বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আজ বৃহস্পতিবার তিনি এই অভিযোগ করেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পঁচাত্তর পরবর্তী দীর্ঘ দিনের স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ও অগণতান্ত্রিক চর্চার প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এ দেশের জনগণ পুনরায় নস্যাৎ হতে দেবে না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে কোনো মূল্যে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর।’ 

জনগণের মধ্যে কোনো আবেদন তৈরি করতে না পেরে বা জনস্বার্থে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ না করে বিএনপি নেতারা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে লাগাতারভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়ে চলেছে বলে দাবি করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে উন্মত্ত বিএনপি নেতাদের এমন নির্লজ্জ ও বেপরোয়া আচরণ বরাবরের ন্যায় জাতি এখনো প্রত্যক্ষ করছে।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার ছাড়া বিএনপির কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি তার রাজনৈতিক নীতির উত্তরাধিকার পরিত্যাগ করতে পারেনি। বরং অপরাজনীতির হাতিয়ারগুলোকে শাণিত করে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপকৌশল গ্রহণ করছে এবং জাতিকে বিভ্রান্ত করে চলেছে। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে সার্চ কমিটি নিয়ে মন্তব্য করেছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। তাঁরা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।’ 

সার্চ কমিটির অনুসন্ধান প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কার্যক্রম শেষের আগেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সার্চ কমিটি নিয়ে লাগামহীন মন্তব্য করে চলেছেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক পন্থায় সার্চ কমিটি গঠন এবং তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন এবার একটি সুনির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০০৫ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন অবস্থায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কীভাবে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বিচারপতি এম এ আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল? গণতান্ত্রিক রীতিনীতি তো দূরের কথা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করা বিএনপির কাছে বর্তমান সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে সুদীর্ঘ গণতান্ত্রিক ও আইনি প্রক্রিয়াকে তামাশা বলেই মনে হবে।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্রের শত্রু বিএনপি যতই পোশাকি গণতন্ত্রের আবরণে ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজেদের লুকানোর চেষ্টা করুক না কেন, জাতির কাছে তাদের স্বরূপ অনেক আগেই উন্মোচিত। এ দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধ্বংস হয়েছে অসাংবিধানিক ও অবৈধ উপায়ে জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে।