জনজীবনে বিপত্তি ঘটাতে রাস্তায় জনসভা করতে চায় বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯: ৩১

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সরকার দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেবে না। আমাদের নেতা–কর্মীদেরও কর্তব্য আছে। ১০ ডিসেম্বর কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালালে আমাদের নেতা–কর্মীরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করবে। সরকার সারা দেশে তাদের সমাবেশে নিরাপত্তা দিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও দেবে।’ 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বিএনপির ঢাকার সমাবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ এ সব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে আলোচনাকালে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, বরাদ্দও হয়েছে। কিন্তু তারা এখন রাস্তার বদলে রাস্তায় চেয়ে বেড়াচ্ছে। যে ময়দান থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন, যে ময়দানে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছিল, যেখানে তারাও অতীতে অনেক জনসভা করেছে, আমরা তো নিয়মিতভাবেই করি, সেখানে তাদের যেতে এত অস্বীকৃতি, অনীহা কেন। তারা শুধু রাস্তায় জনসভা করতে চায়, গাড়ি-ঘোড়া ভাঙচুর করতে চায়, জনজীবনে বিপত্তি ঘটাতে চায়।’ 

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাংবাদিকেরা এবং শহরের সাধারণ নাগরিকেরা রাস্তায় জনসভার বিরুদ্ধে। কারণ এতে মানুষের ভোগান্তি হয়। সমাবেশের জন্য মাঠের বিকল্প হিসেবে বিএনপি আরেকটা মাঠের কথা বলতে পারে। সোহরাওয়ার্দীতে না চাইলে তারা বাণিজ্য মেলার মাঠ বা আরও বড় বিশ্ব ইজতেমার মাঠ যেখানে ২০ লাখ মানুষ ধরে, না হলে কামরাঙ্গির চরের মাঠেও যেতে পারে। তারা সেটা বলে না, বলে এই রাস্তা না হয় ওই রাস্তা। মতিঝিলের রাস্তা যেখানে অনেক ব্যাংক, বিমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, সেটি কেন তাদের এত পছন্দ। এটির পেছনেও গভীর ষড়যন্ত্র, দুরভিসন্ধি আছে। প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো জনসভা করতে চায় না, এটিকে ইস্যু বানাতে চায় এবং দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টায় তারা আছে।’ 

বিএনপি নেতা ইশরাক এবং রুহুল কবীর রিজভীর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আগুন সন্ত্রাসীরা তো বিএনপির নেতা-কর্মী। আগুন সন্ত্রাস করার জন্য বিএনপির নেতারাই নির্দেশ এবং অর্থ দিয়েছিল। সেসবের অডিও রেকর্ডও আমাদের কাছে আছে। বিএনপি নেতাদের হাতে আগুন এবং মানুষের রক্ত লেগে আছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে, এখন পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ 

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টেলিভিশনে যারা বড় গলায় কথা বলছে তাদের হাতে মানুষের রক্ত এবং আগুন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং যাদের জামিন আদালত বাতিল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এখানে সরকারের কোনো হাত নেই। তবে জনগণ মনে করে শুধু আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেই নয়, আগুন সন্ত্রাসের হোতাদের অর্থাৎ তাদেরকে যারা নির্দেশ দিয়েছে, পরিচালনা করেছে এবং অর্থ দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।’ 

বিএনপি নেতারা ঘনঘন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন এমন প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘এ দেশের মালিক জনগণ। এ দেশে কে ক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে। এখানে কূটনীতিকদের বেশি কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি ক্ষণে ক্ষণে কূটনীতিকদের কাছে ছুটে যায়। তাদেরকে কোলে করে কেউ ক্ষমতায় বসাবে না। এ দেশে কূটনীতিকরা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং কূটনীতিকদের কাছে বারবার ছুটে গিয়ে বরং তারা নিজেদের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করছে। বিদেশি কূটনীতিকরা যখন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে, আমি মনে করি তখন সেটি আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে অনেক সময় হস্তক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায় যেটি সমীচীন নয়। এ জন্য কোনো রাজনীতিবিদের বা কোনো রাজনৈতিক দলের কূটনীতিকদের প্রোভোক করা উচিত নয়।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত