্বিত করে। এমন অবস্থায় কেউ সঠিকভাবে নজরদারি না করলে রোগীর শারীরিক অবস্থার এতোটাই অবনতি ঘটবে যে সেখান থেকে তাকে জীবিত ফিরিয়ে আনা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ভুল সিডেটিভ ড্রাগ নির্বাচন ও ভুল ডোজ এবং একজন রোগীর শারীরিক অবস্থার ক্রমাবনতির বিষয়টি শনাক্ত করার দক্ষতা ও সুবিধার অভাব থাকলে নানা সব জটিলতার সৃষ্ট হতে পারে। হাসপাতালে আইসিইউ সেবার বেহাল অবস্থার দরুন সহজেই রোগীর সেপসিস ও এরপর মাল্টি-অর্গান ফেইলিয়রের মতন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। অধিকন্তু, একজন মুমূর্ষ রোগীর অবস্থা যখন চিকিৎসার আওতার বাইরে চলে যায় তখন অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের জড়িত করা এবং রোগীর মারাত্মক পরিণতির প্রধান কারণটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াল করার প্রয়াস নিশ্চিতভাবেই অগ্রহণযোগ্য।
আবার বিভিন্ন প্রসিডিউর সম্পন্ন করার জন্য অপেক্ষারত রোগীদেরকে যেন লম্বা সময় ধরে অপেক্ষা করতে বাধ্য না হয় এটি নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার বা পানীয় ছাড়া ১২ ঘন্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করা অযথা ক্লান্তি, চাপ এবং ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, যেটি রাহিবের ক্ষেত্রে হয়েছিল। যদি ডাক্তাররা ৪ থেকে ৫ ঘন্টা দেরি করেই ফেলেন, তাদের উচিত ছিল অন্য দিন পুনরায় পরীক্ষাটির ব্যবস্থা করা।
দ্য ব্রিটিশ সোসাইটি অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি এমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং/অথবা উচ্চ বডি মাস ইনডেক্সধারী (বিএমআই) (≥ ৩৫ কেজি/মি২) রোগীদের জন্য প্রাক-মূল্যায়ন ও উন্নত পেরিপ্রোসিডারাল মনিটরিংয়ের সুপারিশ করে, কারণ এই রোগীদের পেরিপ্রোসিডারাল অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। রাহিবের ক্ষেত্রে এই দুটি অবস্থারই উপস্থিতি ছিল।
রাহিবের পরীক্ষায় ডায়াস্টোলিক কর্মহীনতা এবং হার্ট পাম্পিং ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে স্বাভাবিক সীমার (৪২%) নিচে ছিল। যেহেতু ওই দিন এমন কোনো জরুরি পরিস্থিতি ছিল না, রাহিবের কার্ডিয়াক পরিস্থিতি উপযুক্ত অবস্থায় আসার বিষয়টি একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নিশ্চিত না করার আগ পর্যন্ত এন্ডোস্কোপির প্রক্রিয়াটি স্থগিত করা উচিত ছিল।
কোনো স্বাস্থ্যব্যবস্থাই একজন চিকিৎসককে রোগীর নিরাপত্তার সাথে আপস করার অনুমতি দেয় না। এজন্য পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট এন্ডোস্কোপির পূর্বে পর্যালোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদি ডাক্তারের তা করার সময় না থাকে তিনি কেন পরীক্ষাগুলো করালেন এবং কেন তিনি প্রসিডিউরটি চালাবেন?
আফসোস, এমন ভুল কিংবা অবহেলার ঘটনায় যখন ডাক্তার বা হাসপাতাল কোনো পক্ষের কাছ থেকেই অনুশোচনা প্রকাশ পায় না, তখন তা সার্বিকভাবে চিকিৎসা পেশার জন্য লজ্জার। এমন ঘটনা আসলে সার্বিকভাবে দায়িত্বের প্রতি অবহেলারই উদাহারণ হয়ে দাঁড়ায়। ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট একজন রোগী শুধুমাত্র একটি সংখ্যা হতে পারেন না। মনে রাখতে হবে একজন মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু একটা পরিবারে স্থায়ী এবং অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করে। কাজেই চিকিৎসকদের সহমমির্মতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা খুব জরুরি।
লেখক: ড. রিফাত হাসান মজুমদার
কনসালটেন্ট রিউমাটোলজিস্ট ও একিউট ফিজিসিয়ান
এডুকেশনাল সুপারভাইসর ফর মেডিসিন ট্রেইনি
কুইন এলিজাভেথ হাসপাতাল কিং লিন এনএইচ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, যুক্তরাজ্য
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কি পারবে না, তাদেরকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি হবে না—এ নিয়ে গরম এখন রাজনীতির মাঠ। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক হিসেবে দাবিদার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি তো আরও একধাপ বেশি। আওয়ামী লীগকে কেবল নির্বাচনের বাইরে রাখাই নয়, দাবি তাদের দেশের প্রাচী
৪ ঘণ্টা আগেহুমায়ূন আহমেদ ও মেহের আফরোজ শাওনের ছেলে নিষাদ হুমায়ূনের একটা ভাইরাল ভিডিও ক্লিপ দেখলাম। বেশ মজা পেলাম। সত্যি বললে মজার চেয়েও ছোট্ট বাচ্চার কথায় ভাবনার উদ্রেক হলো। চিন্তার দুয়ার উন্মুক্ত হলো।
৪ ঘণ্টা আগেপরিবেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সার্কুলার অর্থনীতি বা বৃত্তাকার অর্থনীতি এক নবদিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বাংলাদেশে স্বল্প সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে সার্কুলার অর্থনীতির বিকল্প নেই।
৪ ঘণ্টা আগেবগুড়ার শিবগঞ্জে ৪২০ টাকা কেজি দরে নতুন আলু বিক্রি হয়েছে। আজকের পত্রিকায় খবরটি দেখা গেছে ১৮ নভেম্বর। এই দামে বেচাকেনাও হচ্ছে। ক্রেতারাও নাকি এই দামে আলু কিনতে পেরে সন্তুষ্ট!
৪ ঘণ্টা আগে