Ajker Patrika

ভোটের দাবিতে শিগগির মাঠে নামছে বিএনপি

  • ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগে করার চিন্তা সরকারের।
  • আগে গণপরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চায় জাতীয় নাগরিক কমিটি।
  • আবার আলোচনায় মাইনাস টু। সন্দেহ বাড়ছে বিএনপির।
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, রেজা করিম, তানিম আহমেদ ও ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩: ৩৫
ভোটের দাবিতে শিগগির মাঠে নামছে বিএনপি

সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চান জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কিছুটা এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এমন একটি ধারণা সম্প্রতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্যে কোনটি কখন হতে হবে, কীভাবে হবে, সে বিষয়ে সরকার, বিএনপিসহ বড় দলগুলো এবং অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করে বলছে, এ সংস্কার মূলত হতে হবে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। আর রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু পদক্ষেপ আগে নেওয়া হলেও তা সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে বৈধতা পাবে। এ কারণে দলটি সংসদ নির্বাচন আগে করার দাবি তুলছে। এমন দাবিতে প্রয়োজনে মাঠে নামার পরিকল্পনাও করছে দলটি।

বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানালেও সরকারের তরফ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে সম্প্রতি। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমমনা কয়েকটি সংগঠন সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আগে করার দাবি তুলছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি ফেসবুক পোস্ট একসঙ্গে নিয়ে পুরো বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি।

মাঠপর্যায়ে স্থানীয় সরকারের সর্বশেষ স্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান গত বৃহস্পতিবার সরকারের অন্য তিন প্রভাবশালী উপদেষ্টাকে যুক্ত করে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন।

দুটি প্রশ্ন জুড়ে দিয়ে করা ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচনের কথা বলেছেন। দলীয় প্রতীকবিহীন প্রার্থীদের নিয়ে এসব নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের আপত্তির সুযোগ কোথায়? স্বাধীন ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ছাড়া, একদলীয় শাসন থেকে মুক্তির অন্য কোনো উপায় আছে কী?’

অন্য যে তিন উপদেষ্টাকে ফেসবুক পোস্টে যুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা হলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মো. নাহিদ ইসলাম ও আইন মন্ত্রণালয়ের আসিফ নজরুল।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা গত বুধবার ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বেয়ারকে জানান, সরকার জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি একই সঙ্গে নিচ্ছে। স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়।

বিএনপির নেতৃত্ব মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি করা প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সুবিধা ব্যবহার করে সারা দেশে নতুন রাজনৈতিক দল দাঁড় করানোর জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সময় নিতে সামনে আনা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গগুলো।

বিএনপির নেতাদের অনেকের মধ্যে এ ধারণা বদ্ধমূল হয় দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিদেশে যাওয়ার পরদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে করা একটি পোস্ট থেকে। ৮ জানুয়ারি করা এ পোস্টে বলা হয়, ‘দুই আপামুক্ত’ এই প্রথম বাংলাদেশ। ফেসবুক পোস্টটি পরে সরিয়ে নেওয়া হলেও সেদিনই তা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকের নজরে আসে।

খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গটিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে জুড়ে দিয়ে মন্তব্যটি করা হয়েছে, এমনটি মনে করছে বিএনপি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘পদত্যাগ করে’ ৫ আগস্ট দিল্লি চলে যান। আর খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, এ পোস্টটি সরকারের কয়েকটি প্রভাবশালী মহল ও সম্প্রতি প্রভাবশালী হয়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠনের অনেক নেতার দুরভিসন্ধি স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই মহলগুলো খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে রেখে ও সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করে তাঁরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।

দলটির কয়েকজন নেতা বলছেন, প্রেক্ষাপট ও কারণ ভিন্ন হলেও দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধান খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা এখন দেশের বাইরে। এমন অবস্থায় দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পোস্টটির সঙ্গে ২০০৭-০৮ সালের সেনাসমর্থিত সরকারের কুশীলবদের ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার মিল রয়েছে। তখন দুই নেত্রীকেই রাজনীতির বাইরে রাখার কথা প্রকাশ্যে আনা হলেও আসলে তা ছিল খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে (মাইনাস ওয়ান) শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসার পথ নিষ্কণ্টক করা। সরকারের একটি প্রভাবশালী সংস্থার মাধ্যমে প্রবল চাপ দিয়েও খালেদাকে তখন বিদেশে পাঠানো যায়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পোস্টটির বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে নই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পেজে এ লেখা দেখার পর আমরা মিডিয়া সেলে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদেরকে স্ট্রিকটলি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে হেয় করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’

