Ajker Patrika

রাষ্ট্রের নাম ও সংবিধানের মূল নীতিমালা অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় সংসদ ভবনে আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে মতামত হস্তান্তর করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধিদল। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় সংসদ ভবনে আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে মতামত হস্তান্তর করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিনিধিদল। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রের নাম ও সংবিধানের মূল নীতিমালা অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে মত দিয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনার পর এই মত দিয়েছে দলটি। কমিশনের দেওয়া মোট ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১২২টিতে একমত হয়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ২১টি প্রস্তাবে আংশিক একমত ও ২৩টি প্রস্তাবে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে তারা। মতাদর্শিক, রাজনৈতিক, ধর্ম, লিঙ্গ ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের কারণে নাগরিকদের মধ্যে কোনো বৈষম্য না রাখার পক্ষেও মত দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে নাগরিকদের স্বীকৃত গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার খর্ব, সংকুচিত বা স্থগিত রাখার বিপক্ষে মত দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কমিশনের কাছে তাদের মতামত জমা দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার তা গ্রহণ করেন। দলটির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানিয়েছেন, পরে আংশিক একমত ও দ্বিমত হওয়া প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত মতামত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জমা দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যখন আলোচনা হবে, তখন ভিন্নমত ও দ্বিমতের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে হাজির করতে পারব। রাষ্ট্রের নামকরণের বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাবের ভিন্নমত দিয়েছি। আমরা বলেছি, নামকরণের বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নামকরণ হয়েছে সাংবিধানিকভাবে। আমরা মনে করি, সেটা অক্ষুণ্ন থাকা দরকার।’

এ ছাড়া সংবিধানের মূল নীতিমালা অক্ষুণ্ন রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে দলটি। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি স্বাধীনতার ঘোষণায় উল্লিখিত—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে যুক্ত করার প্রস্তাব রেখেছে।

সাইফুল হক বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বয়স ২৫ বছর রাখার পক্ষে মত দিয়েছি। সংসদের উচ্চকক্ষে ১৫০ আসন নির্ধারণ করে দলসমূহের সারা দেশে প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যানুপাতিক হারে আসন নির্ধারণের পক্ষে মত দিয়েছি। আমরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও এখতিয়ার কমানোর পক্ষে নই। স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন যাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে, তা নিশ্চিত করা দরকার।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে জাতীয় সমঝোতা গড়ে তোলার অসাধারণ সুযোগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, ‘বিশেষ কোনো পক্ষ অবলম্বন না করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কারের প্রশ্নে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এগোলে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ সহজতর হবে। এ ক্ষেত্রে চাপাচাপি করতে গেলে যেটুকু অর্জন করা যেত, তা–ও হয়তো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।’

অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন চায় ১২–দলীয় জোট

আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত জমা দিয়েছে ১২–দলীয় জোট। কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে প্রস্তাব জমা দেয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। দলটি কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১০টির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে এবং ৪৮টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে। আর আটটি প্রস্তাব নিয়ে তারা আলোচনার অবকাশ আছে বলে মন্তব্য করেছে।

শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার ছাড়া বাকি সংস্কার নির্বাচিত সংসদ দ্বারা বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন, গণভোট, গণপরিষদ, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা ও সংকট বিরাজ করছে, তা উত্তরণের একমাত্র উপায় অতি দ্রুত সংসদ নির্বাচন। ১২–দলীয় জোট আগামী অক্টোবরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন একরাম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত