প্রকাশ্যে সভা করলেন তৈমুর, ক্ষুব্ধ নারায়ণগঞ্জ বিএনপি

  • বিএনপিকে ভেঙে গঠন করা তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর।
  • তিনি ৫ নভেম্বর দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
  • বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁর গ্রেপ্তার চাচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ১৯
Thumbnail image
তৈমূর আলম খন্দকার

বিএনপিকে ভেঙে গঠন করা তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জে বেশ কিছুদিন পর প্রকাশ্যে সভা ও বৈঠক করেছেন। তাঁর এই প্রকাশ্যে আসাকে ভালোভাবে নিতে পারছেন না বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁরা দলকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেওয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে তাঁকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমশের মুবিন চৌধুরীকে ১৭ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর থেকেই কিছুটা আড়ালে ছিলেন তৈমূর। বিএনপির নেতা-কর্মীরা ধারণা করেছিলেন, তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে। কারণ ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেওয়ার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তৈমূর। তিনি তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব পদে আসীন হয়ে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে ভোটে দাঁড়ান। তবে তিনি সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন।

তৈমূর ৫ নভেম্বর বিকেলে মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত রশিদুর রহমান রুশোর ৪৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মাসদাইর মজলুম মিলনায়তনে দোয়া অনুষ্ঠানে হাজির হন। রুশো সম্পর্কে তৈমূরের ভাগনে। পরে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত বেগম রোকেয়া খন্দকার স্কুলে উঠান বৈঠকে অংশ নেন।

এ ছাড়া তৈমূর গণমাধ্যমে বর্তমান রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘দেশে এখন সংস্কারের কাজ চলছে। আমি রাজনীতি নিয়ে ভাবি না। দেশের সংস্কার হওয়া দরকার। আগে দেশ পরিচালনার সিস্টেম ছিল একপেশে। যাঁরা ক্ষমতায় যান, তাঁদের সেবাদাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে আমলা, ডিসি, এসপিদের। অথচ সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। সব কর্মচারীর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের সেবা করা। শেখ হাসিনার পতনের অন্যতম কারণ হচ্ছে তার মন্ত্রীদের অসংলগ্ন কথাবার্তা। এ দেশের জনগণকে তাঁরা প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছে। প্রতিটি জেলায় যাঁদের এমপি বানানো হয়েছে, তাঁরা লুটেরা ছিলেন।’

এদিকে তৈমূরের এভাবে সভা-বৈঠক করা এবং বক্তব্য দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। শমশের মুবিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁকেও গ্রেপ্তার করে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করতে কত টাকা তিনি নিয়েছিলেন, তা প্রকাশের দাবি জানান তাঁরা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, তৈমূর আলম খন্দকার বহু সুবিধা নিয়েছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। সেই সুবিধা নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রেসক্রিপশনে বিএনপিকে ভেঙে তৃণমূল বিএনপি গঠন করেছে। সে দেখাতে চেয়েছিল, হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মহল যেন বোঝে এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ আছে। হাসিনার নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার অন্যতম কারিগর সে। এর জন্য আর্থিকভাবে ব্যাপক সুবিধা নিয়েছে সে আওয়ামী লীগের কাছে থেকে।

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতা-কর্মীরা তৈমূরের প্রতি ক্ষুব্ধ উল্লেখ করে সাখাওয়াত বলেন, সে বিএনপির সঙ্গে মীরজাফরি আচরণ করেছে। বিএনপি তাকে অনেক কিছু দিয়েছিল। বর্তমানে তার কর্মকাণ্ডকে ফ্যাসিস্ট শক্তির দোসর এবং আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কার্যক্রম হিসেবেই দেখবে সাধারণ মানুষ। নারায়ণগঞ্জের মানুষ তার কার্যক্রম গ্রহণ করবে না, প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ তাকে প্রতিহত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত