তরুণ চক্রবর্তী
ভারতীয় রাজনীতিতে মায়া-মমতা নিয়ে চিন্তা বহুকালের। মায়া-মমতার একজন উত্তর প্রদেশের দলিত নেত্রী সুশ্রী মায়াবতী এবং অন্যজন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুজনই ‘অবিবাহিত’। দুই নারীকেই নাকি বিশ্বাস করা মহাপাপ! এমনটাই মনে করেন অনেকে। এঁরা যে জোটে থাকেন, তাঁর বিপরীত জোটেরই নাকি লাভ হয়।
জোটবদলেও সিদ্ধহস্ত দুই নারী। উচ্চাশায় ভরপুর মায়া-মমতার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক অনেকটা ‘এই আছে, এই নেই!’
মায়াবতীর রাজনীতিতে এখন ভাটা চলছে। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক ‘ভাইপো’, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবের হাত ধরেও কোনো সুবিধা করতে পারেননি ‘বুয়া’ (পিসি) মায়াবতী। তাই এবার, একলা চলোরে! অন্যদিকে আপন ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের উপপ্রধান করে দিয়ে ‘পিসি’ মমতার সাফল্য এখন মধ্যগগনে। মায়ার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সরাসরি মমতার বিরুদ্ধে নেই। তবে তাঁর ভাইপো থেকে শুরু করে দলীয় সহকর্মীরা অনেকেই আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত। জেলও খাটতে হয়েছে মমতার নেতা-মন্ত্রীদের। তাঁদের বাঁচাতেই নাকি বিজেপিকে খুশি করার গোপন কৌশল নিয়েছেন মমতা।
পশ্চিমবঙ্গে জিতেই তৃণমূল নেতারা মমতাকেই ভারতে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প বলে প্রচারে মেতে উঠেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, গোয়া প্রভৃতি রাজ্যে প্রভাব বিস্তারে নেমেছে তৃণমূল। চলছে নেত্রীর প্রধানমন্ত্রিত্বের বাসনা পূরণের চেষ্টা। নিজেদের ‘আসল কংগ্রেস’ দাবি করে বিজেপির বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরে কংগ্রেসকে দুর্বল করছে তৃণমূল। প্রকাশ্যে বিজেপি-বিরোধিতা করলেও তাই প্রশ্ন উঠছে, বিজেপির সঙ্গে গটআপ নয়তো? সন্দেহ স্বাভাবিক। কারণ, এর আগে একাধিকবার বিজেপি বা কংগ্রেসের শরিক হয়ে মমতা ভারতের মন্ত্রী হয়েছেন। তাই তাঁর অবস্থান নিয়ে উভয় তরফেই সন্দেহ রয়েছে। ২০১১ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধতা তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করে। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই কংগ্রেস ভাঙাই হয়ে ওঠে মমতার আসল লক্ষ্য। কংগ্রেস তাই হাত মেলায় সিপিএমের সঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাম বা কংগ্রেস ন্যূনতম শক্তি জাহির করতে ব্যর্থ। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মমতাকেই ভরসা করতে বাধ্য। রাজ্যে ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি মুসলিম ভোট মমতার বাড়তি শক্তি। পশ্চিমবঙ্গে ভোটে জেতার আগেই মমতা বলেছিলেন, ‘দিল্লিতেও খেলা হবে।’ অর্থাৎ তাঁর লক্ষ্য ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। তাই দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেসসহ একাধিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর একক বৈঠক বাড়িয়েছে জল্পনা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক লড়াই ভুলে বৈঠক করবেন, এটাই স্বাভাবিক দৃশ্য। কিন্তু মোদি-মমতার বৈঠকের পর বিরোধী জোটে অনৈক্যের ছবিটাই বেশি স্পষ্ট হয়।
অনেকেরই বিশ্বাস, বিরোধী ঐক্যকে বিনাশ করতেই মমতাকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-বিরোধিতা কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কিছুতেই সম্ভব নয়। দুর্বলতম নেতৃত্বের হাত ধরে শক্তিক্ষয়ের পরও গোটা দেশে বিজেপিবিরোধীদের মধ্যে একমাত্র কংগ্রেসেরই কিছুটা হলেও অস্তিত্ব আছে, বাকিদের একটি বা দুটি রাজ্যে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদিকে হারাতে হলে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই শুধু নয়, প্রধান শরিক ধরে নিয়েই বিরোধীদের জোট করতে হবে, এটাই বাস্তব। ভারতের বাস্তব পরিস্থিতিই বলছে, বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে কংগ্রেসই হবে বড় শরিক। আট রাজ্যে কংগ্রেস শাসক দল বা জোটের শরিক। বাকিরা আঞ্চলিক দল হিসেবে নিজেদের রাজ্যেই সীমাবদ্ধ। উল্টো ছবিও আছে। বহু রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে অনেক দূরে, আঞ্চলিক দলই ভরসা। তাই কংগ্রেসের নেতৃত্বে জোটই বিজেপিকে হারানোর
একমাত্র পথ।
কিন্তু সেই পথকে কর্দমাক্ত করার খেলা চলছে। কথায় আছে না, পাঁকেই ফোটে পদ্ম! পদ্ম বিজেপির নির্বাচনী প্রতীক, তৃণমূলের ঘাসফুল। এই দুই ফুলের গোপন সখ্যে কর্দমাক্ত ভারতীয় রাজনীতি। কংগ্রেসের প্রথমসারির বহু নেতাই মনে করেন, বিরোধী ঐক্য ভাঙাই মমতার কাজ। মুখে বিজেপির হিন্দুত্বনীতির বিরোধিতা করলেও নিজের পরিবার ও দলের নেতাদের দুর্নীতির মামলা থেকে বাঁচাতে বিজেপির কৌশলের অংশীদার মমতা। তাই গোটা দেশেই কংগ্রেসকে দুর্বল করাই এখন মমতার দলের প্রধান লক্ষ্য। ত্রিপুরা, আসাম, গোয়া বা মেঘালয়ে কংগ্রেসের প্রভাবশালীদেরই দলে টানছেন তিনি। বিজেপি ভাঙতে তেমন একটা উৎসাহ নেই।
দুর্বল নেতৃত্বের কারণে কংগ্রেস ভাঙছে। এটা বাস্তব। হতাশা থেকে অনেকেই চলে যাচ্ছেন বিজেপিতে। আবার বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আর নিজেদের সংসদীয় আসনে মুসলিম ভোটব্যাংকের কথা মাথায় রেখে সেই পথে হাঁটতে নারাজ অনেকে। পরিস্থিতির সুবিধা নিচ্ছে তৃণমূল। অভিযোগ, তৃণমূলকে সুবিধা পেতে সাহায্য করছে বিজেপি। অভিযোগ সত্য হোক বা মিথ্যা, লাভ কিন্তু বিজেপিরই হচ্ছে। আর সেই লাভের কারণেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠছে সন্দেহের আঙুল। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ‘কংগ্রেস পারছে না, দুর্বল। সেই দুর্বলতার সুযোগ যাতে বিজেপি নিতে না পারে, তারই চেষ্টা করছেন তাঁরা। পরপর দুবার ভারতের জাতীয় সংসদে লড়াই করে (তৃণমূলকে ছাড়াই) কংগ্রেস পরাস্ত। এবার তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে ভোটে লড়তে চায়। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা বলছেন, মমতার প্রধানমন্ত্রিত্ব দিবাস্বপ্ন। আসলে বিভিন্ন কেলেঙ্কারির হাত থেকে বাঁচতে বিরোধী ঐক্য ধ্বংস করাই মমতার আসল উদ্দেশ্য। বামেরাও এটাই বিশ্বাস করেন। আর এই বিশ্বাস থেকেই বিরোধী ঐক্য এখন বিশবাঁও জলে।
বিরোধী অনৈক্যে ভর করে মোদির হ্যাটট্রিকের বিষয়ে ষোলো আনা আত্মবিশ্বাসী বিজেপি শিবির। আসলে মমতা আদপে বিজেপিতে, নাকি বিজেপিবিরোধীদের দলে—সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকে। কংগ্রেস তো অথই জলে! রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিধিসম্মত সতর্কবাণী: ‘রাজনীতিতে মায়া ও মমতাকে বেশি গুরুত্ব দিতে নেই!’
লেখক: তরুণ চক্রবর্তী কলকাতা প্রতিনিধি, আজকের পত্রিকা
ভারতীয় রাজনীতিতে মায়া-মমতা নিয়ে চিন্তা বহুকালের। মায়া-মমতার একজন উত্তর প্রদেশের দলিত নেত্রী সুশ্রী মায়াবতী এবং অন্যজন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুজনই ‘অবিবাহিত’। দুই নারীকেই নাকি বিশ্বাস করা মহাপাপ! এমনটাই মনে করেন অনেকে। এঁরা যে জোটে থাকেন, তাঁর বিপরীত জোটেরই নাকি লাভ হয়।
জোটবদলেও সিদ্ধহস্ত দুই নারী। উচ্চাশায় ভরপুর মায়া-মমতার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক অনেকটা ‘এই আছে, এই নেই!’
মায়াবতীর রাজনীতিতে এখন ভাটা চলছে। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক ‘ভাইপো’, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবের হাত ধরেও কোনো সুবিধা করতে পারেননি ‘বুয়া’ (পিসি) মায়াবতী। তাই এবার, একলা চলোরে! অন্যদিকে আপন ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের উপপ্রধান করে দিয়ে ‘পিসি’ মমতার সাফল্য এখন মধ্যগগনে। মায়ার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সরাসরি মমতার বিরুদ্ধে নেই। তবে তাঁর ভাইপো থেকে শুরু করে দলীয় সহকর্মীরা অনেকেই আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত। জেলও খাটতে হয়েছে মমতার নেতা-মন্ত্রীদের। তাঁদের বাঁচাতেই নাকি বিজেপিকে খুশি করার গোপন কৌশল নিয়েছেন মমতা।
পশ্চিমবঙ্গে জিতেই তৃণমূল নেতারা মমতাকেই ভারতে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প বলে প্রচারে মেতে উঠেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, গোয়া প্রভৃতি রাজ্যে প্রভাব বিস্তারে নেমেছে তৃণমূল। চলছে নেত্রীর প্রধানমন্ত্রিত্বের বাসনা পূরণের চেষ্টা। নিজেদের ‘আসল কংগ্রেস’ দাবি করে বিজেপির বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরে কংগ্রেসকে দুর্বল করছে তৃণমূল। প্রকাশ্যে বিজেপি-বিরোধিতা করলেও তাই প্রশ্ন উঠছে, বিজেপির সঙ্গে গটআপ নয়তো? সন্দেহ স্বাভাবিক। কারণ, এর আগে একাধিকবার বিজেপি বা কংগ্রেসের শরিক হয়ে মমতা ভারতের মন্ত্রী হয়েছেন। তাই তাঁর অবস্থান নিয়ে উভয় তরফেই সন্দেহ রয়েছে। ২০১১ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধতা তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করে। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই কংগ্রেস ভাঙাই হয়ে ওঠে মমতার আসল লক্ষ্য। কংগ্রেস তাই হাত মেলায় সিপিএমের সঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাম বা কংগ্রেস ন্যূনতম শক্তি জাহির করতে ব্যর্থ। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মমতাকেই ভরসা করতে বাধ্য। রাজ্যে ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি মুসলিম ভোট মমতার বাড়তি শক্তি। পশ্চিমবঙ্গে ভোটে জেতার আগেই মমতা বলেছিলেন, ‘দিল্লিতেও খেলা হবে।’ অর্থাৎ তাঁর লক্ষ্য ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। তাই দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেসসহ একাধিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর একক বৈঠক বাড়িয়েছে জল্পনা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক লড়াই ভুলে বৈঠক করবেন, এটাই স্বাভাবিক দৃশ্য। কিন্তু মোদি-মমতার বৈঠকের পর বিরোধী জোটে অনৈক্যের ছবিটাই বেশি স্পষ্ট হয়।
অনেকেরই বিশ্বাস, বিরোধী ঐক্যকে বিনাশ করতেই মমতাকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-বিরোধিতা কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কিছুতেই সম্ভব নয়। দুর্বলতম নেতৃত্বের হাত ধরে শক্তিক্ষয়ের পরও গোটা দেশে বিজেপিবিরোধীদের মধ্যে একমাত্র কংগ্রেসেরই কিছুটা হলেও অস্তিত্ব আছে, বাকিদের একটি বা দুটি রাজ্যে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদিকে হারাতে হলে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই শুধু নয়, প্রধান শরিক ধরে নিয়েই বিরোধীদের জোট করতে হবে, এটাই বাস্তব। ভারতের বাস্তব পরিস্থিতিই বলছে, বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে কংগ্রেসই হবে বড় শরিক। আট রাজ্যে কংগ্রেস শাসক দল বা জোটের শরিক। বাকিরা আঞ্চলিক দল হিসেবে নিজেদের রাজ্যেই সীমাবদ্ধ। উল্টো ছবিও আছে। বহু রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতা থেকে অনেক দূরে, আঞ্চলিক দলই ভরসা। তাই কংগ্রেসের নেতৃত্বে জোটই বিজেপিকে হারানোর
একমাত্র পথ।
কিন্তু সেই পথকে কর্দমাক্ত করার খেলা চলছে। কথায় আছে না, পাঁকেই ফোটে পদ্ম! পদ্ম বিজেপির নির্বাচনী প্রতীক, তৃণমূলের ঘাসফুল। এই দুই ফুলের গোপন সখ্যে কর্দমাক্ত ভারতীয় রাজনীতি। কংগ্রেসের প্রথমসারির বহু নেতাই মনে করেন, বিরোধী ঐক্য ভাঙাই মমতার কাজ। মুখে বিজেপির হিন্দুত্বনীতির বিরোধিতা করলেও নিজের পরিবার ও দলের নেতাদের দুর্নীতির মামলা থেকে বাঁচাতে বিজেপির কৌশলের অংশীদার মমতা। তাই গোটা দেশেই কংগ্রেসকে দুর্বল করাই এখন মমতার দলের প্রধান লক্ষ্য। ত্রিপুরা, আসাম, গোয়া বা মেঘালয়ে কংগ্রেসের প্রভাবশালীদেরই দলে টানছেন তিনি। বিজেপি ভাঙতে তেমন একটা উৎসাহ নেই।
দুর্বল নেতৃত্বের কারণে কংগ্রেস ভাঙছে। এটা বাস্তব। হতাশা থেকে অনেকেই চলে যাচ্ছেন বিজেপিতে। আবার বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আর নিজেদের সংসদীয় আসনে মুসলিম ভোটব্যাংকের কথা মাথায় রেখে সেই পথে হাঁটতে নারাজ অনেকে। পরিস্থিতির সুবিধা নিচ্ছে তৃণমূল। অভিযোগ, তৃণমূলকে সুবিধা পেতে সাহায্য করছে বিজেপি। অভিযোগ সত্য হোক বা মিথ্যা, লাভ কিন্তু বিজেপিরই হচ্ছে। আর সেই লাভের কারণেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠছে সন্দেহের আঙুল। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ‘কংগ্রেস পারছে না, দুর্বল। সেই দুর্বলতার সুযোগ যাতে বিজেপি নিতে না পারে, তারই চেষ্টা করছেন তাঁরা। পরপর দুবার ভারতের জাতীয় সংসদে লড়াই করে (তৃণমূলকে ছাড়াই) কংগ্রেস পরাস্ত। এবার তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে ভোটে লড়তে চায়। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা বলছেন, মমতার প্রধানমন্ত্রিত্ব দিবাস্বপ্ন। আসলে বিভিন্ন কেলেঙ্কারির হাত থেকে বাঁচতে বিরোধী ঐক্য ধ্বংস করাই মমতার আসল উদ্দেশ্য। বামেরাও এটাই বিশ্বাস করেন। আর এই বিশ্বাস থেকেই বিরোধী ঐক্য এখন বিশবাঁও জলে।
বিরোধী অনৈক্যে ভর করে মোদির হ্যাটট্রিকের বিষয়ে ষোলো আনা আত্মবিশ্বাসী বিজেপি শিবির। আসলে মমতা আদপে বিজেপিতে, নাকি বিজেপিবিরোধীদের দলে—সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকে। কংগ্রেস তো অথই জলে! রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিধিসম্মত সতর্কবাণী: ‘রাজনীতিতে মায়া ও মমতাকে বেশি গুরুত্ব দিতে নেই!’
লেখক: তরুণ চক্রবর্তী কলকাতা প্রতিনিধি, আজকের পত্রিকা
শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁদের জনাকয়েক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের দুঃশাসনকালে বিএনপিসহ অন্য নেতাদের যেভাবে হেলমেট পরিয়ে জেলখানা থেকে আদালতে হাজির করা হতো, এখন আওয়ামী লীগের নেতাদের একই কায়দায়
৭ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দিন যত যাচ্ছে, ততই নতুন নতুন কিছু প্রশ্নের উদ্ভব হচ্ছে। প্রশ্নগুলো যে গভীরতর রাজনৈতিক বিষয়সংশ্লিষ্ট, তা বলাই বাহুল্য। অনেক সময়ই প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে সংবাদ সম্মেলন বা সংবাদ ব্রিফিং করে বিষয়গুলো খোলাসার চেষ্টা করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক ও জনমনে আস্থার সংকটের প্রেক্ষাপটে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে অটোরিকশা বন্ধের প্রস্তাবে চালকদের রাস্তায় নেমে আসা এবং শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ অবরোধে সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়।
১ দিন আগে