‘ক্ষমতা হারালে প্রথম রাতেই ৩ লাখ নেতা-কর্মী মারা যাবে’

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১৯: ১৫
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১৯: ২৪

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন ফরাজী বলেছেন, ‘যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকে, তাহলে অবস্থাটা কী হবে সেটা ভেবে দেখেন। আবারও যদি রাজাকারের দল ক্ষমতায় আসে তাহলে প্রথম রাতেই কমপক্ষে আওয়ামী লীগের ৩ লাখ নেতা-কর্মী মারা যাবে। সেই ৩ লাখের মধ্যে আমি-আপনি সকলেই। কাজেই নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিতে হবে।’

আজ বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শাহাবুদ্দিন ফরাজী বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা যদি এক ও অভিন্ন থাকে তাহলে বাংলাদেশে এমন কোনো রাজনৈতিক শক্তি নাই যারা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমি কী পেলাম আর কী পেলাম না সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো শেখ হাসিনাকে আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবার এই দেশে সরকার গঠন করবে এটাই আমাদের শপথ।’ 

শাহাবুদ্দিন ফরাজী আরও বলেন, যখন পকিস্তানের প্রেতাত্মারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজপথে নেমেছে ঠিক সেই সময়ে ঘিওরের এই সম্মেলন অনেক গুরুত্ব বহন করে। বিগত দিনে যারা দলের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছে তারাই দলে আসবে। কোনো অনুপ্রবেশকারী বসন্তের কোকিলের ঠাঁই হবে না। 

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপি আজ রাজাকার, আল-বদরদের ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দেয়। তারা এই দেশটাকে পাকিস্তান বানাতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের একজন নেতা-কর্মী বেঁচে থাকতে তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মির্জা আজম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করে এমন কোনো রাজনৈতিক দল, এমন কোনো শক্তি বাংলাদেশে নেই। তাই আমাদের রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়েই আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে ইনশা আল্লাহ।’ 

মির্জা আজম বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ নিরাপদে ও শান্তিতে থাকে। আওয়ামী লীগ বটগাছের মতো দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ছায়া দিচ্ছে। অথচ খুনি জিয়ার ছেলে, পাকিস্তানের দালাল তারেক লন্ডনে বসে বাংলাদেশ ধ্বংসের নীল নকশা তৈরি করছে।’ 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা আজম বলেন, ‘ভবিষ্যতে আর কোনো দিন লাঠি মিছিল করার চিন্তা ভাবনা করবেন না। আপনারা লাঠি নিয়ে বের হলে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কিন্তু তসবি নিয়ে মাঠে নামবে না। আপনাদের লাঠির জবাব আমরা লাঠি দিয়েই দেব, তখন কিন্তু পালাবার কোনো পথ পাবেন না।’ 

উপজেলার ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের শুরু হয়। দীর্ঘ ৮ বছর পর ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম মিয়া মিন্টু।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিকেলে দ্বিতীয় অধিবেশনে আব্দুল আলিম মিন্টু সভাপতি ও হামিদুর রহমান আলাই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি মির্জা আজম। 

সম্মেলনে জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত