অর্ণব সান্যাল
বাংলা প্রবাদ আমাদের জানাচ্ছে, ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়। কিন্তু বর্তমান বঙ্গে সেই প্রবাদ বেশ বিবর্তিত হয়েছে। এখন ন্যাড়ারা বারবারই বেলতলায় বেল কিনতে যায় এবং সেই সঙ্গে মাথায় বেলও ফাটে। কেন ও কীভাবে—আসুন, তা বুঝে নেওয়া যাক।
ন্যাড়া কয়বার বেলতলায় যায়, তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন কিংবদন্তি সুকুমার রায়ও। ‘ন্যাড়া বেলতলা যায় ক’বার’ নামক রচনায় তিনি প্রশ্নও তুলেছিলেন এই বলে যে—
লেখা আছে পুঁথির পাতে, ‘ন্যাড়া যায় বেলতলাতে’,
নাহি কোনো সন্ধ তাতে—কিন্তু প্রশ্ন ‘ক’বার যায়?’
এ কথাটা এদ্দিনেও পারে নিকো বুঝতে কেও,
লিখে নিকো পুস্তকেও, দিচ্ছে না কেউ জবাব তায়।
এ থেকে পরিষ্কার যে ন্যাড়াদের একবার বেলতলায় যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা অনেক দিন ধরেই চলছে। আমরা প্রেজেন্ট টেনসে সেটির উত্তর খুঁজি বরং।
শুরুতেই বাংলা প্রবাদের ভাবার্থ জেনে নিই। বেলতলায় গেলেই টুপ করে ন্যাড়া মাথায় বেল পড়ে অবস্থা বেগতিক হওয়ার আশঙ্কা থাকে, আর তা থেকেই এমন প্রবাদের উৎপত্তি বলে প্রচলিত আছে। কিন্তু ন্যাড়া কেন আগে বেলতলায় একবারই যেত? প্রবাদটি সৃষ্টির সময়কার বাংলায় নিশ্চয়ই ন্যাড়া মাথায় একবার বেল ফাটার পরপরই মানুষ সতর্ক হয়ে যেত। আর যেত না বেলতলায়। অর্থাৎ, ভুল থেকে শিক্ষা নিত আর কি!
কিন্তু এখনকার বাংলায় সেই অবস্থা নেই। এখানে বেলতলায় মানুষকে বারবার যেতে হচ্ছে। উদাহরণ চান? দিচ্ছি। দুদিন আগে ইফতারের ঠিক পরপর ফলমূলের দোকানে যেতে হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, একটি পাকা বেল কেনা। শরবত বানানোই ছিল মূল লক্ষ্য। তবে বেলের দাম শোনার পরই বোঝা গেল, আমার মাথায় চুল নেই বিন্দুমাত্র এবং আমি বেলতলাতেই দাঁড়িয়ে আছি অরক্ষিত অবস্থায়। বেলের মালিকানা হস্তান্তরের শর্ত হিসেবে দোকানদার আমার কাছে ২০০ টাকা চেয়ে বসলেন। অনেক অনুনয়–বিনয়, রাগ–ধমকের পর ‘আপসহীন’ দোকানদার ২০ টাকা কমাতে রাজি হলেন। সেই সঙ্গে দিলেন ওপেন চ্যালেঞ্জ—‘খোঁজ লন, এই এলাকায় এর চাইতে কমে পাইবেন না। পাইলে ফ্রি দিমু!’ তাঁর এত আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণে আমার দরাদরির আত্মবিশ্বাস নড়ে গেল। নিরুপায় আমি বুঝলাম, বেলের শরবত খেতে হলে আত্মসমর্পণই একমাত্র পথ।
১৮০ টাকায় বেল কিনে বেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম, বলতে দ্বিধা নেই। শুভাকাঙ্ক্ষী আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, আমি ঠকেছি। ফলে চলল গুগলে খোঁজ। সেই খোঁজাখুঁজির কারণে পাওয়া গেল দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের কিছু খবর। সে অনুযায়ী জানা গেল, একটি বেল বাজারে আকারভেদে নাকি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ২০০ টাকায়! বেশি টাকা যে পকেট থেকে খসল, সেটি যে পুরোপুরি আমার দরাদরির অক্ষমতায় হয়নি, তা বুঝতে পেরে সাময়িক স্বস্তি পেলাম বৈকি। তবে কলা কিনতে গিয়ে পকেটের দিকে তাকিয়ে বের হওয়া দীর্ঘশ্বাস ওই স্বস্তিকে নিমেষে উড়িয়ে দিল। কারণ, সবরি কলাও কিনতে হলো ৫০ টাকা হালি দরে।
ওদিকে ইফতারের আয়োজন করতে গিয়ে জেনেছি, রসে ভরা টসটসে লেবুর হালিও নাকি ৮০ টাকা। গণমাধ্যমের খবরে জানা গেল, রোজা উপলক্ষে বাজারে অনেক ফলের দাম বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়েছে। তরমুজ, আনারস, আপেল, মাল্টার দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে থাকলেও বেল, বাঙ্গি ও পেঁপের দাম বেশ চড়া। অর্থাৎ, এসব কিনতে গেলে ন্যাড়াদের (নাগরিকদের) মাথায় বেল ফাটছে। কিন্তু তাই বলে তাদের পক্ষে বেলতলায় আর না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় নেই। কারণ, এ দেশে এখন প্রচুর বেলতলা। একটায় যাবেন না, তো আরেকটায় যেতেই হবে। আর যদি একেবারে পেটে পাথর বেঁধে ‘হাঙ্গার স্ট্রাইকে’ দিনের পর দিন কাটানোর ইচ্ছা থাকে, তবে ভিন্ন কথা।
নিন্দুকেরা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলতেই পারেন, ‘এত বেল খাওয়া লাগে কেন? বেল কি চাল-ডাল-সবজি? না খেলে কি দিন চলবে না?’ আবার সুদূর রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কথাও কেউ কেউ তুলে ধরতে পারেন প্রবল বিক্রমে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিদেশি যুদ্ধের আঁচে দেশের গাছে ঝুলে থাকা কাঁচা বেল পেকে দাম বেড়ে গেলে আমাদের কি অসহায় লাগতে পারে না? আর পত্রপত্রিকার খবরে তো জানাই হয় যে, এ দেশে ঘাট পার হলেই ১০ টাকার সবজি ৩০ টাকা হয়। দাম বাড়ে অসময়ের বৃষ্টিতে, অসময়ের রোদে। ঢ্যাঁড়স যে দামে গ্রামে বেচেন কৃষক, আমরা তার কয়েক গুণ বেশি দামে শহরে কিনি। সেগুলোও কি তবে বিশ্বায়নের তোড়েই হয়? এ দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই চিত্রনাট্য এতটাই পুরোনো যে, মন বলে ওঠে ডাল মে বহুত কুছ কালা হ্যায়!
সেই কালা ডালই আমরা বছরের পর বছর পরোটা দিয়ে খাই। পরোটার দামও বাড়ে। দুটো পরোটার বদলে হয়তো তখন একটা খাওয়া হয়। এবং হাফ পেট খেয়ে শুঁকতে হয় উন্নয়নের তৃপ্তির ঢেকুর! যদিও ঊর্ধ্বমুখী মাথাপিছু আয়ের দেশে হাফ পেট থাকার কথা উচ্চ স্বরে বললেই তারস্বরে শুনিয়ে দেওয়া হয় টিসিবির দীর্ঘ লাইনের গল্প। তবে সেই লাইন থেকে ভগ্ন হৃদয়ে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়া মানুষের গল্প আর কেউ বলে না ভুক্তভোগী ছাড়া। বিষয়টা এখন এমনই। ঊর্ধ্বমুখী জিডিপির দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মেনে নিয়েই চলতে হবে—আড়ে ঠারে এমন বক্তব্য আমরা কর্তৃপক্ষের হাবেভাবে পেয়েছি।
ফলে আজকের বঙ্গে আমরা বারবার বেল কিনতে যাই ন্যাড়া মাথাতেই। জানি যে, মাথায় বেল পড়তেই পারে, ব্যথা লাগতেই পারে। তবু কিছুদিন পর আবার আমাদের যেতেই হবে হয়তো। কারণ, আমাদের মাথা ন্যাড়া করে রাখার ক্ষুর যাদের হাতে, তারাই বেলগাছের স্বত্ব কিনে নিয়েছেন কিনা! ফলে বেল মাথায় পড়ে তাদেরই ইশারায়। আমাদের শুধু ন্যাড়া মাথায় বেলতলা পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার দায়।
এমনটায় কিন্তু দ্বিমত করেননি সুকুমার রায়ও। তিনি ন্যাড়াদের দফায় দফায় বেলতলায় যাওয়া নিয়ে লিখেছিলেন—
‘লাখোবার যায় যদি সে যাওয়া তার ঠেকায় কিসে?
ভেবে তাই পাইনে দিশে নাই কি কিচ্ছু উপায় তার?’
এ কথাটা যেমনি বলা রোগা এক ভিস্তিও’লা
ঢিপ্ ক’রে বাড়িয়ে গলা প্রণাম করল দুপায় তাঁর।
হেসে বলে, ‘আজ্ঞে সে কি? এতে আর গোল হবে কি?
নেড়াকে তো নিত্য দেখি আপন চোখে পরিষ্কার—
আমাদেরি বেলতলা যে নেড়া সেথা খেলতে আসে
হরে দরে হয় ত মাসে নিদেন পক্ষে পঁচিশবার।’
তো এবার, ন্যাড়াকে চিনতে পারছেন তো? কিছুটা কি চেনা চেনা লাগে? বিস্তারিত মিল খুঁজতে হলে বাসার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যান!
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বাংলা প্রবাদ আমাদের জানাচ্ছে, ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়। কিন্তু বর্তমান বঙ্গে সেই প্রবাদ বেশ বিবর্তিত হয়েছে। এখন ন্যাড়ারা বারবারই বেলতলায় বেল কিনতে যায় এবং সেই সঙ্গে মাথায় বেলও ফাটে। কেন ও কীভাবে—আসুন, তা বুঝে নেওয়া যাক।
ন্যাড়া কয়বার বেলতলায় যায়, তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন কিংবদন্তি সুকুমার রায়ও। ‘ন্যাড়া বেলতলা যায় ক’বার’ নামক রচনায় তিনি প্রশ্নও তুলেছিলেন এই বলে যে—
লেখা আছে পুঁথির পাতে, ‘ন্যাড়া যায় বেলতলাতে’,
নাহি কোনো সন্ধ তাতে—কিন্তু প্রশ্ন ‘ক’বার যায়?’
এ কথাটা এদ্দিনেও পারে নিকো বুঝতে কেও,
লিখে নিকো পুস্তকেও, দিচ্ছে না কেউ জবাব তায়।
এ থেকে পরিষ্কার যে ন্যাড়াদের একবার বেলতলায় যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা অনেক দিন ধরেই চলছে। আমরা প্রেজেন্ট টেনসে সেটির উত্তর খুঁজি বরং।
শুরুতেই বাংলা প্রবাদের ভাবার্থ জেনে নিই। বেলতলায় গেলেই টুপ করে ন্যাড়া মাথায় বেল পড়ে অবস্থা বেগতিক হওয়ার আশঙ্কা থাকে, আর তা থেকেই এমন প্রবাদের উৎপত্তি বলে প্রচলিত আছে। কিন্তু ন্যাড়া কেন আগে বেলতলায় একবারই যেত? প্রবাদটি সৃষ্টির সময়কার বাংলায় নিশ্চয়ই ন্যাড়া মাথায় একবার বেল ফাটার পরপরই মানুষ সতর্ক হয়ে যেত। আর যেত না বেলতলায়। অর্থাৎ, ভুল থেকে শিক্ষা নিত আর কি!
কিন্তু এখনকার বাংলায় সেই অবস্থা নেই। এখানে বেলতলায় মানুষকে বারবার যেতে হচ্ছে। উদাহরণ চান? দিচ্ছি। দুদিন আগে ইফতারের ঠিক পরপর ফলমূলের দোকানে যেতে হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, একটি পাকা বেল কেনা। শরবত বানানোই ছিল মূল লক্ষ্য। তবে বেলের দাম শোনার পরই বোঝা গেল, আমার মাথায় চুল নেই বিন্দুমাত্র এবং আমি বেলতলাতেই দাঁড়িয়ে আছি অরক্ষিত অবস্থায়। বেলের মালিকানা হস্তান্তরের শর্ত হিসেবে দোকানদার আমার কাছে ২০০ টাকা চেয়ে বসলেন। অনেক অনুনয়–বিনয়, রাগ–ধমকের পর ‘আপসহীন’ দোকানদার ২০ টাকা কমাতে রাজি হলেন। সেই সঙ্গে দিলেন ওপেন চ্যালেঞ্জ—‘খোঁজ লন, এই এলাকায় এর চাইতে কমে পাইবেন না। পাইলে ফ্রি দিমু!’ তাঁর এত আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণে আমার দরাদরির আত্মবিশ্বাস নড়ে গেল। নিরুপায় আমি বুঝলাম, বেলের শরবত খেতে হলে আত্মসমর্পণই একমাত্র পথ।
১৮০ টাকায় বেল কিনে বেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম, বলতে দ্বিধা নেই। শুভাকাঙ্ক্ষী আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, আমি ঠকেছি। ফলে চলল গুগলে খোঁজ। সেই খোঁজাখুঁজির কারণে পাওয়া গেল দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের কিছু খবর। সে অনুযায়ী জানা গেল, একটি বেল বাজারে আকারভেদে নাকি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ২০০ টাকায়! বেশি টাকা যে পকেট থেকে খসল, সেটি যে পুরোপুরি আমার দরাদরির অক্ষমতায় হয়নি, তা বুঝতে পেরে সাময়িক স্বস্তি পেলাম বৈকি। তবে কলা কিনতে গিয়ে পকেটের দিকে তাকিয়ে বের হওয়া দীর্ঘশ্বাস ওই স্বস্তিকে নিমেষে উড়িয়ে দিল। কারণ, সবরি কলাও কিনতে হলো ৫০ টাকা হালি দরে।
ওদিকে ইফতারের আয়োজন করতে গিয়ে জেনেছি, রসে ভরা টসটসে লেবুর হালিও নাকি ৮০ টাকা। গণমাধ্যমের খবরে জানা গেল, রোজা উপলক্ষে বাজারে অনেক ফলের দাম বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়েছে। তরমুজ, আনারস, আপেল, মাল্টার দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে থাকলেও বেল, বাঙ্গি ও পেঁপের দাম বেশ চড়া। অর্থাৎ, এসব কিনতে গেলে ন্যাড়াদের (নাগরিকদের) মাথায় বেল ফাটছে। কিন্তু তাই বলে তাদের পক্ষে বেলতলায় আর না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায় নেই। কারণ, এ দেশে এখন প্রচুর বেলতলা। একটায় যাবেন না, তো আরেকটায় যেতেই হবে। আর যদি একেবারে পেটে পাথর বেঁধে ‘হাঙ্গার স্ট্রাইকে’ দিনের পর দিন কাটানোর ইচ্ছা থাকে, তবে ভিন্ন কথা।
নিন্দুকেরা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলতেই পারেন, ‘এত বেল খাওয়া লাগে কেন? বেল কি চাল-ডাল-সবজি? না খেলে কি দিন চলবে না?’ আবার সুদূর রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কথাও কেউ কেউ তুলে ধরতে পারেন প্রবল বিক্রমে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিদেশি যুদ্ধের আঁচে দেশের গাছে ঝুলে থাকা কাঁচা বেল পেকে দাম বেড়ে গেলে আমাদের কি অসহায় লাগতে পারে না? আর পত্রপত্রিকার খবরে তো জানাই হয় যে, এ দেশে ঘাট পার হলেই ১০ টাকার সবজি ৩০ টাকা হয়। দাম বাড়ে অসময়ের বৃষ্টিতে, অসময়ের রোদে। ঢ্যাঁড়স যে দামে গ্রামে বেচেন কৃষক, আমরা তার কয়েক গুণ বেশি দামে শহরে কিনি। সেগুলোও কি তবে বিশ্বায়নের তোড়েই হয়? এ দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই চিত্রনাট্য এতটাই পুরোনো যে, মন বলে ওঠে ডাল মে বহুত কুছ কালা হ্যায়!
সেই কালা ডালই আমরা বছরের পর বছর পরোটা দিয়ে খাই। পরোটার দামও বাড়ে। দুটো পরোটার বদলে হয়তো তখন একটা খাওয়া হয়। এবং হাফ পেট খেয়ে শুঁকতে হয় উন্নয়নের তৃপ্তির ঢেকুর! যদিও ঊর্ধ্বমুখী মাথাপিছু আয়ের দেশে হাফ পেট থাকার কথা উচ্চ স্বরে বললেই তারস্বরে শুনিয়ে দেওয়া হয় টিসিবির দীর্ঘ লাইনের গল্প। তবে সেই লাইন থেকে ভগ্ন হৃদয়ে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়া মানুষের গল্প আর কেউ বলে না ভুক্তভোগী ছাড়া। বিষয়টা এখন এমনই। ঊর্ধ্বমুখী জিডিপির দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মেনে নিয়েই চলতে হবে—আড়ে ঠারে এমন বক্তব্য আমরা কর্তৃপক্ষের হাবেভাবে পেয়েছি।
ফলে আজকের বঙ্গে আমরা বারবার বেল কিনতে যাই ন্যাড়া মাথাতেই। জানি যে, মাথায় বেল পড়তেই পারে, ব্যথা লাগতেই পারে। তবু কিছুদিন পর আবার আমাদের যেতেই হবে হয়তো। কারণ, আমাদের মাথা ন্যাড়া করে রাখার ক্ষুর যাদের হাতে, তারাই বেলগাছের স্বত্ব কিনে নিয়েছেন কিনা! ফলে বেল মাথায় পড়ে তাদেরই ইশারায়। আমাদের শুধু ন্যাড়া মাথায় বেলতলা পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার দায়।
এমনটায় কিন্তু দ্বিমত করেননি সুকুমার রায়ও। তিনি ন্যাড়াদের দফায় দফায় বেলতলায় যাওয়া নিয়ে লিখেছিলেন—
‘লাখোবার যায় যদি সে যাওয়া তার ঠেকায় কিসে?
ভেবে তাই পাইনে দিশে নাই কি কিচ্ছু উপায় তার?’
এ কথাটা যেমনি বলা রোগা এক ভিস্তিও’লা
ঢিপ্ ক’রে বাড়িয়ে গলা প্রণাম করল দুপায় তাঁর।
হেসে বলে, ‘আজ্ঞে সে কি? এতে আর গোল হবে কি?
নেড়াকে তো নিত্য দেখি আপন চোখে পরিষ্কার—
আমাদেরি বেলতলা যে নেড়া সেথা খেলতে আসে
হরে দরে হয় ত মাসে নিদেন পক্ষে পঁচিশবার।’
তো এবার, ন্যাড়াকে চিনতে পারছেন তো? কিছুটা কি চেনা চেনা লাগে? বিস্তারিত মিল খুঁজতে হলে বাসার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যান!
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র অন্যতম নেতা সাইফুল হক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ঐক্য ফোরামের নেতা ছিলেন। তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। এখন পর্যন্ত ২০টি বই লিখেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে...
১১ ঘণ্টা আগেসদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে নানা মাত্রিক আলোচনার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন: ‘গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেব না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে।’
১১ ঘণ্টা আগেতিন মাস পার হলো, আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলের অধীনে আছি। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের অবসান ঘটেছে। অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে জনমনে আশার সঞ্চার হয়েছিল—সামাজিক সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে, আমাদের সামগ্রিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে, প্রকৃত স্বাধীনতা..
১১ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার নাছিয়াঘোনা এলাকায় যাওয়া-আসা করতে গেলে বোঝা যায় সেটি দুর্গম এলাকা। এ কারণেই সেখানে বসানো হয়েছিল ফাঁড়ি। কিন্তু ৫ আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পুলিশের থানা ও ফাঁড়িগুলোয় যখন আক্রমণ করা হচ্ছিল, তখন নুরু আলম নুরু নামের এক সন্ত্রাসীও সে সুযোগ নেন। তিনি পুলিশের ফাঁড়ি দখল করে...
১১ ঘণ্টা আগে