নির্বাচন ও সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির কৌশল কী হতে পারে, সে বিষয়টি টানা আলোচনায় আসছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন বৈঠকে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা তো বিরোধিতা করলাম। তারপরও (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) করে ফেললে সেটার পরিণতি... দেশের মানুষ দেখবে। দেশের মানুষ ঠিক করবে।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঝুঁকি আছে, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) আগে করার কোনো অর্থ হয় না এ জন্য যে, অন্তর্বর্তী সরকারের জনগণের ম্যান্ডেট নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার এসে ওই নির্বাচন সঠিক হয়নি বলে বাতিল করলে সেটা আরও খারাপ হবে। অতীতেও এ রকম ঘটনা ঘটেছে। কাজেই বিনা কারণে কেন এমন ঝুঁকিতে আমরা যাব?’

বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে চায়, এমনটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার জনগণকে ওয়াদা করেছে যে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে জনগণকে প্রথমে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। জনগণের সরকার পরবর্তী কাজগুলো করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক প্রভাবশালী সদস্য বলেন, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার করে আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি শিগগিরই মাঠে নামবে। এ জন্য ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও রাজধানীসহ সর্বত্র দলকে সক্রিয় করা হচ্ছে। শুরুতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। প্রয়োজনে পরে কঠোর কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে, এমনটি জানান তাঁরা।

বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি সারা দেশে সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাদের টানার চেষ্টা চলছে।

অন্য এক নেতা বলেন, সরকারের কয়েকটি দপ্তর নতুন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের নেপথ্যে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে এসব তৎপরতার ওপর নজর রাখতে বিএনপির হাইকমান্ড ইতিমধ্যে নির্দেশ জারি করেছে।

তবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সহমুখপাত্র সালেহ উদ্দীন সিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে পুরোনো সব রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ভেঙে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। সে লক্ষ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন বা সংস্কার নিশ্চিত করতে হলে গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে। নাগরিক কমিটি অন্তর্বর্তী সরকারকে সংবিধান প্রণয়ন করতে বলছে না, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করবেন। এরপর গণপরিষদই আইনসভায় রূপান্তরিত হবে।’

সিফাত বলেন, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে উত্তরণের প্রাথমিক ধাপ হলো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা জনমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। সে জন্য আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন।

অন্যদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যকে এখনই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে নারাজ বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী সমর্থক দল জামায়াতে ইসলামী। দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায়, সে বিষয়ে তাঁদের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো আসেনি। তেমন বক্তব্য এলে জামায়াত তার করণীয় ঠিক করবে।

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, এ বিষয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে, যা কেবলই ‘ধারণা’। জামায়াত কোনো ‘ধারণা’ নিয়ে কথা বলতে চায় না।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকে ৫৩ বছর ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে অন্যতম বড় দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে সরকারের ভেতরে-বাইরে নানামুখী আলোচনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক গতকাল বলেন, ‘আগে তো আমাদের বসতে দিতে হবে। দলকে এক জায়গায় আসতে দিতে হবে। সে রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক। তারপর আমরা নির্বাচনের কথা ভাবব।’

দলের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল গতকাল বলেন, ‘তারা (সরকার) কোন দিকে পালাবে, সে চিন্তা করুক। নির্বাচনের চিন্তা করার দরকার নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আসিফ-মাহফুজকে ঘিরে এনসিপিতে নতুন সমীকরণ

  • জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আসতে পারেন মাহফুজ।
  • সদস্যসচিব পদমর্যাদা চান আসিফ মাহমুদ।
  • এ দুজন এলে বিএনপি-এনসিপির জোট হতে পারে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৫
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে ঘিরে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁরা কোন দলে যুক্ত হবেন—এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছিল। সেই আলোচনায় এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নামই সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে। দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা এবং মাহফুজ ও আসিফের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, শিগগিরই তাঁরা এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন।

মাহফুজ ও আসিফ এনসিপিতে যোগ দিলে তাঁদের দায়িত্ব বা পদবি কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, মাহফুজ আলমকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আনার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সদস্যসচিব পদমর্যাদার দায়িত্ব পেতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। যদিও এসব বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

মাহফুজ ও আসিফ এনসিপিতে আসতে চাইলে দল তাঁদের স্বাগত জানাবে বলে কয়েকবার জানিয়েছেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদের জন্য এনসিপির দরজা সব সময়ই উন্মুক্ত। তাঁরা চাইলে যেকোনো সময় দলে আসতে পারেন। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মাহফুজ-আসিফ এনসিপিতে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির এক নেতা। ওই নেতা বলেন, তাঁরা কয়েক দিন হলো অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের মধ্যে একটা ঘোষণা আসতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগের পর মাহফুজ ও আসিফ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আসিফ মাহমুদ ইতিমধ্যে ঢাকা-১০ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মাহফুজ আলম লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে। এ দুই আসনে এনসিপি এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। দলটি ১২৫টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেও এই দুটি আসন খালি রাখা হয়েছে। মাহফুজ এবং আসিফের জন্যই আসন দুটিতে এখন পর্যন্ত প্রার্থী দেওয়া হয়নি বলে মনে করছেন অনেকে।

মাহফুজ আলম, আসিফ মাহমুদ এবং এনসিপির নেতারা একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক। এনসিপির অনেক নেতা মাহফুজ আলমকে ‘তাত্ত্বিক গুরু’ মনে করেন।

চব্বিশের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের শুরু থেকেই নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ উপদেষ্টা পদে ছিলেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম গত বছরের ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান। গত বছরের ১০ নভেম্বর তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি। জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রনেতাদের বড় অংশ এনসিপিতে যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু মাহফুজ-আসিফ সরকারের অংশ হওয়ায় তাঁরা শুরুতেই এনসিপিতে যোগ দেননি। গত ১০ ডিসেম্বর তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেন। নির্বাচনী নানা হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে তাঁরা বিএনপি বা গণঅধিকার পরিষদে যুক্ত হবেন, এমন আলোচনাও ছিল। তবে শেষমেশ এই দুই নেতা এনসিপিতেই যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছে কয়েকটি সূত্র।

এনসিপির নেতারা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যাঁরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের রাজনৈতিক দর্শনে মিল রয়েছে। তাই তাঁরা চান মাহফুজ-আসিফ অন্য কোনো দিলে না গিয়ে এনসিপিতেই আসুক।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও সহশিক্ষা সম্পাদক মাহাবুব আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, দলের বেশির ভাগ সদস্যই চান, তাঁরা (মাহফুজ-আসিফ) জুলাইয়ের শক্তি হিসেবে তাঁরা এনসিপিতেই আসুক। সেভাবেই আলোচনা চলছে৷

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনও একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন তিনি বলেন, মাহফুজ-আসিফ কোন দলের হয়ে নির্বাচন করবেন, সেটি তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে তাঁরা যদি এনসিপিতে যুক্ত হতে চান, দল তাঁদের স্বাগত জানাবে।

এনসিপির নেতারা বলছেন, মাহফুজ ও আসিফ এনসিপিতে যুক্ত হলে দলটির রাজনৈতিক কৌশলেও পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও তখন নতুন মোড় নেবে। মাহফুজ-আসিফ দুজনেই চান এনসিপি বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করুক। সে ক্ষেত্রে তাঁরা এনসিপিতে এলে আন্দোলন-পরবর্তী রাজনীতিতে তরুণ নেতৃত্ব ও বড় দলগুলোর সমন্বয়ের যে আলোচনা চলছে, এনসিপি সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

সব মিলিয়ে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পরবর্তী সিদ্ধান্ত শুধু এনসিপির নয়; বরং পুরো রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাঁদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সেই অপেক্ষারই অবসান ঘটাবে বলে মনে করছেন রাজনীতিসংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাক বাহিনীর হয়ে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল, ভালো করেই জানি: মির্জা ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা যারা করেছিল, তারাই মুক্তির ঠিক আগে জাতির সূর্য সন্তানদেরকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল— এ বিষয়টি হালকা করে দেখার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার বিকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী দিবসটি আমাদের কাছে খুব ভারাক্রান্ত। কারণ স্বাধীনতা পাওয়ার ঠিক দুই দিন আগে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে, একটা নীল নকশার মাধ্যমে, একটা জাতিকে সম্পূর্ণ মেধাশূন্য করে দেওয়ার একটা চক্রান্ত ছিল সেটা। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, যারা পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সেদিন যোগসাজশ করেছিল, তাদের প্রতিনিধি হয়ে এসে বাড়িতে বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারগুলোতে অথবা তাদের বাড়ি থেকে যারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল, তারা ছিল কিন্তু বাঙালি সন্তান। আজকে আমরা খুব ভালো করে জানি যে, তারা কারা ছিলেন?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস প্রমাণ করে, তখনকার সেই রাজনৈতিক শক্তি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই সেদিন আমাদের সেই সূর্য সন্তানদেরকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। এ বিষয়টি হালকা করে দেখার কোনো কারণ নেই। কারণ বারবার এই চক্রান্ত ষড়যন্ত্র হয়েছে, বারবার এই দেশের মানুষের ওপরে আঘাত এসেছে এবং তারা যেন মেধার ভিত্তিতে জেগে উঠতে না পারে, যেন তারা জ্ঞানে বিজ্ঞানে উপরে উঠতে না পারে, শিক্ষায় দীক্ষায় জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে না পারে, সেই চেষ্টাটা তখন করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরেও ‘ভিন্ন অঙ্গিকে’ এই চেষ্টার ধারাবাহিকতা ছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল হয়েছে, আমরা আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করে ফেলা হয়েছে। আমরা সবসময় এই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আমাদের এই জাতির বিরুদ্ধে আমরা দেখছি।

ভয় দেখিয়ে গণতন্ত্রের সৈনিকদের স্তব্ধ করে দিতে চায়

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্মরণে বিএনপির উদ্যোগে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে হত্যা চেষ্টার মধ্য দিয়ে দেশে ‘ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে’ বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে নির্বাচনের যখন তফসিল ঘোষণা হলো, তখনই হত্যা করার চেষ্টা করা হলো হাদিকে. . একজন সৈনিক যে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। একটা ভয় আবার শুরু করতে চেয়েছে, যে ভয় ১৫ বছর আওয়ামী লীগ দেখিয়েছে— ভয় দেখিয়ে দেশ শাসন করার চেষ্টা করেছে, চাপ সৃষ্টি করেছে। আবার সেই ভয় দেখিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের সৈনিকদের স্তব্ধ করে দিতে চায়। কিন্তু ইতিহাস বলে বিএনপি ভয়ে কখনও দমে যায় না।’

আলোচনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পাকিস্তানিরা নয়, ভারতীয়রাই হত্যা করেছিল: গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫১
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি

পাকিস্তানিরা নয়, বরং ভারতীয়রাই হত্যা করেছিল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের—এমন দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। আজ রোববার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এ দেশের দিল্লির তাঁবেদাররা বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা নিয়ে প্রথাগতভাবে সমস্ত দায়দায়িত্ব ঘৃণিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর ওপরে চাপানোর চেষ্টা করেছেন। ইতিহাসের অনেক তথ্য আবিষ্কার হচ্ছে যে, দিল্লির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে ভারতীয়রাই আমাদের এই সেরা সন্তানদের হত্যা করেছে।’

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘৮ ডিসেম্বর বিজয়ের আগে ভারতীয় ৩৬ সেনারা ঢাকায় অবতরণ করেছে, এর রেকর্ড আছে। তখন রাজধানী ঢাকাসহ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ভারতীয় সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার-আল-বদরেরা তো আত্মসমর্পণ, নিজেদের প্রাণ বাঁচানো, পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিল; কে কাকে খুঁজে কোথায় হত্যা করবে? নিজেদের জীবন বাঁচাতেই ততক্ষণ তারা ব্যস্ত ছিল।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের কোনো আক্রোশ নেই। তবে ভারতের সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী সরকার, যারা ক্ষমতায় এখনো আছে, বারবার যারা এসেছে, তারাই এ দেশের স্বাধীন সত্তাকে বিকিয়ে দিয়ে এ দেশের ইসলামি মূল্যবোধ ধ্বংসের জন্য বারবার এ দেশের মানুষের ওপরে হত্যার ষড়যন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছে।’

ভারত সরকারের উদ্দেশে পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বর্ডার কিলিং করেছেন। আমাদের পানি সমস্যা, আমাদের নদীর সমস্যা। আপনারা ফেলানির মতো কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখে দেশের মানুষকে হত্যা করা, আমাদের ট্রানজিট, আমাদের ট্রেড ব্যালেন্স সবকিছুকে পরিকল্পিতভাবে আপনারা ধ্বংস করেছেন। আমরা সম্পর্ক চাই, কিন্তু সেই সম্পর্ক চাই ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।’

জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, মোবারক হোসাইন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিজয় দিবসে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হয়েছে।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ২টায় বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বিজয় দিবসে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।

এ ছাড়া, একই দিন সকাল ৭টায় বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে দলের জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

এ ছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় এবং নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। পাশাপাশি দিবসটি উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নিজস্ব আঙ্গিকে কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করবে। সেই সঙ্গে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে স্থানীয় সুবিধানুযায়ী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকাসহ সারা দেশের বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত