গণ অধিকার পরিষদ কার্যালয়ে তালা, জরুরি কাগজপত্র চুরির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩, ১৮: ৩১
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৩, ২০: ০৯

 রাজধানীর বিজয়নগরের প্রীতম-জামান টাওয়ারের গণ অধিকার পরিষদের (নুর) কার্যালয়ের তালা ভেঙে নতুন কলাপসিবল গেট লাগানো এবং দলের নিবন্ধনের জন্য জরুরি কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের অফিসে বোমা-ককটেল রেখে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। জামান সাহেব এসে বলেছে, আমরা নাকি জঙ্গি কার্যক্রম করি। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। তিনি অফিসের ভেতরে বোমা-ককটেল রেখেন কি না। আমাদের তিন-চারজনকে তারা মারধর করেছে, মোবাইল রেখে দিয়েছে।’ 

রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা আমাদের কার্যালয়ে ঢুকতে পারছি না। এ ঘটনায় পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমরা যখন কার্যালয়ে ঢুকতে যাই তখন তিনি (মিয়া মশিউজ্জামান) পিস্তল এনেছেন এবং বলেছেন গুলি করবেন। আমরা এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একটা রাজনৈতিক দলের কার্যালয় এভাবে কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়া কেচিগেট দিয়ে বন্ধ করে দিতে পারে না।’ 

রাশেদ খান বলেন, ‘মিয়া মশিউজ্জামান অফিস ভাড়া নিতেন না, বরং তা অনুদান হিসেবে দলকে দিতেন।’ তিনি বলেন, ‘অনুদান হিসেবে অফিস ভাড়া দলকে দিতেন। এখন যদি সেটা চান তাহলে আসেন বসে কথা বলি। কার্যালয় দখলে রাখার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। আমরা নতুন কার্যালয় খুঁজছি।’ 

রাশেদ খানের অভিযোগ প্রসঙ্গে কার্যালয়ের মালিক ও গণ অধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া) অন্যতম নেতা মিয়া মশিউজ্জামান এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘জামান টাওয়ারে গণ অধিকার পরিষদের অফিসের ১৭ মাসের ভাড়া বাকি থাকার কারণে তাদের বলা হয়েছিল ঘর ছেড়ে দিতে। তাঁরা সেটা শোনেননি। এ জন্য প্রথমে তাঁদের বিদ্যুৎ লাইন কাটা হয় এবং মৌখিকভাবে তাঁদের ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য আবারও অনুরোধ করা হয়। তখন তাঁদের পক্ষ থেকে ফেসবুক লাইভে বা পাবলিক মিটিংয়ে আমার ওপর নানা রকম বিষোদ্‌গার করা হয়। এই ঘরের মালিকানা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন এবং একপর্যায়ে নুর ঘোষণা দেন যে এটা তাঁরা দখলে রাখবেন এবং আমি জমির মালিকানা সম্বন্ধে দলিল হাজির করতে না পারলে তিনি এ ঘর ছাড়বেন না।’ 

মিয়া মশিউজ্জামান আরও বলেন, ‘আমার পৈতৃক সম্পত্তি যখন এ রকম হুমকির মধ্যে পড়েছে, তখন আজকে আমি যেভাবে দরজায় তালা লাগিয়েছি, সেটা ছাড়া উপায় ছিল না। আমি অনেক লোক নিয়ে অথবা গণ অধিকার পরিষদের অন্য অংশের কোনো ব্যক্তিকে এ কাজে ব্যবহার করিনি। আমার এখানে সব রকমের মিস্ত্রি আছে, যেহেতু বড় একটা বিল্ডিং। আমি শুধু একটা কেচিগেট বানিয়ে এনেছি এবং তাদের কাঠের দরজার ওপরে সেটা লাগিয়ে আমি রুমটা সিল করে দিয়েছি।’ 

কাগজপত্র নেওয়ার বিষয়ে মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, ‘ভেতরে কেউ ঢোকেনি, ভেতরের কোনো জিনিস লুটপাট করা হয়নি। তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের যা কিছু ভেতরে আছে, আইনসংগত জিনিস, সেগুলো যদি নিয়ে যেতে চান, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সেগুলো ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা আমি করব। কিন্তু ঘরের দখল তাঁদের পুনরায় আমি বুঝিয়ে দিতে পারব না।’ 

সার্বিক বিষয়ে নুরুল হক নুর তাঁর ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘অফিস স্টাফ ও উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মারধর করে কার্যালয়ে রাখা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মনোনয়ন বিক্রির টাকাপয়সাসহ সকল ডকুমেন্টস নিয়ে আমাদের কার্যালয়ে নতুন তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কার্যালয়ের সামনে বহিরাগত ২০-২৫ জন মাস্তানকে বসিয়ে রেখেছে। যারা ঢুকছে তাদের মারধর করছে। এভাবে একের পর এক অমানবিক আচরণ ও অত্যাচার করে যাচ্ছে মিয়া মশিউজ্জামান।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত